ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন আবেদন ও বিভিন্ন ধরনের লোন পদ্ধতি
ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম - কাগজপত্র, কত টাকা লাগেডাচ বাংলা ব্যাংক লোন আবেদন কিভাবে করতে হয় এবং কোন কোন খাতে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লোন আবেদন করা যায় সহ ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নের উত্তর নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের এই আর্টিকেল।
আপনি যদি ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন আবেদন নিয়ে চিন্তা করেন এবং এই ব্যাংক থেকে কোন ধরনের লোনটি গ্রহণ করবেন তা নিয়ে চিন্তা করেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ এই আর্টিকল দ্বারা আপনি বুঝতে পারবেন আপনার জন্য ডাচ-বাংলা ব্যাংকের কোন ধরনের লোনটি গ্রহণ করলে আপনার জন্য সুবিধা হবে। এই ব্যাংকের কোন লোনের ক্রাইটেরিয়া কেমন তাই এই ব্যাংকের লোনের ধরন গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পোস্টটি সম্পন্ন পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্র
- ভূমিকা
- ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন
- ডাচ বাংলা ব্যাংক ব্যবসায়িক লোন
- ডাচ বাংলা ব্যাংক শিক্ষা লোন
- ডাচ বাংলা ব্যাংক কৃষি লোন
- ডাচ বাংলা ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন
- ডাচ বাংলা ব্যাংক হোম লোন
- ডাচ বাংলা ব্যাংক প্রবাসী লোন
- ডাচ বাংলা ব্যাংক স্যালারি লোন
- ডাচ বাংলা ব্যাংক পার্সোনাল লোন
- ডাচ বাংলা ব্যাংক কার লোন
- ডচ বাংলা ব্যাংক লোন কারা পাবেন
- ডাচ বাংলা ব্যাংক লোনের শর্ত
- ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পরিশোধের নিয়ম
- ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন আবেদন
- লেখকের মতামত
ভূমিকা
ডাচ বাংলা ব্যাংক বিভিন্ন খাতে লোন প্রদান করে এবং ডাচ বাংলা ব্যাংকের লোন আবেদন প্রক্রিয়াও অন্যান্য ব্যাংকের থেকে তুলনামূলক সহজ হয়। আজকে আমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে ডাচ-বাংলা ব্যাংক কত ধরনের লোন প্রদান করে, তাদের লোনের সুদের হার, পরিশোধের সময়সীমা ও শর্তাবলী সহ ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আলোচনা করব। তাই এই সকল বিষয়গুলো জানতে পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন
বাংলাদেশের বেসরকারি বাণিজ্যক ব্যাংকগুলোর মধ্যে ডাচ বাংলা ব্যাংক অন্যতম। এবং বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেবা গ্রহণকারী মানুষের কাছে এই ব্যাংকের জনপ্রিয়তা বর্তমানে অনেক। এই ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের বা বিভিন্ন খাতে লোন প্রদান করে থাকে গ্রাহকদের সুবিধার্থে। যেমন, ব্যবসায়িক লোন, হোম লোন, প্রবাসী লোন, শিক্ষা লোন, কার লোন, স্যালারি লোন, পার্সোনাল লোন, কৃষি লোন ইত্যাদি ধরনের লোন প্রদান করে থাকে।
এবং ডাচ-বাংলা ব্যাংক সহজ শর্তে অল্প সুদে গ্রাহকদের লোন প্রদান করে থাকে। এই ব্যাংক থেকে সকল শ্রেণীর মানুষ তাদের বৈধ কাগজপত্র দেখিয়ে লোন গ্রহণ করতে পারে। ডাচ বাংলা ব্যাংক বিভিন্ন খাতে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা পর্যন্ত লোন দিয়ে থাকে।
ডাচ বাংলা ব্যাংক ব্যবসায়িক লোন
