ইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার উপায়, লোনের ধরন, ইন্টারেস্ট রেট

ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়, সুদের হার, পরিশোধের সময়সীমাইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার উপায়, ইসলামী ব্যাংক কি কি ধরনের লোন দেয় ও লোন পাওয়ার শর্তাবলী সহ ইন্টারেস্ট রেট এছাড়াও কত টাকা লোন প্রদান করে এই সকল বিষয় নিয়ে নিয়ে আজকের এই আর্টিকেল।
ইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার উপায়


আপনারা যারা ইসলামী ব্যাংক লোন বা ইনভেসমেন্ট সম্পর্কে জানতে চান তাদেরকে আজকের এই আর্টিকেলে স্বাগতম। কারণ এই পোস্টে আমরা ইসলামী ব্যাংক লোন সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেছি। তাই এই বিষয়গুলো বিস্তারিত জানতে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য সহকারে সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্র

ভূমিকা

বাংলাদেশে যতগুলো ইসলামী ব্যাংক রয়েছে তারা সরাসরি লোন দেয় না তারা বিনিয়োগ বা ইনভেসমেন্ট করে থাকে। ইসলামী ব্যাংক কোন কোন খাতে লোন দেয়, ইনভেসমেন্ট নেওয়ার ক্ষেত্রে লোন গ্রহণকারীকে কত পারসেন্ট লাভ দিতে হবে এবং ইন্টারেস্টেড পরিমাণ ও ফি সহ এই লোন পেতে কি কি যোগ্যতা থাকতে হয়, কি জন্য এই লোন দেওয়া হয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এই পোস্টে।

এছাড়াও এই পোস্টে ইসলামী ব্যাংক লোন সম্পর্কিত খুঁটিনাটি বিভিন্ন তথ্য আপনারা জানতে পারবেন। তাই এই সকল বিষয়গুলো জানতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন।

ইসলামী ব্যাংক

বাংলাদেশদের অর্থনৈতিক খাত উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হবার শুরু থেকেই। ইসলামী ব্যাংক গ্রাহকদের স্বপ্ন পূরণে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করার করে চলেছে। ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক বা ইসলামে বিধি-বিধান অনুযায়ী এই ব্যাংক পরিচালিত হয়। এই ব্যাংক সরাসরি অর্থ লোন দেয় না। এই প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে মানুষকে আর্থিকভাবে সাহায্য করে থাকে। এবং সুদমুক্ত হওয়াতে ইসলামী ব্যাংকের জনপ্রিয়তা ও মানুষের কাছে তুঙ্গে।

বাংলাদেশে কতটি ইসলামী ব্যাংক আছে

বাংলাদেশের মোট ৮ টি ইসলামী ব্যাংক আছে। নিচে সেই ৮ টি ইসলামী ব্যাংকগুলোর নাম দেওয়া হলো।

  • ১. ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড
  • ২. শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক
  • ৩. আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড
  • ৪. আইসিবি (ICB) ইসলামিক ব্যাংক
  • ৫. সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড
  • ৬. ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড
  • ৭. সোনালী ব্যাংক লিমিটেড
  • ৮. এক্সিম ব্যাংক লিমিটেড

এই আটটি ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগ বা লোন পদ্ধতি গুলো একটি থেকে আরেকটি আলাদা। তবে আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ইসলামী ব্যাংকগুলোর বেসিক পদ্ধতি গুলো নিয়ে আলোচনা করব। যে পদ্ধতিগুলো প্রায় সব ইসলামিক ব্যাংকগুলোই অনুসরণ করে বিনিয়োগ থাকে।


আরেকটি কথা মনে রাখা দরকার যে ইসলামী ব্যাংকগুলো সরাসরি লোন বা ঋণ দেয় না তারা বিনিয়োগ করে থাকে। যে কেউ চাইলেই ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে না। ইসলামী ব্যাংকগুলো যে সব খাতে বিনিয়োগ করে থাকে সেগুলোকে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

ইসলামী ব্যাংক কি কি ধরনের লোন দেয়

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নতির জন্য ইসলামী ব্যাংক বিভিন্ন খাতে ইনভেস্টমেন্ট বা বিনিয়োগ করে চলেছে। ইসলামী ব্যাংক কি কি ধরনের লোন (ইনভেসমেন্ট) দেয় তা নিচে উল্লেখ করা হয়েছে।

