সহজ কিস্তিতে লোন বাংলাদেশ থেকে নেওয়ার উপায়

ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়, সুদের হার, পরিশোধের সময়সীমাসহজ কিস্তিতে লোন, সহজ কিস্তিতে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার উপায় ও সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার শর্তাবলী, সুদের হার সহ সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের এই আর্টিকেল।
সহজ কিস্তিতে লোন
আপনারা যারা সহজ কিস্তিতে লোন বাংলাদেশ নিতে চান। কিন্তু কোথায় থেকে নেবেন, কিভাবে নিবেন সহ এই লোন বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্ন মনে এসে থাকে তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটা আপনার জন্য। কারণ এই আর্টিকেলে আমরা সহজ কিস্তি লোন বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেছি। যেগুলো আপনাদের এই লোন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এবং লোন পেতে বিশেষভাবে সাহায্য করবে। তাই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্র

ভূমিকা

মানুষ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রয়োজনে লোন গ্রহণ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে। বিশেষ করে আর্থিক বিপদকালীন সময়ে মানুষের লোন নিতে চায়। কিভাবে তৎক্ষণিক সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়া যায় সে বিষয়ে চিন্তা করতে থাকে। তাই তাদের সুবিধার্থে আজকের এই পোস্টে এ সকল বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সেগুলো জানতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন।

সহজ কিস্তিতে লোন

মানুষ বিভিন্ন সমস্যায় পরে লোন নিতে চায়, সে জন্য কিভাবে সহজ কিস্তিতে লোন নেয়া যায় সে বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করে। কিন্তু কোন ব্যাংকে থেকে লোন নিবে, কত টাকা লোন নিবে, লোন নেবার শর্তগুলো কি কি এবং কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয় সহ লোন বিষয়ক আরো বিভিন্ন চিন্তাভাবনা মাথায় চলে আসে।


তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব সহজ কিস্তিতে লোন পাবার জন্য কোন ব্যাংক বা সংস্থা থেকে লোন নিবেন এবং কোন কোন উপায়ে সহজ কিস্তিতে লোন পাওয়া যায় তা নিয়ে। তাই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

সহজ কিস্তিতে লোন বাংলাদেশ জনপ্রিয় কিছু ব্যাংক/প্রতিষ্ঠান

বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি ব্যাংক ও সংস্থা গুলো সহজ কিস্তিতে লোন প্রদান করে থাকে। নিচে কিছু সরকারি-বেসরকারি জনপ্রিয় সহজ কিস্তিতে লোন দানকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

দেশের বিভিন্ন ব্যাংক সহজ কিস্তিতে লোন দিয়ে থাকে তার মধ্যে কিছু ব্যাংকের নাম তুলে ধরা হয়েছে।

ব্যাংকঃ

  • ব্রাক ব্যাংকঃ ব্রাক ব্যাংক একটি বেসরকারি এনজিও সংস্থা। সহজ কিস্তিতে লোন এর ক্ষেত্রে ব্র্যাক ব্যাংকের জনপ্রিয়তা রয়েছে অনেক। ব্রাক ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের লোন যেমন, ব্যক্তিগত লোন/ঋণ, ব্যবসায়িক লোন/ঋণ, গৃহ লোন/ঋণ শিক্ষা লোন/ঋণ ইত্যাদি সহজ কিস্তিতে প্রদান করে থাকে।
  • জনতা ব্যাংকঃ জনতা ব্যাংক বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যক ব্যাংক। এই ব্যাংকও বিভিন্ন ধরনের লোন যেমন, গৃহ লোন/ঋণ, কৃষি লোন/ঋণ, SME লোন/ঋণ ইত্যাদি লোন সহজ কিস্তিতে প্রদান করে থাকে।
  • ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশঃ ইসলামী ব্যাংক একটি বৃহত্তম বেসরকারি বাণিজ্যক ব্যাংক। এই ব্যাংক ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পরিচালিত হয়। ইসলামী ব্যাংকও সহজ কিস্তিতে বিভিন্ন ধরনের ইনভেসমেন্ট দিয়ে থাকে। এই ব্যাংক সরাসরি লোন/ঋণ দেয় না তারা ইনভেস্টমেন্ট করে থাকে।
  • এগ্রিকালচারাল ক্রেডিট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (ACDB): এগ্রিকালচারাল ক্রেডিট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক হ্যালো সরকারি কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। ACDB ব্যাংক কৃষি ক্ষেত্রকে উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের কৃষি লোন যেমন, সেচ লোন/ঋণ, ফসল লোন/ঋণ, গবাদি পশু পালন লোন/ঋণ ইত্যাদিতে সহজ কিস্তিতে লোন প্রদান করে থাকে।