আপনি কি ব্যবসা করতে চান? আপনি কি নতুন উদ্যোক্তা হতে চান? আপনি কি ব্যবসায় লক খেয়ে টাকার অভাবে ব্যবসার বিনিয়োগ করতে পারছেন না? সমস্যা নাই এই সকল সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এসেছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক ব্যবসায়িক লোক। ডাচ বাংলা ব্যাংক ব্যবসায়িক লোনে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন প্রদানের সেবা দিচ্ছে।
কিন্তু এই লোন পেতে হলে আপনার কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে এবং কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের দরকার হবে। তাহলে চলুন নিচে থেকে জেনে নিন এই লোন কারা পাবে, এই লোন পেতে কি কি প্রয়োজন, লোনের পরিমাণ, সুদের হার ও পরিশোধের সময়সীমা সম্পর্কে বিস্তারিত।
যারা আবেদন করতে পারবেনঃ
অবশ্যই আপনার একটি ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে। এবং এই লোন পেতে নিচের দেওয়া যোগ্যতা গুলো আপনার থাকতে হবে।
- অবশ্যই ডাচ বাংলা ব্যাংক এর গ্রাহক হতে হবে।
- আবেদনকারীর বয়স ১৮ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।
- যে কোন পেশার মানুষ এই লোনের জন্য আবেদন করতে পারবে।
- আবেদনকারীর মাসিক আয় সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা হতে হবে।
যে সকল ডকুমেন্ট প্রয়োজনঃ
- জাতীয় পরিচয় পত্র কিংবা পাসপোর্ট
- সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- এক বছরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে আইডি কার্ড এবং বেতন হিসাবের বিবরণ
- ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে বিজনেস কার্ড এবং ট্রেড লাইসেন্স
- ট্যাক্স সার্টিফিকেট
- টি এন্ড টি
- ইউটিলিটি বিলের কপি
লোনের পরিমাণ, সুদ ও মেয়াদঃ
- লোনের পরিমাণঃ ৫০ হাজার টাকা থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
- সুদের হারঃ নতুনদের জন্য ৮% এবং অন্য ব্যাংক থেকে টেক ওভারদের জন্য ৭.৫%
- মেয়াদঃ এক বছর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত।
- প্রসেসিং ফিঃ নতুনদের জন্য ১% এবং অন্য ব্যাংক থেকে টেক ওভারদের জন্য ০%
ডাচ বাংলা ব্যাংক শিক্ষা লোন
বর্তমান সময়ে স্কুল, কলেজের বেতনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন জায়গায় প্রাইভেট, কোচিংয়েও অনেক অর্থ ব্যয় হয়। সেজন্য ডাচ বাংলা ব্যাংক স্টুডেন্টদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে শিক্ষা লোন বা স্টুডেন্ট লোন প্রদান করছে। আপনি যদি স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে খুব সহজেই এই লোন গ্রহন করতে পারবেন।
তাহলে চলুন নিচে থেকে জেনে নিন শিক্ষা লোন বা স্টুডেন্ট লোন পেতে কি কি লাগে, কত টাকা দেয়, এই লনের সুদের হার কত এবং মেয়াদ সীমা কত সম্পর্কে বিস্তারিত।
যারা আবেদন করতে পারবেনঃ
- বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে
- অবশ্যই স্টুডেন্ট হতে হবে
যে সকল ডকুমেন্ট প্রয়োজনঃ
- জাতীয় পরিচয় পত্র
- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- পূর্বের ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- অভিভাবকদের বেতন স্লিপ (চাকরিজীবী হলে)
- ট্রেড লাইসেন্স (ব্যবসায়ী হলে)
- TIN সার্টিফিকেট এর কপি
লোনের পরিমাণ, সুদ ও মেয়াদঃ
- লোনের পরিমাণঃ ৫০ হাজার টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
- সুদের হারঃ নতুনদের জন্য ৮% এবং অন্য ব্যাংক থেকে টেক ওভারদের জন্য ৭.৫%
- মেয়াদঃ ১ বছর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত।