  • ইসলামী ব্যাংক হোম লোন
  • ইসলামী ব্যাংক বাণিজ্য লোন
  • ইসলামী ব্যাংক কৃষি লোন
  • ইসলামী ব্যাংক উদ্যোক্তা লোন
  • ইসলামী ব্যাংক ফ্রিল্যান্সিং লোন
  • ইসলামী ব্যাংক রিয়েল এস্টেট ব্যবসা লোন
  • ইসলামী ব্যাংক শিল্পখাদ উন্নয়ন লোন

এবার চলুন ইসলামী ব্যাংকের উপরোক্ত এই সমস্ত লোনের ধরন গুলো নিচে থেকে বিস্তারিত তথ্য গুলো জেনে নেওয়া যাক।

ইসলামী ব্যাংক হোম লোন

নতুন বাড়ি তৈরি বা পুরনো বাড়ি মেরামত করার জন্য ইসলামী ব্যাংক হোম লোন দিয়ে থাকে। এই লোন আবেদনকারীর সম্পত্তির ওপর নির্ভর করে প্রদান করা হয়। ইসলামী ব্যাংক হোম লোন সর্বোচ্চ ৩০ লক্ষ টাকা ইনভেসমেন্ট করে থাকে। এই লোন পেতে ২ জন গ্যারান্টার প্রয়োজন হয়।

ইসলামী ব্যাংক হোম লোন পেতে যে সকল ডকুমেন্ট প্রয়োজনঃ

  • জাতীয় পরিচয় পত্র/পাসপোর্ট
  • জমির দলিল ও খতিয়ান নাম্বার
  • খতিয়ান নামধারী রশিদ
  • এনইসি
  • গ্যারান্টারের প্রয়োজনীয় কাগজপএ

ইসলামী ব্যাংক বাণিজ্য লোন

একটি দেশকে অর্থনৈতিক ভাবে উন্নত করতে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং চালিকাশক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেজন্য বাংলাদেশের ব্যবসা খাতকে আরো ব্যাপকভাবে প্রসারিত করতে এবং উন্নতির লক্ষ্যে সহ ব্যবসায়ীকদের আর্থিক সাহায্য করতে ইসলামী ব্যাংক খুব সহজ শর্তে এবং অল্প কিছু ডকুমেন্ট জমা নেওয়ার মাধ্যমে বাণিজ্য লোন বা বাণিজ্য ইনভেসমেন্ট প্রদান করে থাকে।


ইসলামী ব্যাংক বাণিজ্য লোন পেতে যে সকল ডকুমেন্ট প্রয়োজনঃ

  • জাতীয় পরিচয় পত্র/পাসপোর্ট
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের দলিল
  • গ্যারান্টারের ছবিসহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
  • ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স এবং আয় ব্যয়ের হিসাবের কাগজপত্র

ইসলামী ব্যাংক কৃষি লোন

বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই কৃষি কাজে নিয়োজিত এবং বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। আমাদের দেশের কৃষি পণ্য বিদেশে রপ্তানির করার ফলে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কৃষি খাত। কিন্তু আমাদের দেশের কৃষকরা দরিদ্র সীমার নিচে বাস করে। তাই তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে এবং বিভিন্ন আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় ও কৃষি ফলন উন্নত করার জন্য ইসলামী ব্যাংক ব্যাংক কৃষি লোন দিয়ে থাকে।

ইসলামী ব্যাংক কৃষি লোন পেতে যে সকল ডকুমেন্ট প্রয়োজনঃ

  • জাতীয় পরিচয় পত্র
  • কৃষি জমির দলিল
  • কৃষি ট্রেনিং গ্রহণ করা থাকলে তার ডকুমেন্ট
  • বর্তমান আয়ের উৎস সংক্রান্ত কাগজপত্র

ইসলামী ব্যাংক উদ্যোক্তা লোন

বাংলাদেশে দিন দিন বেকারত্বের সমস্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। চাকরির উপর নির্ভরশীল না হয়ে নতুন উদ্যোক্তা, আত্মনির্ভরশীল ও স্বাবলম্বী করার উদ্দেশ্যে ইসলামী ব্যাংক উদ্যোক্তা লোন প্রদান করে থাকে।