এছাড়াও বাংলাদেশের আরো বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি ব্যাংক রয়েছে যারা সহজ কিস্তিতে লোন প্রদান করে থাকে। এবার নিচে কিছু মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানের নাম তুলে ধরব যারা সহজ কিস্তিতে লোন প্রদান করে থাকে।

মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানঃ

  • গ্রামীণ ব্যাংকঃ গ্রামীণ ব্যাংক হল বিশ্বের মধ্যে একটি অন্যতম সফল মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান গ্রামের প্রান্তিক মানুষের জীবনের মান উন্নয়নে কাজ করে থাকে। এই সংস্থাটি গ্রামের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত তাদের সেবা পৌঁছে দিতে পারে। যে সকল ব্যাংক সহজ কিস্তিতে লোন দিয়ে থাকে তার মধ্যে গ্রামীণ ব্যাংক অন্যতম। এই ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের সহজ কিস্তিতে লোন দিয়ে থাকে।
  • আশাঃ আশা সংস্থার মূল লক্ষ্য সমাজের অনগ্রসর, প্রান্তিক ও দরিদ্র শ্রেণীর মানুষদেরকে আর্থিক ক্ষমতায়ন করা। আশা হল non-governmental organization একটি প্রতিষ্ঠান। আশা মাইক্রোফাইন্যান্স সেবা মানুষকে প্রদান করে থাকে। এই সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানটি বিশেষ করে নারীদেরকে সহজ কিস্তিতে লোন দিয়ে থাকে।
  • পোস্ট অফিসঃ বাংলাদেশ ডাক বিভাগ বা পোস্ট অফিস সহজ কিস্তিতে লোন দিয়ে থাকে। এই ডাক বিভাগের সহজ কিস্তি লোন সুবিধা বিশেষ করে গ্রামীন এলাকার মানুষজন পেয়ে থাকে।

উপরোক্ত ব্যাংক গুলো ছাড়াও এমন আরো অনেক ব্যাংক রয়েছে যেগুলো থেকে সহজ কিস্তিতে ঋণ পাওয়া যায়।

সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার আগে কিছু বিবেচ্য বিষয়


আর্থিক চাহিদা যাচাই করতে হবে

লোন নেওয়ার আগে লোন গ্রহণকারী কে নিশ্চিত করতে হবে যে আসলেই কি তার লোনের প্রয়োজন আছে কিনা। অন্য কোন বিকল্প ভাবে অর্থের ব্যবস্থা করা যায় কিনা যেমন বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন ইত্যাদির কাছ থেকে ব্যবস্থা করা যায় কিনা।

লোনের শর্তাবলী গুলো ভালোভাবে পড়া

লোন গ্রহণের আগে অবশ্যই লোনের শর্তাবলী, কিস্তির পরিমাণ, সুদের হার, পরিশোধের সময় ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে। বিভিন্ন অর্থ দানকারী প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার লোনের শর্তাবলি সাথে তুলনা করতে হবে এবং লোন গ্রহণকারীর যে লোন টি উপযুক্ত সেটা বেছে নিতে হবে।

লোন গ্রহণকারীর আয়ের সঙ্গে লোনের কিস্তি সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে

লোন নেওয়ার আগে দেখে নিতে হবে যে গ্রাহক প্রতিমাসের বা প্রতি সপ্তার লোনের কিস্তি দিতে সক্ষম কিনা। লোন গ্রহীতার মাসিক ইনকামের সাথে লোনের কিস্তির সামঞ্জস্যপূর্ণ রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে।


ডিফল্টের সম্পর্কে সাবধান বা সচেতন থাকতে হবে

লোনের নির্ধারিত সময়সীমার ভেতর লোনের কিস্তি পরিশোধ না করতে পারলে লোন গ্রহীতার সম্পত্তি জব্দ করে নেওয়া হতে পারে। লোন নেওয়ার আগে ডিফল্টের ঝুঁকি সম্পর্কে অবগত বা সচেতন থাকতে হবে।

আর্থিক উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শ

লোন গ্রহণের ক্ষেত্রে যদি কোন প্রশ্ন কিংবা সন্দেহ থেকে থাকে তাহলে একজন আর্থিক উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া দরকার। তারা সঠিক সিদ্ধান্ত প্রোভাইড করবে।

সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার উপায়

সহজ কিস্তিতে লোন দেয় এমন অনেক সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক বা সংস্থায়ী রয়েছে আমাদের দেশে। যেগুলো লোন আবেদনকারীদের সহজ কিস্তিতে ৫ হাজার টাকা থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন দিয়ে থাকে। যেমন, ব্ল্যাক, আশা, বুড়ো বাংলাদেশ, গণমুখী, একটি বাড়ি একটি খামার ইত্যাদি।

আপনি চাইলে আপনার যেকোনো দরকারে এই সকল ব্যাংক বা সংস্থা থেকে সহজ কিস্তিতে লোন গ্রহণ করতে পারেন। নিচে কিছু ব্যাংক/সংস্থা থেকে লোন নেওয়ার উপায় দেওয়া হয়েছে।

আশা ব্যাংক থাকে সহজ কিস্তিতে লোন

অসচ্ছল এবং দরিদ্র মানুষদের বিপদকালীন সময়ে কর্মস্থান চিকিৎসা ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা প্রয়োজনে সহজ কিস্তিতে আশা ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে। বর্তমানে আশা ব্যাংককে তিন ধরনের লোন সেবা চালু আছে।

  • আশা প্রাথমিক লোন
  • আসা বিশেষ লোন
  • এবং আশা MSME লোন

আশা প্রাথমিক লোনঃ যারা বিশেষ কোনো দরকারে কম টাকা লোন নিতে চান সেক্ষেত্রে তাদের জন্য আশা প্রাথমিক লোন প্রযোজ্য হবে। একজন গ্রাহক চাইলে ৫০০০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন। এবং সেই লোন সাপ্তাহিক কিংবা বা মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবেন।


যদি আপনি আশা প্রাথমিক লোক গ্রহণ করেন সেক্ষেত্রে লোনের সুদের হার ১৪% থেকে বিশেষ ক্ষেত্রে ০% হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে এই লোন আবেদন করার ২৪ ঘন্টা মধ্যে এই লোন পেয়ে থাকে।

আশা বিশেষ লোনঃ কারো যদি ১ লক্ষ টাকারও বেশি লোন দরকার হয় তাহলে তারা আশা বিশেষ লোনের ধরনটি আবেদন করতে পারেন। তবে প্রার্থমিক লোনের থেকে এই লোনের সুদের হার একটু বেশি হতে পারে। এই লোন পাওয়ার ক্ষেত্রে আবেদনকারী কে নিকটস্থ আশা ব্যাংক অথবা এনজিওতে যেতে হবে।

আশা এমএসএমই লোনঃ যাদের অনেক বেশি টাকার প্রয়োজন তারা এই আশা এমএসএমই লোন আবেদন করতে পারেন। এই এমএসএমই লোন বিশেষ কোন প্রয়োজনে বা ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে আপনারা এই লোন গ্রহণ করতে পারবেন। অন্যান্য লোনের থেকে এই লোনের সুদের হার এবং সুবিধা একটু বেশি হতে পারে।

আশা ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার শর্তাবলী

যদি আপনি আশা ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে চান সেক্ষেত্রে কিছু শর্তাবলী আপনাকে পূরণ করতে হবে। তবেই আপনি আশা ব্যাংক থেকে লোন আবেদন করতে পারবেন। নিতে সেই সব শর্তগুলি দেওয়া হলো।

  • নাগরিকতাঃ লোন আবেদনকারী অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
  • বয়সঃ লোন আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছরের উর্ধ্বে হতে হবে।
  • আয়ের প্রমাণঃ আয়ের সনদপত্র।
  • ঋণ পরিশোধে সক্ষমতাঃ আবেদনকারীর অবশ্যই লোন পরিশোধ করার সক্ষমতা থাকতে হবে।
  • কাগজপত্রঃ কিছু প্রয়োজনী কাগজপত্র লাগবে যা আবেদনকারীর কাছে থাকতে হবে।

আশা থেকে সহজ কিস্তিতে লোন পেতে কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন

আশা ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে তেমন কোন ডকুমেন্ট দরকার পড়ে না। আপনি খুব সহজেই সামান্য কিছু কাগজপত্র দিয়ে আশা ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে পারবেন। আশা ব্যাংক থেকে লোন আবেদন করার জন্য যে সকল ডকুমেন্ট দরকার হবে তা হলো।

  • আবেদন করার ফরম।
  • জন্ম নিবন্ধন /এনআইডি /পাসপোর্ট।
  • আয়ের প্রমাণ।
  • লোন আবেদনকারীর ঠিকানা প্রমাণ।
  • লোন আবেদনকারীর ২ থেকে ৪ কপি ছবি।