- প্রসেসিং ফিঃ নতুনদের জন্য ১% এবং অন্য ব্যাংক থেকে টেক ওভারদের জন্য ০%
ডাচ বাংলা ব্যাংক কৃষি লোন
আপনার কৃষিকাজ উন্নত করার জন্য আপনি খুব সহজেই ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন। তবে ডাচ বাংলা ব্যাংক কৃষি লোন ৫০০০০ থেকে শুরু করে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আপনি লোন গ্রহণ করতে পারবেন। তবে আপনাকে অবশ্যই এই লোনের মেয়াদ সীমা এক বছর থেকে তিন বছরের মধ্যেই পরিশোধ করে দিতে হবে।
যদি আপনি এই কৃষি লোন সেবাটি নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্ট লোন আবেদন করার জন্য প্রয়োজন হবে। ডাচ বাংলা ব্যাংক কৃষি লোনের সুদের হার ৫% এবং মেয়াদ সীমা ১ বছর থেকে ৩ বছর।
কৃষি লোন নিতে যা যা লাগবেঃ
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি
- ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট
- জমির দলিলের ফটোকপি
- চেয়ারম্যান কর্তৃক স্বাক্ষরিত সনদ
ডাচ বাংলা ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন
কারো যদি পড়াশোনা করার জন্য অধিক পরিমাণে অর্থের প্রয়োজন হয় তাহলে সে ডাচ বাংলা ব্যাংক স্টুডেন্ট লোন সেবাটি নিয়ে তার পড়াশোনা চালিয়ে নিতে পারবে। স্টুডেন্ট লোন ৫০০০০ থেকে শুরু করে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন গ্রহণ করতে পারবে। এই স্টুডেন্ট লোনের সুদের হার ৪% এবং মেয়াদ সীমার সর্বোচ্চ পাঁচ বছর। যদি কেউ এই লোন সেবাটি নিতে চায় তাহলে মেয়াদ সীমা অনুযায়ী লোনটি পরিশোধ করে দিতে হবে।
স্টুডেন্ট লোন নিতে যা যা লাগবেঃ
- লোন আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি
- পাসপোর্ট সাইজের ৪ কপি রঙিন ছবি
- চাকরিজীবীদের জন্য বেতন স্কেল
- চেয়ারম্যান কর্তৃক ও স্বাক্ষরিত সনদ
- অভিভাবকের ট্রেড লাইসেন্স
- এবং ব্যক্তিগত ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
ডাচ বাংলা ব্যাংক হোম লোন
আপনি ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে বাড়ি নির্মাণের জন্য বড় অংকের একটি লোন গ্রহণ করতে পারবেন। এই হোম লোনের ক্ষেত্রে আপনি সর্বোচ্চ দুই কোটি টাকা পর্যন্ত পাবেন। এতে করে আপনার বাড়ি নির্মাণের প্রাথমিক খরচ অনেকটাই লাঘব হবে।
যারা আবেদন করতে পারবেনঃ
যদি আপনি ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে বাড়ি নির্মাণের জন্য লোন নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। এবং নিচে উল্লেখিত যোগ্যতাগুলো আপনার মধ্যে থাকতে হবে।
- বাড়ির মালিক
- সর্বনিম্ন মাসিক ইনকাম ৩০ হাজার টাকা
- যেকোনো পেশাজিবী
- সর্বনিম্ন বয়স ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ৬৫ বছর
লোনের পরিমাণ সুদ ও মেয়াদঃ
ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে হোম লোন এর ক্ষেত্রে সবথেকে বড় সুবিধা হলো আপনি ২৫ বছর পর্যন্ত লোন পরিশোধ করার সময় পাবেন। বিস্তারিত নিচে ছকে দেওয়া হলো
- সর্বনিম্ন লোনের পরিমাণঃ ২ লাখ
- সর্বোচ্চ লোনের পরিমাণঃ ২ কোটি
- নতুন লোনের ক্ষেত্রে সুদের হারঃ ৭.৫০%
- অন্য ব্যাংক থেকে টেক- ওভার সুদের হারঃ ৭.%
- নতুন লোনের ক্ষেত্রে প্রসেসিং ফিঃ ১%
- অন্য ব্যাংক থেকে টেক- ওভার প্রসেসিং ফিঃ নেই
- মেয়াদঃ ১ বছর থেকে ২৫ বছর
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টঃ
