ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সহজ লেনদেন ও অসাধারণ সুবিধা

ব্যাংক লোনের মাসিক কিস্তি (EMI) হিসাব ক্যালকুলেটর ও সূত্রব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সুবিধা, ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা ও এই কার্ডের প্রকারভেদ সহ ব্রাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের এই আর্টিকেল।
ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সুবিধা
তাই আপনারা যারা ব্র্যাক ব্যাংকের গ্রাহক এবং ব্রাক ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ড সংগ্রহ করতে চান তাদের জন্য শুধুমাত্র এই আর্টিকেলটি। ব্রাক ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ড আবেদন করার পূর্বে এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড এর সুযোগ সুবিধা সহ এই কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানা অত্যন্ত জরুরী। তাই এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কিত সকল বিষয়গুলো জানতে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচীপত্র

ভূমিকা

ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় আর্থিক পণ্য, যা গ্রাহকদের দৈনন্দিন কেনাকাটা, বিল পরিশোধ, এবং অন্যান্য লেনদেনকে সহজ, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী করে তোলে। এই কার্ডগুলি গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরনের সুবিধা এবং অফার প্রদান করে থাকে। যেমন রিওয়ার্ড পয়েন্টস, ডিসকাউন্ট, কিস্তিতে কেনাকাটার সুবিধা (ইএমআই), এবং আন্তর্জাতিক লেনদেনের সুবিধা

ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহারযোগ্য যা ভ্রমণকারীদের জন্য বিশেষ সুবিধাজনক। উচ্চমানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ২৪ ঘন্টা কাস্টমার সার্ভিস সহ এটি গ্রাহকদের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য অর্থনৈতিক সমাধান হিসেবে কাজ করে। এই আর্টিকেল সম্পূর্ণ জুরে ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তাই বিষয়গুলো জানতে পোস্ট টি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড

বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ব্যাংক, যা ব্যক্তি এবং কর্পোরেট গ্রাহকদের বিভিন্ন ব্যাংকিং সুবিধা প্রদান করে থাকে। এর মধ্যে ক্রেডিট কার্ড অন্যতম একটি পণ্য যেটা গ্রাহকদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা সহজতর করতে বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করে থাকে। ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সুবিধা সম্পর্কে স্পষ্ট ভাবে বুঝতে হলে ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। 
যেমন ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের প্রকারভেদ, বৈশিষ্ট্য, ক্রেডিট কার্ডের চার্জ ইত্যাদি। সেজন্য এই আর্টিকেল সম্পূর্ণ জুড়ে ব্র্যাক ব্যাংকের ডেবিট কার্ড সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বিস্তারিত জানতে নিচের বিষয়গুলো দেখুন।

ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের প্রকারভেদ

প্রতিটি ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের সুবিধার কথা ভেবে বা গ্রাহকদের লেনদেন এর প্রক্রিয়াকরণ সহজ করতে ক্রেডিট কার্ড ও ডেবিট কার্ড প্রদান করে থাকে। এই কার্ডটি একটি বিশেষ ধরনের কার্ড যেটি দ্বারা গ্রাহকদের লেনদেন এর কার্যক্রম দ্রুত ও সহজ হয়। ব্র্যাক ব্যাংক ও তার ব্যতিক্রম নয়।

এই ব্যাংক প্রতিষ্ঠানটিও তাদের গ্রাহকদের সুবিধার্থে ক্রেডিট কার্ড প্রদান করে। ব্র্যাক ব্যাংক তাদের বিভিন্ন শ্রেণীর গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরির ক্রেডিট কার্ড প্রদান করে থাকে। নিচে ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের প্রকারভেদ বা ক্যাটাগরির নাম উল্লেখ করা হলো।

  • Visa MasterCard
  • debit card
  • Platinum card
  • signature card
  • Freelancer matrix card
  • classic crad
  • gold card
  • Apollo health card
  • Millennial MasterCard titanium
  • Infinite card
  • Visa prepair gift card

ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের বৈশিষ্ট্যসমূহ

  • উচ্চ ক্রেডিট সীমাঃ ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে সাধারণত উচ্চ ক্রেডিট সীমা থাকে, যা গ্রাহকদের বড় মাপের কেনাকাটা, ভ্রমণ এবং জরুরি খরচ সহজতর করার জন্য প্রদান করা হয়।
  • ইএমআই সুবিধাঃ ব্র্যাক ব্যাংক তাদের ক্রেডিট কার্ডধারীদের জন্য ইএমআই (সমান মাসিক কিস্তি) সুবিধা প্রদান করে থাকেন। এই সুবিধার মাধ্যমে গ্রাহকরা বড় পরিমাণের কেনাকাটা করলেও তা একাধিক মাসে সহজ কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারেন।
  • আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিঃ ব্র্যাক ব্যাংকের ডুয়েল কারেন্সি ক্রেডিট কার্ডগুলি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এটি বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে সহজে ব্যবহার করা যায়।
  • ফ্রিঞ্জ বেনিফিটস এবং ডিসকাউন্টঃ ব্র্যাক ব্যাংক বিভিন্ন শপিং সেন্টার, রেস্টুরেন্ট, ভ্রমণ এজেন্সি, এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিশেষ ছাড় ও অফার প্রদান করে থাকে। এছাড়াও ক্রেডিট কার্ডধারীরা ব্র্যাক ব্যাংকের পার্টনারদের কাছ থেকে বিশেষ ছাড় পেয়ে থাকেন। যা তাদের কেনাকাটায় অর্থ সাশ্রয় করতে সাহায্য করে।
  • রিওয়ার্ড পয়েন্টঃ ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে লেনদেন করলে গ্রাহকরা রিওয়ার্ড পয়েন্ট অর্জন করতে পারেন। এই পয়েন্টগুলো পরে বিভিন্ন পণ্য বা সেবার বিনিময়ে ব্যবহার করা যায়। যা গ্রাহকদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।

ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের চার্জ ও ফি

ব্র্যাক ব্যাংক এর ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার জন্য গ্রাহককে প্রতিবছর কিছু নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিতে হবে। এবং এর পাশাপাশি টাকা উত্তোলনে কিংবা লেনদেনের জন্য ভ্যাট, ট্যাগ চার্জ প্রযোজ্য হয়ে থাকে। ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে কিছু নির্দিষ্ট ফি ও চার্জ প্রযোজ্য হয়ে থাকে। নিচে এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চার্জ ও ফি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
  • বার্ষিক ফিঃ এই কার্ড ব্যবহারের জন্য প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট ফি প্রযোজ্য হয়, যা কার্ডের প্রকারভেদ অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।
  • বিলম্ব ফিঃ সময়মতো ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ না করলে বা না করতে পারলে জরিমানা বাবদ বিলম্ব ফি প্রযোজ্য হয়।
  • নগদ উত্তোলন ফিঃ ব্র্যাক ব্যাংক ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে ব্র্যাক ব্যাংকের এটিএম থেকে নগদ টাকা উত্তোলন করলে একটি নির্দিষ্ট শতাংশ হারে চার্জ প্রযোজ্য হয়। যা সাধারণত ২% থেকে ৩% পর্যন্ত হয়ে থাকে।
  • বৈদেশিক লেনদেন ফিঃ আন্তর্জাতিক লেনদেনে একটি অতিরিক্ত চার্জ প্রযোজ্য হয়ে থাকে।

ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সুবিধা

ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করে, যাব্র্যাক ব্যাংকের গ্রাহকদের দৈনন্দিন লেনদেন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয়তায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড এর সুবিধাগুলো নীচে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো।
  • রিওয়ার্ড পয়েন্টসঃ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের প্রতিটি লেনদেনের জন্য ব্র্যাক ব্যাংক রিওয়ার্ড পয়েন্টস প্রদান করে থাকে। এই পয়েন্টগুলি জমা করে বিভিন্ন ধরনের পুরস্কার বা ক্যাশব্যাকের সুবিধা নিতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ শপিং, ভ্রমণ, বা রেস্টুরেন্টে খরচ করলে আপনি পয়েন্ট সংগ্রহ করতে পারবেন, যা ভবিষ্যতে ব্যবহার করা যাবে।
  • ফ্লেক্সিবল পেমেন্ট অপশনঃ ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডধারীরা লেনদেনের পর বিল পরিশোধে ফ্লেক্সিবল পেমেন্ট সুবিধা পান। নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ একসাথে পরিশোধ করতে না পারলে তারা কমপক্ষে একটি নির্ধারিত পরিমাণ পরিশোধ করে বাকি অর্থের ওপর সুদ গ্রহণ করতে পারেন।
  • ডিসকাউন্ট ও অফারঃ ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডধারীরা বিভিন্ন শপিং মল, রেস্টুরেন্ট, ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম এবং অন্যান্য পার্টনার প্রতিষ্ঠানে বিশেষ ছাড় ও অফার পান। নিয়মিত এই অফারগুলো ব্র্যাক ব্যাংকের ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপে আপডেট করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, রেস্টুরেন্টে ডাইনিং করলে ডিসকাউন্ট, বিমান টিকেটে বিশেষ ছাড় এবং ইলেকট্রনিক্স কেনাকাটায় অতিরিক্ত ক্যাশব্যাক সুবিধা পাওয়া যায়।
  • কন্টাক্টলেস পেমেন্ট সুবিধাঃ ব্র্যাক ব্যাংকের কিছু প্রিমিয়াম ক্রেডিট কার্ডে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট সুবিধা রয়েছে। যার মাধ্যমে কার্ডটি সরাসরি POS (Point of Sale) মেশিনে ব্যবহার করে লেনদেন করা যায়। এবং এটাতে কোনো পিন বা স্বাক্ষরের প্রয়োজন হয় না। এতে দ্রুত ও সুরক্ষিত লেনদেন সম্ভব হয়, বিশেষ করে ছোটো পরিমাণ লেনদেনে।
  • বিল পরিশোধের সুবিধাঃ ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে আপনি বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল যেমন বিদ্যুৎ, গ্যাস, ইন্টারনেট, মোবাইল রিচার্জ ইত্যাদি অনলাইন বা অফলাইনে পরিশোধ করতে পারবেন। এছাড়া স্বয়ংক্রিয় বিল পেমেন্ট সেটআপ করে আপনি সময়মতো বিল পরিশোধ করতে পারেন। যা আপনাকে বিলম্ব ফি থেকে রক্ষা করবে।
  • বিনামূল্যে বিমানবন্দর লাউঞ্জ সুবিধাঃ ব্র্যাক ব্যাংকের কিছু প্রিমিয়াম ক্রেডিট কার্ড যেমন প্লাটিনাম বা গোল্ড কার্ডধারীরা দেশের এবং বিদেশের নির্দিষ্ট বিমানবন্দর লাউঞ্জে বিনামূল্যে প্রবেশের সুবিধা পেয়ে থাকেন। এর ফলে ভ্রমণকারীরা বিমানবন্দরে বিশ্রাম নিতে এবং বিভিন্ন প্রিমিয়াম সেবা গ্রহণ করতে পারেন।
  • ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্সঃ ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডধারীরা আন্তর্জাতিক ভ্রমণের সময় ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স সুবিধা পেয়ে থাকেন। এতে ভ্রমণের সময় কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনার জন্য বিমা সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন স্বাস্থ্য সমস্যা, যাত্রা বাতিল হওয়া, বা লাগেজ হারানো ইত্যাদি।
  • কাস্টমার সার্ভিস ও নিরাপত্তাঃ ব্র্যাক ব্যাংক ২৪ ঘন্টা কাস্টমার সার্ভিস প্রদান করে থাকে। যার মাধ্যমে গ্রাহকরা যেকোনো ধরনের সমস্যার সমাধান দ্রুত পেয়ে থাকেন। তাছাড়া ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডে ইএমভি চিপ এবং ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) প্রযুক্তি ব্যবহার করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এতে অনলাইন বা অফলাইন লেনদেন আরও সুরক্ষিত হয়।
  • ইএমআই সুবিধাঃ ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে ইএমআই (সমান মাসিক কিস্তি) সুবিধা পাওয়া যায়। এই সুবিধার মাধ্যমে বড় কেনাকাটা বা খরচ যেমন ইলেকট্রনিকস, আসবাবপত্র, টিকেট বা স্বাস্থ্য সেবার ব্যয় সহজে কিস্তিতে পরিশোধ করা যায়। ইএমআই সুবিধা ৩ মাস থেকে ১২ মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সময়সীমায় পাওয়া যায়।

ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা

ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য গ্রাহককে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা পূরণ করতে হবে। যা ব্যাংক গ্রাহকের আর্থিক স্থিতি, আয়, এবং অন্যান্য বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করে। নিম্নে ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার মূল যোগ্যতাসমূহ উল্লেখ করা হলো।
  • বয়সঃ আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ২১ থেকে ৬০ বছর। যেকোনো সহ-আবেদনকারী বা সম্পূরক কার্ডধারীর ন্যূনতম বয়স হতে হবে ১৮ বছর।
  • আয়ের যোগ্যতাঃ ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে হলে, একটি নির্দিষ্ট ন্যূনতম মাসিক বা বার্ষিক আয় থাকতে হবে। যেমন বেসিক কার্ডের জন্য মাসিক ন্যূনতম ২৫,০০০ টাকা থেকে ৩০,০০০ টাকা আয় থাকতে হবে। এবং প্রিমিয়াম কার্ডের ক্ষেত্রে ইনকাম বা আয় আরও বেশি হতে পারে। এবং আয়ের প্রমাণপত্র হিসেবে বেতন স্লিপ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, বা ট্যাক্স রিটার্ন স্টেটমেন্ট জমা দিতে হবে।
  • চাকরি বা পেশাঃ আবেদনকারীকে একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে একই প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে থাকতে হবে বা নির্দিষ্ট পরিমাণের ব্যাবসা বা পেশাগত স্থিতি থাকতে হবে। সরকারি চাকরিজীবী, বেসরকারি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, বা স্বনিযুক্ত পেশাজীবী (যেমন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী) ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন।
  • ক্রেডিট হিস্ট্রিঃ আবেদনকারীর পূর্ববর্তী ক্রেডিট কার্ড বা ঋণের ক্ষেত্রে ভালো ক্রেডিট স্কোর থাকা আবশ্যক। ব্র্যাক ব্যাংক গ্রাহকের ক্রেডিট ব্যুরো রিপোর্ট পরীক্ষা করে দেখে থাকে। যেখানে লেনদেনের সময়মতো পরিশোধ এবং ঋণদাতাদের প্রতি দায়বদ্ধতার মূল্যায়ন করা হয়।
  • অন্যান্য নথিঃ আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট আকারের ছবি, এবং বর্তমান ঠিকানার প্রমাণপত্র (যেমনঃ বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, বা পানি বিল) জমা দিতে হবে।
এই যোগ্যতাগুলো পূরণ করলে ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন, এবং ব্যাংক আপনার যোগ্যতা যাচাই করে কার্ড ইস্যু করবে।

ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড এর অসুবিধা গুলো কি কি

ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের অনেকগুলো সুবিধা থাকার পাশাপাশি কিছু অসুবিধা রয়েছে। যা ব্যবহারকারীদের জন্য বিবেচনা করা জরুরি। নিচে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের কিছু সম্ভাব্য অসুবিধা তুলে ধরা হলো।
  • উচ্চ সুদের হারঃ ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পুরো বিল পরিশোধ না করলে উচ্চ সুদের হার প্রযোজ্য হয়। যদি গ্রাহক মাসিক ন্যূনতম পরিমাণ ছাড়া সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ না করেন। তাহলে বাকি বকেয়ার ওপর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সুদ যোগ হতে থাকে। যেটি আর্থিকভাবে চাপ সৃষ্টি করার কারণ হতে পারে।
  • বার্ষিক ফিঃ ব্র্যাক ব্যাংকের কিছু ক্রেডিট কার্ডের জন্য উচ্চ বার্ষিক ফি প্রদান করতে হয় বিশেষ করে প্রিমিয়াম কার্ডগুলোর ক্ষেত্রে। যদি কার্ড ব্যবহারকারীরা তাদের কার্ডের সুবিধাগুলো পুরোপুরি ব্যবহার না করেন, তাহলে এই ফি তাদের জন্য বাড়তি খরচ হিসেবে প্রভাব ফেলতে পারে।
  • বিলম্ব ফিঃ সময়মতো ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ না করলে বিলম্ব ফি আরোপ করা হয়। এই ফি অনেক সময় উল্লেখযোগ্য হতে পারে এবং অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়াও, বিলম্ব ফি এবং সুদের হার একসাথে প্রয়োগ হলে পরিশোধের ব্যয় বেড়ে যায়।
  • নগদ উত্তোলন ফিঃ ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে এটিএম থেকে নগদ টাকা উত্তোলন করলে একটি নির্দিষ্ট উত্তোলন ফি আরোপ করা হয়। এই ফি সাধারণত লেনদেনের পরিমাণের ২%-৩% হতে পারে, যা একটি বড় অঙ্কে পরিণত হতে পারে। তাছাড়া, নগদ উত্তোলনের পর থেকেই সুদ প্রযোজ্য হয়, যা দ্রুত বাড়তে পারে।
  • বৈদেশিক লেনদেন ফিঃ আন্তর্জাতিক লেনদেনের সময় ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে বৈদেশিক লেনদেন ফি আরোপিত হয়। যা লেনদেনের মোট পরিমাণের একটি নির্দিষ্ট শতাংশ (সাধারণত ২.৫% - ৩%) হতে পারে। যারা বিদেশে বা আন্তর্জাতিক ই-কমার্স সাইটে কেনাকাটা করেন, তাদের জন্য এই ফি একটি বাড়তি ব্যয় হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
  • অতিরিক্ত খরচের ঝুঁকিঃ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে অতিরিক্ত খরচের ঝুঁকি থাকে, কারণ সহজলভ্য ক্রেডিট সীমার কারণে অনেকেই অপ্রয়োজনীয় খরচ করতে পারেন। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে এবং আর্থিক অসুবিধা দেখা দিতে পারে।
  • ক্রেডিট স্কোরের প্রভাবঃ ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সঠিক ব্যবস্থাপনা না করলে, যেমন বিলম্বে পরিশোধ বা সময়মতো ঋণ পরিশোধ না করলে। ক্রেডিট স্কোরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এর ফলে ভবিষ্যতে ঋণ পাওয়া বা অন্য আর্থিক সুবিধা গ্রহণে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • সীমিত লাউঞ্জ সুবিধাঃ যদিও প্রিমিয়াম কার্ডগুলিতে বিনামূল্যে বিমানবন্দর লাউঞ্জ সুবিধা দেওয়া হয় তা নির্দিষ্ট কিছু লাউঞ্জে সীমাবদ্ধ। ফলে যারা বেশি ভ্রমণ করেন এবং বিভিন্ন দেশের লাউঞ্জে সুবিধা পেতে চান, তারা এই সুবিধার সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হতে পারেন।
  • লেনদেনের লিমিটেশনঃ কিছু সময়ে ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে দৈনিক বা মাসিক লেনদেনের সীমা নির্ধারিত থাকে, যা বড় লেনদেনের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করতে পারে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক লেনদেনের সময় কার্ডের সুরক্ষা ব্যবস্থা সীমিত থাকতে পারে।

ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করার নিয়ম

ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করার প্রক্রিয়া সহজ এবং সুবিধাজনক। আপনি ব্র্যাক ব্যাংকের যেকোনো শাখা থেকে সরাসরি আবেদন করতে পারেন, অথবা ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে পারেন। আবেদন করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি প্রয়োজন হয়, যেমন আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র, আয়ের প্রমাণপত্র (যেমনঃ বেতন স্লিপ বা ব্যাংক স্টেটমেন্ট), এবং বর্তমান ঠিকানা প্রমাণপত্র।
আপনার আয়ের ভিত্তিতে ব্র্যাক ব্যাংক আপনার ক্রেডিট লিমিট নির্ধারণ করবে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আবেদন মূল্যায়ন করে, যোগ্যতা যাচাইয়ের পর কার্ড ইস্যু করে থাকে। আবেদন প্রক্রিয়ার সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিকভাবে জমা দিলে এবং যোগ্যতা পূরণ করলে আবেদনটি দ্রুত প্রক্রিয়া করা হয়।

ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা তোলার নিয়ম

ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা তোলার কিছু নিয়ম রয়েছে যেগুলোর মধ্য দিয়ে ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা তুলতে হয়। যদি আপনি ব্রাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা তুলতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে ব্র্যাক ব্যাংকের এটিএম বুথে যেতে হবে।

তারপর এটিএম বুথে থাকা মেশিনে ক্রেডিট কার্ডটি প্রবেশ করাতে হবে তারপরে এটিএম বুথের স্ক্রিনে বেশ কিছু অপশন শো করবে। আমরা যেহেতু এখন বুথ থেকে টাকা তুলব সেহেতু ব্যালেন্স অপশনে সিলেক্ট করে টাকার পরিমান বসে ক্রেডিট কার্ড পিন নাম্বার দিয়ে টাকা উত্তোলন করতে হবে।

এবং টাকা তোলা হয়ে গেলে ক্রেডিট কার্ডটি বের করে নিতে হবে। আপনারা চাইলে ব্রাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন বা তুলতে পারবেন।

লেখকের মতামত

প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করেছি ব্রাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড এর সুবিধা, অসুবিধা ও এই কার্ড পেতে কি কি যোগ্যতা লাগে এবং এই ক্রেডিট কার্ড আবেদন করার নিয়ম সহ ব্র্যাক ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কিত আরো গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন তথ্য নিয়ে। যা আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে এবং এই কার্ড সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য জানতে পেরেছে। এমনই সব ইনফরমেটিভ পোস্ট পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজি মাল্টিপ্লাই এর পোস্টে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url