ইসলামী ব্যাংক উদ্যোক্তা লোন পেতে যে সকল ডকুমেন্ট প্রয়োজনঃ

  • জাতীয় পরিচয় পত্র/পাসপোর্ট
  • আবেদনকারী সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • আয়ের উৎসর প্রমাণপত্র
  • ব্যবসার পরিকল্পনা ও সম্ভাব্য বাজেট
  • ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স এবং ব্যবসার হিসাব পত্র

ইসলামী ব্যাংক ফ্রিল্যান্সিং লোন

বর্তমান সময়ের তরুণরা ফ্রিল্যান্সিং কাজে বেশি মনোনিবেশে আগ্রহী। আমাদের দেশের বহু তরুণরা এই ফ্রিল্যান্সিং কাজে নিয়োজিত থেকে বহু বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে এবং ফ্রিল্যান্সিং কাজের মাধ্যমে দেশে রেমিডেন্স আনছে। যার সুফল দেশের অর্থনৈতিকের ওপর পড়ছে এবং দেশের অর্থনৈতিক ঘাটতি পূরণে ব্যাপকভাবে ভূমিকা পালন করছে।


সেজন্য ফ্রিল্যান্সিংদের সুবিধার কথা চিন্তা করে এবং তাদের আগ্রহ বাড়াতে ইসলামী ব্যাংক ফ্রিল্যান্সিং লোন দিয়ে থাকে। এই লোন নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কোর্স, ইলেকট্রনিক্স গেজেট ইত্যাদি ক্রয়ের জন্য প্রদান করা হয়ে থাকে। কিন্তু এই লোন দুই বছরের ভিতর পরিশোধ করতে হয় তথা পরিশোধের সময়সীমা দুই বছর হয়।

ইসলামী ব্যাংক ফ্রিল্যান্সিং লোন পেতে যে সকল ডকুমেন্ট প্রয়োজনঃ

  • জাতীয় পরিচয় পত্র/পাসপোর্ট
  • সম্পত্তির দলিল (কমপক্ষে ১ লক্ষ টাকা মূল্যের সম্পদ হতে হবে)
  • ফ্রিল্যান্সিং সনদ (ফ্রিল্যান্সিং কোর্সের সার্টিফিকেট)
  • ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ডকুমেন্ট

ইসলামী ব্যাংক রিয়েল এস্টেট ব্যবসার লোন

বর্তমানে বাংলাদেশ রিয়েল এস্টেট ব্যবসার জনপ্রিয়তা রয়েছে অনেক। কোন ব্যক্তির যদি রিয়েল এস্টেট ব্যবসার প্রতি আগ্রহ থাকে এবং সে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার জন্য লোন নিতে চায় তাহলে তাদের জন্য সুখবর। কারণ ইসলামী ব্যাংক রিয়েল এস্টেট ব্যবসার লোন প্রদান করে থাকে।

ইসলামী ব্যাংক রিয়েল এস্টেট ব্যবসার লোন পেতে যে সকল ডকুমেন্ট প্রয়োজনঃ

  • জাতীয় পরিচয় পত্র/পাসপোর্ট
  • জমি সংক্রান্ত দলিল এবং অন্যান্য ডকুমেন্ট
  • ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে
  • ব্যবসার মালিকগণের জাতীয় পরিচয়পত্র কপি ও ছবি জমা দিতে হবে
  • কোম্পানির ট্রেড লাইসেন্স এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

ইসলামী ব্যাংক শিল্পখাত উন্নয়ন লোন

একটি দেশের শিল্প খাত উন্নত না হলে সেই দেশকে উন্নত করা অসম্ভব। দেশের শিল্প খাতের মান অনুযায়ী সে দেশের উন্নয়ন হয়। তাই বাংলাদেশের শিল্প খাতকে আরো উন্নত এবং নতুন উদ্যোক্তাদের এই উন্নয়নের শামিল করতে ইসলামী ব্যাংক উন্নয়ন লোন প্রদান করে থাকে।

ইসলামী ব্যাংক শিল্পখাত উন্নয়ন লোন পেতে যে সকল ডকুমেন্টের প্রয়োজনঃ

  • জাতীয় পরিচয় পত্র/পাসপোর্ট
  • আবেদনকারীর সদ্য তোলা ছবি
  • ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স
  • ব্যবসার জায়গা দলিল ইত্যাদি প্রয়োজন হতে পারে