আপনার উপযুক্ত কাগজপত্র অথবা ডকুমেন্ট ছাড়া আপনি কখনোই বড় অংকের লোন নিতে পারবেন না। এজন্য ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে হোম লোন নিতে হলে প্রয়োজনীয় কি কি কাগজপত্র লাগবে তার নিচে দেওয়া হলো
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- আবেদনকারী সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- ইউটিলিটি বিল অর্থাৎ বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস বিলের কপি
- ট্যাক্স সার্টিফিকেট
- বিগত ১ বছরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- চাকুরীজীবীদের ক্ষেত্রে এপয়েন্টমেন্ট লেটার
- ব্যবসায়ী ও চাকুরীজীবীদের ক্ষেত্রে বিজনেস কার্ড অথবা অফিস আইডি কার্ড
জমি সংক্রান্ত ডকুমেন্টঃ
- মুল দলিলের ফটোকপি
- আরএস এসএ ডিসিআর সিএস মিউটেশন ও গণিত পর্চা দলিল
- যিনি জমির মালিক ও যিনি ক্রেতা তাদের চুক্তিপত্র দলিলের ফটোকপি
- মৌজা ম্যাপ এবং বিয়া চুক্তির ফটোকপি
- খতিয়ান এসি ল্যান্ড দ্বারা মিউটেশন সঠিকভাবে প্রত্যায়ন
- যদি আজমালি জমি হয় তাহলে তার নিবন্ধিত পার্টিশন দলিল প্রয়োজন
ডাচ বাংলা ব্যাংক প্রবাসী লোন
অনেক সময় প্রবাসী থেকেও টাকার প্রয়োজন পড়ে। এজন্য ডাচ বাংলা ব্যাংক কৃতপক্ষে প্রবাসী লোন নামক একটি লোন সেবা চালু করেছে। যাতে করে প্রবাসী ব্যক্তিরা দেশের বাবা-মা, ভাই বোন এবং আত্মীয়-স্বজনদের গ্যারান্টি হিসেবে রেখে এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র দেখিয়ে এই নন্টি নিতে পারবে।
প্রবাসী লোন এর জন্য যা যা লাগবেঃ
- ১৮ বছর বয়স হতে হবে
- বিআই টিএম স্মার্ট কার্ড
- পাসপোর্ট এর ফটোকপি
- আবেদনকারী কোন দেশে বসবাস করে সেই দেশের ভিসা
- কর্মরত একটা রশিদ
- বিমানের টিকিটের ফটোকপি
- বৈধ রেমিটেন্স এর প্রমাণ
লোন নেওয়ার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ
ডাচ বাংলা ব্যাংকের যেকোনো ধরনের লোন সেবা নিতে হলে তাদের কিছু রিকোয়ারমেন্ট আছে। যদি আপনি সেই রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র জমা দিতে পারেন তাহলে আপনি লোন নেওয়ার জন্য যোগ্য হবেন।
তাই ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার আগে আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র গুলো আপনার সাথে রাখতে হবে।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- জমির দলিল
- ট্যাক্স এর ফটোকপি
- বাড়ির বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি
- নিবন্ধন আইডি কার্ডের কপি
- প্রবাসে থাকলে ভিসার ফটোগ্রাফি
- চাকরিরত অবস্থায় থাকলে চাকরির কাগজ
- চেয়ারম্যান কর্তৃক স্বাক্ষরিত সনদ
ডাচ বাংলা ব্যাংক স্যালারি লোন
ডাচ বাংলা ব্যাংক সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত স্যালারি লোন দিয়ে থাকে। এজন্য লোনের আবেদনকারীকে অবশ্যই ১৮ বছর থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে। এবং অবশ্যই তার একটি ড্যান্স বাংলা ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে।
যারা আবেদন করতে পারবেনঃ
- বয়স সীমা ১৮ থেকে ৬৫ বছর
- বিভিন্ন পেশার মানুষ
লোনের পরিমাণ সুদ ও মেয়াদঃ
ডাচ - বাংলা ব্যাংক স্যালারি লোনের ক্ষেত্রে লোনের পরিমাণ সুদ ও মেয়াদ সীমা নিজের ছকে দেওয়া হলো।
- সর্বনিম্ন লোন এর পরিমাণঃ ১০ হাজার
- সর্বোচ্চ লোনের পরিমাণঃ ২০ লক্ষ
- নতুন লোনের ক্ষেত্রে সুদের হারঃ ৯ %
- অন্য ব্যাংক থেকে টেক- ওভার সুদের হারঃ ৮.৫ %
- নতুন লোনের ক্ষেত্রে প্রসেসিং ফিঃ ১%