আশা ব্যাংক থেকে লোন আবেদন করার জন্য লোন আবেদন ফরমটি আপনি আপনার নিকটস্থ আশা ব্যাংক শাখা থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। এছাড়াও আপনি চাইলে আশা ব্যাংক অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকেও ফরম টি ডাউনলোড করে দিতে পারবেন। লোন আবেদনের ফরমের সঙ্গে উপরে উল্লেখিত ডকুমেন্ট গুলি সংযুক্ত করে আপনি ১ দিনের মধ্যেই সহজ কিস্তিতে আশা লোন নিতে পারেন।

কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার নিয়ম

কর্মসংস্থান ব্যাংক একটি সরকারী ব্যাংক এই ব্যাংকের মূল লক্ষ্য হলো দেশের বেকার যুব সমাজকে কর্মে নিয়োজিত করে আরো নির্ভরশীল করে গড়ে তোলা। এই কর্মসংস্থান ব্যাংক ও সহজ কিস্তিতে লোন দিয়ে থাকে। এই ব্যাংক বিভিন্ন খাতে ২০ হাজার থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন প্রদান করে থাকে। 

এবং এর সুদের হার হয় ৮% কর্মসংস্থান ব্যাংক সেই সকল খাতে লোন দিয়ে থাকে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিবহন সেবা, সেবা সম্পদ, প্রাণি সম্পদ, বাণিজ্যিক খাত, ক্ষুদ্র ও কুড়ির শিল্প, শিল্প কারখানা ইত্যাদি।

কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম

কর্মসংস্থান ব্যাংকের থেকে কোন ব্যক্তি যদি লোন গ্রহণ করতে চায় তাহলে তাদের কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে। কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে সহজ কিস্তিতে লোন পেতে হলে এই শর্তগুলো পূরণ করতে হবে এবং যোগ্যতা থাকতে হবে তার নিচে দেওয়া হলো।

  • লোন আবেদনকারী কে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
  • দেশের যেকোনো একটি জেলার স্থানীয় বাসিন্দা হতে হবে সেই জেলায় নিকটস্থ শাখায় আবেদন করতে হবে।
  • বেকার অথবা অর্ধ বেকার হতে হবে।
  • লোন আবেদনকারীর বয়স সর্বনিম্ন ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
  • লোন গ্রহণকারী কে বহনের ইকুইটি বহনেন সক্ষমতা থাকতে হবে।
  • যে খাতে লোন করবে সেই প্রকল্প পরিচালনার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
  • অন্য কোন ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করে লোন পরিশোধে অক্ষমতা প্রকাশ পেলে এই প্রতিষ্ঠানে লোন গ্রহণযোগ্য হবে না।
  • লোন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিষদের সক্ষমতা থাকতে হবে।
  • এই ব্যাংকের নীতিমালা গুলো অনুসরণ করতে হবে।

উপরোক্ত শর্তগুলো ও যোগ্যতাগুলো লোন গ্রহণকারীর থেকে থাকে তাহলে কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে সহজ কিস্তিতে লোন গ্রহণ করতে পারবেন। লোনের প্রকারভেদ এর ওপর নির্ভর করে সর্বোচ্চ ৫ বছরের মধ্যেও এই লোন পরিশোধ করা যায়।

একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প থেকে সহজ কিস্তিতে লোন

একটি বাড়ি একটি খামার এই প্রকল্পটি ২০০৯ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত করা হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। এই প্রকল্পটির বর্তমানে আমার বাড়ি আমার খামার নামেও পরিচিত। যে সকল ব্যক্তিরা সহজ কিস্তিতে লোন নিতে চাই তারা চাইলে একটি বাড়ি একটি খামার থেকে লোন নিতে পারে। নিচে আলোচনা করা হয়েছে কিভাবে একটি বাড়ি একটি খামার অথবা আমার বাড়ি আমার খামার থেকে সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়া যায়।

একটি বাড়ি একটি খামার থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম

আমাদের সরকার দেশের বেকারত্ব এর হার কমানোর জন্য একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প লোন দিয়ে থাকে। কোন ব্যক্তি যদি এখান থেকে লোন নিতে চাই তাহলে তাকে কিছু শর্ত নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে। তাহলে এই প্রকল্পটি থেকে গ্রাহক উচ্চ ১ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন গ্রহণ করতে পারবে। এ প্রকল্পটি থেকে লোন পেতে কি কি করণীয় বা করতে হবে তা নিচে দেওয়া হল।