ইসলামী ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট

ইসলামী ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট এর ধরন এর উপর ভিত্তি করে ইন্টারেস্ট রেট কম-বেশি বা কত হবে তা নির্ভর করে। সাধারণত ইসলামী ব্যাংকের ইন্টারেস্ট রেট ৮% থেকে ৯% হয়ে থাকে। তারপরও আপনি যদি ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন বা ইনভেসমেন্ট নিতে চান তাহলে আপনার নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংক শাখায় যোগাযোগ করে ইনভেস্টমেন্ট এর বিবরণ, ইন্টারেস্ট রেট সহ আরো বিভিন্ন তথ্য জেনে নিতে পারেন।

ইসলামী ব্যাংক লোন গ্যারান্টার

আপনি কাকে গ্যারান্টার করতে চান সেটা আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। যে কাউকে গ্যারান্টার করতে পারবেন। কিন্তু যাদেরকে আপনি গ্যারান্টার করতে চান তাদের আর্থিক অবস্থা অবশ্যই সচ্ছল থাকতে হবে। ইসলামী ব্যাংক থেকে ইনভেস্টমেন্ট লোন নেওয়ার জন্য দুইজন গ্যারান্টার লাগবে।

ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার শর্তাবলী

যে সকল ব্যক্তিরা সরকারি বা বেসরকারি চাকরি করে তাদের চাকরির বয়স ন্যূনতম ১ বছর হতে হবে বা ১ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অর্থাৎ চাকরির বয়স ১ বছরের কম হলে ইসলামী ব্যাংক লোন আবেদন করতে পারবে না। এবং যে সকল চাকরিজীবীদের বেতন ব্যাংক এর মাধ্যমে পেমেন্ট হয়। তাদের শেষ ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে। যে সকল চাকরিজীবীদের বেতন ক্যাশে দেওয়া হয় তাদের আলাদাভাবে ভেরিফাই করা হবে।


বাড়িওয়ালাদের ক্ষেত্রে বাড়ি ভাড়ার আয়ের প্রমাণপত্র দেখানোর প্রয়োজন হবে। শিক্ষক, ইঞ্জিনিয়ার, আর্কিটেক, ডাক্তারদের ক্ষেত্রে তাদেরকে যেকোনো একটি প্রতিষ্ঠানের সর্বনিম্ন এক বছর কর্মরত থাকতে হবে। অর্থাৎ দুই মাস এক প্রতিষ্ঠানে চাকরি আবার পাঁচ মাস আরেক প্রতিষ্ঠানে চাকরি এমন ব্যক্তিরা এই আবেদনের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। যেকোনো একটি প্রতিষ্ঠানে সর্বনিম্ন এক বছর কর্মরত থাকতে হবে।

ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রেও তাদের ব্যবসার বয়স ন্যূনতম এক বছর হতে হবে। ব্যবসায়ীদের কিছু ডকুমেন্টের প্রয়োজন পড়বে যেমন টিন সার্টিফিকেট, ট্রেড লাইসেন্স ইত্যাদি।

ইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার উপায়

ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সঠিক উপায় বা পদ্ধতি নিচে দেওয়া হয়েছে।

  • আপনার চাহিদা অনুযায়ী প্রথমে আপনাকে লোনের ধরন নির্বাচন করতে হবে।
  • এরপরে আপনার নিকটস্থ অর্থাৎ আপনার বাড়ির কাছে যেই ইসলামী ব্যাংকের শাখা রয়েছে সেখানে যেতে হবে। আপনি যদি আপনার নিকটস্থ শাখা না চিনে থাকেন তাহলে গুগল লোকেশনে সার্চ দিলেই আপনার নিকটস্থ সকল ইসলামী ব্যাংকের লোকেশন জানিয়ে দিবে।
  • ব্যাংকে যাওয়ার সময় আপনার আয়ের প্রমাণপত্র বা স্যালারির স্টেটমেন্ট এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গ নিয়ে যেতে হবে।
  • তারপরে ব্যাংক ব্রাঞ্চে যেয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে লোন সম্পর্কে আলাপ আলোচনা করতে হবে।
  • তারপর পরবর্তী ধাপগুলো আপনাকে ব্যাংক কর্ম করতে জানিয়ে দিবেন।