- কোন ব্যাংক থেকে টেক -ওফার প্রসেসিং ফিঃ নাই
- মেয়াদঃ ৫ বছর
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টঃ
আপনি খুব সহজেই ডাচবাংলা ব্যাংক থেকে নিচে উল্লেখিত ডকুমেন্ট দিয়ে লোন পেতে পারেন।
- ভোটার আইডি কার্ড বা পাসপোর্টের ফটোকপি
- পাসপোর্ট সাইজের ২ কপি রঙিন ছবি
- পেশা অথবা আয়ের প্রমাণপত্র
- চাকুরীজীবীদের ক্ষেত্রে অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার অথবা বেতন স্লিপ
- কমপক্ষে ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
ডাচ বাংলা ব্যাংক পার্সোনাল লোন
যেকোনো ব্যক্তি তার নিজ প্রয়োজনে ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন সেবাটি নিতে পারবে। তবে আপনাকে অবশ্যই স্বনির্ভর হতে হবে। এবং এখান থেকে আপনি সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন। আপনি খুব সহজেই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের ভিত্তিতে ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন পাবেন। এবং আপনাকে এই লোন মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে।
যারা আবেদন করতে পারবেনঃ
ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই নিচে উল্লেখিত যে কোন শ্রেণীর মানুষ হতে হবে। নতুবা আপনি এই লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
- যে কোন পেশার মানুষ
- বেতনভোগী ব্যক্তি
- যেকোনো ধরনের ব্যবসায়ী
- বাড়িওয়ালা
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টঃ
ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই স্বনির্ভর একজন ব্যক্তি হতে হবে। এবং আপনার মাসি কিন্তু আমি ২০ হাজার টাকারও বেশি হতে হবে। এছাড়াও যে সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো লাগবে তা হলো।
- ভোটার আইডি কার্ডের কপি
- পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি
- ড্রাইভিং লাইসেন্স (ড্রাইভারদের ক্ষেত্রে)
- বিজনেস কার্ড (ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে)
- ইউটিলিটি বিলের কপি
- ট্যাক্স সার্টিফিকেট
- সবশেষে ১ বছরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
লোনের পরিমাণ সুদ এবং মেয়াদঃ
ডাচ বাংলা ব্যাংক পার্সোনাল লোন এর ক্ষেত্রে লোনের পরিমাণ সুদ ও মেয়াদ সম্পর্কে বিস্তারিত ছকে দেখুন।
- সর্বনিম্ন লোন এর পরিমাণঃ ৫০ হাজার
- সর্বোচ্চ লনের পরিমাণঃ ২ লক্ষ
- নতুন লোনের ক্ষেত্রে সুদের হারঃ ৮%
- অন্য ব্যাংক থেকে টেক-ওভার সুদের হারঃ ৭.৫০%
- নতুন লোনের ক্ষেত্রে প্রসেসিং ফিঃ ০.৫ ১%
- অন্য ব্যাংক থেকে টেক-ওভার প্রসেসিং ফিঃ নেই
- মেয়াদঃ ১ বছর থেকে ৫ বছর
ডাচ বাংলা ব্যাংক কার লোন
নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে গাড়ি একটি যা কেনার চাহিদাও এখন অনেক বেশি। তবে হুট করে গাড়িকে নাও কিন্তু চাট্টেখানি কথা নয়। তবে চিন্তার কোনই কারণ নেই আপনি আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ডাচ বাংলা ব্যাংকে দেখিয়ে তাদের কার লোন সেবাটি খুব সহজে নিতে পারবেন।
যারা আবেদন করতে পারবেনঃ
অন্যান্য লোনের মত গাড়ি কেনার জন্য ব্যাংক অবশ্যই আপনার আয়ের উৎস দেখতে চাইবে। যদি আপনি উপযুক্ত প্রমাণ দিতে পারেন তাহলে আপনি সর্বোচ্চ ৪০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন পেতে পারেন।
- সর্বনিম্ন মাসিক ইনকাম ৩০ হাজার টাকা
- যেকোনো পেশার মানুষ
- বয়স সীমা ১৮ থেকে গ্রাহকের অবসরকাল পর্যন্ত