প্রথমে গ্রাহককে গ্রাম উন্নয়ন সংগঠনে যোগ দিতে হবে। সেজন্য নিজ উপজেলার একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোন কর্মকর্তার নিকট যেতে হবে।


তারপর তার মাধ্যমে গ্রাহক গ্রাম উন্নয়ন সংগঠনে যোগ দিতে পারবে। এই সংগঠনে ২০ জন পুরুষ এবং ৪০ জন নারী নিয়ে গঠিত হয়।

এই সংগঠনে যোগ দেওয়ার পরে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে ২৪ মাস পর্যন্ত প্রতিমাসে ২০০ টাকা করে জমা দিতে হবে। তবে একজন ব্যক্তি এই সংগঠনের যোগ দেওয়ার পর ৬ মাস একটানা ২০০ টাকা করে জমা দেওয়ার পরপরই সে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার সুবিধা গ্রহন করতে পারবে।

একটি বাড়ি একটি খামার লোন নেওয়ার শর্তাবলী


  • বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে
  • নিজস্ব বাড়ি থাকতে হবে
  • ১৮ বছরের উপরে হতে হবে
  • প্রতি সপ্তাহে/মাসে কিস্তি দিতে হবে
  • লোন নেওয়ার ৩ মাস পর থেকে কিস্তি দিতে হবে
  • লোন নেওয়ার ১৮ মাসের ভেতর লোনকৃত অর্থ পরিশোধ করতে হবে

একটি বাড়ি একটি খামার সুদের হার

অন্য সব ব্যাংক লোনের মতোই আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প সুদ দিতে হয়। এই প্রকল্পের লোনের সুদের হার ৮% হয়ে থাকে। মনে করুন কোন ব্যক্তি এই লোন প্রকল্পটি থেকে ৫০ হাজার টাকা লোন গ্রহণ করেছে তাহলে তাকে সুদসহ ৫৩ হাজার ২২৬ টাকা পরিশোধ করতে হবে। অর্থাৎ মোট সুদ দিতে হবে ৩২২৬ টাকা।

সহজ কিস্তিতে লোনের সুবিধা

  • আর্থিক চাহিদা পূরণে সহায়তা করেঃ যখন মানুষ আর্থিক সংকটে পড়ে তখন এই সহজ কিস্তিতে লোন গ্রহণ করে সংকট মোকাবেলা করা যায়।
  • দীর্ঘ মেয়াদী পরিষদের সুযোগঃ সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার আরেকটি বড় সুবিধা হলো এই লোন পরিশোধের সময়সীমা অনেক বেশি থাকে। এবং সাপ্তাহিক ও মাসিক হিসেবে অল্প টাকা দিয়ে কিস্তি পরিশোধ করা যায়।
  • সুদের হার তুলনা মূলক কমঃ অন্যান্য লোন ব্যবস্থা থেকে এই লোন ব্যবস্থা তুলনামূলক কম হয়।
  • ক্রেডিট স্কোর উন্নত করতে সহায়তা করেঃ ঠিক সময় মতো লোন পরিশোধ করতে পারলে লন গ্রহীতার ক্রেডিট স্কোর এর মান ভালো হয়।

সহজ কিস্তিতে লোনের অসুবিধা

  • চার্জ এবং ফ্রিঃ এই ধরনের লোনে বিভিন্ন ধরনের চার্জ এবং ফি কাটা হয়।
  • সুদের বোঝাঃ লোনের উপর ধার্যকৃত সুদের পরিমাণ লোন এর মোট খরচ বৃদ্ধি করে দেয়।
  • ডিফল্টের ঝুঁকিঃ লোনের ধার্যকিত সময়ের মধ্যে কিস্তি বা লোন পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়ে যেতে পারে।
  • দীর্ঘমেয়াদী লোনের বোঝাঃ লং টাইম ধরে এই ঋণ পরিশোধ করতে হয় যার ফলে আপনার আর্থিক স্বাধীনতাকে ব্যাহত করতে পারে।

লেখকের মতামত

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করি আমাদের আজকের এই সহজ কিস্তিতে লোন বিষয়ক আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। এবং কোন ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠান থেকে কিভাবে সহজে লোন পাবেন তা জানতে পেরেছেন। তবুও যদি এই লোন সংক্রান্ত আপনাদের মনে কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

আমরা এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের লোন ও ব্যাংকিং সেবা মূলক পোস্ট শেয়ার করে থাকে। তাই এমনই সব ব্যাংকিং সেবামূলক ইনফোরমেটিভ পোস্ট পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজি মাল্টিপ্লাই এর পোস্টে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url