ইসলামী ব্যাংক কত টাকা লোন প্রদান করে

আপনার ইনকামের উপর ভিত্তি করে ইসলামী ব্যাংক লোন প্রদান করে থাকে। যদি আপনার মাসিক ইনকাম ৫০ হাজারের উর্ধ্বে হয় সে ক্ষেত্রে আপনি ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন। একইভাবে যদি আপনার মাসিক ইনকাম ৫০ হাজার টাকার কম হয় তাহলে ১০ লক্ষ টাকার কম লোন আপনাকে নিতে হবে।

ইসলামী ব্যাংক আপনাকে কত টাকা লোন দিবে তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। কারণ এটা নির্ভর করবে আপনার ইনকামের ওপর। আপনার মাসিক ইনকাম যত বেশি হবে আপনি ইসলামী ব্যাংক থেকে তত বেশি লোন নিতে পারবেন।

ইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার যোগ্যতা

যদি আপনি ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার বিশেষ কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে। নিচে ইসলামী ব্যাংক লোন তথা ইনভেসমেন্ট পেতে যে সকল যোগ্যতা প্রয়োজন সেগুলো হলোঃ

  • ইসলামী ব্যাংক লোন আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ১৮ বছরের উপরে হতে হবে।
  • যে ব্যাক্তি ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান তার অবশ্যই ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে।
  • যেকোনো একটি কাজে অথবা একটি প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত থাকতে হবে।
  • লোন আবেদনকারীর সকল জমাকৃত ডকুমেন্টের ওপর স্বাক্ষর বা সত্যায়িত করে দিতে হবে।
  • লোন আবেদনকারীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন, জাতীয় পরিচয় পত্র, চাকরি কিংবা ব্যবসায়িক সনদ, শিক্ষা সনদ, সম্পত্তির দলিল সহ আরো বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট।

ইসলামী ব্যাংক লোন পরিশোধের নিয়ম

ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার পরে লোন পরিশোধ করার নিয়ম হলো, আপনারা চাইলে একসঙ্গে ইসলামী ব্যাংকের লোন পরিশোধ করতে পারবেন। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে যে আপনি কোন ধরনের লোন নিচ্ছেন ও কত টাকা লোন নিচ্ছেন তার উপর। ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার আগে লোনের খাতের ধরন নির্ধারণ করে লোন পরিশোধ করার নিয়ম সম্পর্কে আপনি ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ করে যেনে নিতে পারবেন।

ইসলামী ব্যাংক লোন সুবিধা

ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। তাই দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। নিচে ইসলামী ব্যাংক লোনের কিছু সুবিধা তুলে ধরা হলো।

  • লোন আবেদন করার কয়েক দিনের মধ্যেই আপনি লোন নিতে পারবেন।
  • এছাড়াও বিভিন্ন খাতে আপনি চাইলে আলাদাভাবে লোন নিতে পারবেন।
  • আপনি চাইলে বড় এমাউন্টের টাকাও এখান থেকে লোন নিতে পারবেন।
  • লোনের টাকা পরিশোধ করতে রয়েছে দারুণ সব সুযোগ সুবিধা।
  • মাত্র ৭% আরে ইন্টারেস্ট রেট দেবার সুযোগ রয়েছে।
  • লোনের ধরন অনুযায়ী ডকুমেন্ট জমা দিয়ে লোন নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

উপরোক্ত সুবিধা গুলো ছাড়াও ইসলামী ব্যাংক লোন তথা ইনভেসমেন্টে রয়েছে আরও বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা।

লেখকের মতামত

প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ইসলামী ব্যাংক ইনভেসমেন্ট (লোন) সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেছে। আশা করি এই ব্যাংকের লোন সম্পর্কিত সকল তথ্য বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। ইসলামী ব্যাংকের ঋণ বিষয়ক যদি আরো কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। আমরা আমাদের এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ব্যাংকিং সেবা নিয়ে আর্টিকেল শেয়ার করে থাকি। এমনি সব ব্যাংকিং সেবামূলক পোস্ট পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজি মাল্টিপ্লাই এর পোস্টে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url