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টঃ
- এনআইডি কার্ডের কপি
- পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি
- আপনার ব্যবসা বা চাকরির প্রমাণপত্র
- কমপক্ষে ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- ব্যক্তিগত গ্যারান্টি প্রদান
- ৫ লক্ষের অধিক লোনের ক্ষেত্রে টি এন্ড টি
লোনের পরিমাণ সুদ ও মেয়াদঃ
ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে আপনি পাঁচ বছরের মেয়াদী এবং ৮% সুদে গাড়ি কিনতে পারেন। এবং এই টাকা আপনাকে মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে বিস্তারিত নিচের ছকে দেখুন।
- সর্বনিম্ন লনের পরিমাণঃ ৫০ হাজার
- সর্বোচ্চ লোনের পরিমাণঃ ৪০ লাখ
- নতুন লোনের ক্ষেত্রে সুদের হারঃ ৮%
- অন্য ব্যাংক থেকে টেক-ওভার সুদের হারঃ ৭.৫%
- নতুন লোনের ক্ষেত্রে প্রসেসিং ফিঃ ১ %
- অন্য ব্যাংক থেকে টেক-ওভার প্রসেসিং ফিঃ নেই
- মেয়াদঃ ১ বছর থেকে ৫ বছর
ডচ বাংলা ব্যাংক লোন কারা পাবেন
ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন সকলে নিতে পারবে না। এই ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে হলে আবেদনকারীর ডাচ বাংলা ব্যাংক নির্দেশিত নির্দিষ্ট কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে। যে সকল ব্যক্তিরা এই ব্যাংকের ক্রাইটেরিয়া গুলো পূরণ করতে পারবে সেই সকল ব্যক্তিরাই কেবল ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে পারবে। ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার যোগ্যতা বা এই ব্যাংকের লোন কারা পাবে তা নিচে উল্লেখ করা হলো।
- যেকোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে, আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানে কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত থাকতে হবে। অর্থাৎ উক্ত প্রতিষ্ঠানে বেতনভুক্ত কর্মচারী হতে হবে।
- যে সকল ব্যক্তিরা পেশাদার প্রকৌশল, ডাক্তার, স্থপতি ইত্যাদি পেশায় নিয়োজিত আছেন। তারা ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে পারবেন।
- যে সকল ব্যক্তিদের আয়ের উৎস দোকান, ভাড়া বাসা ভাড়া ইত্যাদির মাধ্যমে মাসে নির্দিষ্ট অংকের টাকা আয় করেন। সেই সকল ব্যক্তিগণ এই ব্যাংকের লোন সেবা গ্রহণ করতে পারবে।
- যারা ব্যবসায়ী রয়েছেন তারা ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে পারবেন। কিন্তু তার জন্য আপনার ব্যবসার অভিজ্ঞতা ন্যূনতম তিন বছর হতে হবে।
ডাচ বাংলা ব্যাংক লোনের শর্ত
বাংলাদেশের যেকোনো ব্যাংক থেকে লোন গ্রহনের জন্য আপনাকে আপনার কর্মসংস্থান অথবা চাকরির রিকোয়ারমেন্ট দিতে হবে ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণের সময় যে সব বিষয়ে উপর রিকোয়ারমেন্ট দেওয়া যায় সেগুলো হলো বাসা ভাড়া চাকরি ডাক্তার প্রকৌশলী ও সব ধরনের বৈধ ব্যবসা তাছাড়া ব্যাংক থেকে লোন গ্রহনের সময় কিছু কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। যেসব কাগজপত্র আপনাকে জমা দিতে হবে সেগুলো হলো।
- এনআইডি কার্ডের ফটোকপি
- আপনার সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি রঙিন ছবি
- ব্যবসা অথবা চাকরির প্রমাণপত্র
- লিখিতভাবে পার্সোনাল গ্যারান্টি প্রদান
- কমপক্ষে ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- যদি আপনি ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনার বয়স ১৮ থেকে সর্বোচ্চ অবসরকাল পর্যন্ত বয়স সীমা হতে হবে।
ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পরিশোধের নিয়ম
আপনি ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করার পর, আপনাকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এই লোন পরিশোধের জন্য নির্দিষ্ট সময় সীমা বেঁধে দেওয়া হবে। এই নির্দিষ্ট সময়ের ভেতরেই আপনাকে সুদসহ এই লোনের মূল্য পরিশোধ করতে হবে। আপনি কয়েকটি উপায়ে ব্যাংকের লোন পরিশোধ করতে পারেন। নিচে লোন পরিশোধের উপায়গুলো দেওয়া হল।
- ডাচ বাংলা ব্যাংক এর চেক কিংবা ড্রাফট পাঠিয়ে।
- সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে নগদ টাকা জমা দিয়ে।
- ডাচ বাংলা ব্যাংক এর মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করে।
- ডাচ-বাংলা ব্যাংক এর অনলাইন ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করে।
- ডাচ বাংলা ব্যাংক এর লোন পরিশোধের কার্ড ব্যবহার করে।
তবে একটা বিষয় মাথায় রাখবেন, আপনি যদি ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে লোনকৃত অর্থ নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পরিশোধ করতে না পারেন তাহলে আপনাকে এক্সটা জরিমানা দিতে হবে। কত টাকা জরিমানা দিতে হবে সেটি আপনার লোনের সুদের হারের উপর নির্ভর করবে।
ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন আবেদন
ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন আবেদন পদ্ধতি/উপায়/প্রক্রিয়া সম্পর্কে অনেকেই অবগত নয়। তাই এই ব্যাংকের লোন আবেদনের সম্পর্কে অনেকেরই মনেই প্রশ্ন আসে যে এই ব্যাংকে কিভাবে লোন আবেদন করে, কোন কোন উপায়ে বা পদ্ধতিতে এই ব্যাংকের লোন আবেদন করা যায়। কারণ তাদের এই বিষয়ে সঠিক ধারণা নাই।
আজ আমরা সেই সকল ব্যক্তিদের সুবিধার্থে এই ব্যাংকে লোন আবেদন করতে কি কি ধাপ অনুসরণ করতে হয় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাহলে চলুন নিচে থেকে জেনে নেওয়া যাক ডাচ বাংলা ব্যাংক লোনের পদ্ধতি গুলো।
অনলাইনে আবেদনঃ ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন পাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারেন। তার জন্য আপনাকে ডাচ বাংলা ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে। তারপর অনলাইন আবেদন ফরম অপশনে গিয়ে ফরমে চাওয়া সকল তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। এবং তার সাথে ডাচ বাংলা ব্যাংক কর্তৃপক্ষের শর্ত অনুযায়ী আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট দিয়ে সাবমিট করতে হবে।
ব্যাংকে আবেদনঃ আপনি সরাসরি ডাচ বাংলা ব্যাংকের শাখায় গিয়ে আবেদন করতে পারবেন। তার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম আপনার নিকটস্থ ডাচ বাংলা ব্যাংকের যে কোন শাখায় যান। তারপর ব্যাংকের কর্মচারীদের সাথে কথা বলে আবেদন করতে করুন।
লেখকের মতামত
প্রিয় পাঠক বৃন্দ আজকের এই আর্টিকেলের বিষয়বস্তু ছিল ডাচ বাংলা ব্যাংক লোনের ধরন গুলো বিশ্লেষণ এবং এই ব্যাংকের লোন আবেদন নিয়ে। আশা করি আমাদের এই পোস্টটি আপনি সম্পূর্ণ পড়েছেন এবং ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছি। ডাচ বাংলা ব্যাংক লোন সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন থেকে থাকলে নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ডিজি মাল্টিপ্লাই এর পোস্টে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url