সিটি ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় ও পদ্ধতি গুলো কি কি

ডাচ বাংলা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম - কাগজপত্র, কত টাকা লাগেসিটি ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়, সিটি ব্যাংক পার্সোনাল লোন, হোম লোন, বাইক লোন, অটো লোন সহ প্রবাসী লোন এছাড়াও সিটি ব্যাংক অনলাইন লোন নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের এই আর্টিকেল।
সিটি ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়
আপনারা যারা সিটি ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান এবং এর উপায় ও পদ্ধতি গুলো জানতে চান। তাদেরকে আজকের এই আর্টিকেলে স্বাগতম। আমরা এই পোস্টে সিটি ব্যাংক থেকে লোন পেতে কি কি যোগ্যতা প্রয়োজন এই ব্যাংকের লোনের সুদের হার সহ বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাই এই সকল বিষয়গুলো জানতে পোষ্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচীপত্র

ভূমিকা

সিটি ব্যাংক থেকে কোন কোন ধরনের লোন পাওয়া যায় এবং সেই লোনগুলো পাওয়ার পদ্ধতি গুলো নিয়ে আমরা এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাই আপনি যদি সিটি ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে চান তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন। তাহলে আপনার জন্য কোন ধরনের লোন করলে সুবিধা হবে তা জানতে পারবেন এবং তার সাথে কোন ধরনের লোনে কি যোগ্যতা এবং কি কি শর্ত তা জানতে পারবেন।

সিটি ব্যাংক থেকে কত ধরনের লোন পাওয়া যায়

সিটি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানার আগে আমাদেরকে অবশ্যই সিটি ব্যাংক কত ধরনের লোন প্রদান করে এই বিষয়ে আগে জানা জরুরী। কারণ লোনের ধরন অনুযায়ী আপনার জন্য কোন লোনটি প্রয়োজন এটা আপনাকে নির্বাচন করতে হবে। এছাড়া সিটি ব্যাংকের লোনের ধরনের অনুযায়ী এর সুযোগ সুবিধা ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের কত ধরনের লোন দিয়ে থাকে সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।

  • পার্সোনাল লোন
  • হোম লোন
  • বাইক লোন
  • অটো লোন
  • প্রবাসী লোন

সিটি ব্যাংক মূলত এই কয়েক ধরনের লোন গ্রাহকদের প্রদান করে থাকে। উপরের উল্লেখিত লোন ধরন গুলোতে লোন আবেদনকারীরা তাদের সকল তথ্য সঠিক দিয়ে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী লোন আবেদন করতে পারবে। তবে লোনের সুযোগ-সুবিধাগুলো ভোগ করতে চাইলে অবশ্যই সিটি ব্যাংক কতৃক কিছু শর্তাদী এবং নিয়ম পালন করতে হবে।

সিটি ব্যাংক পার্সোনাল লোন পাওয়ার পদ্ধতি

সিটি ব্যাংক পার্সোনাল লোন নেওয়ার উপায় জানতে চাই এমন লোকের সংখ্যা অনেক বেশি। তাই আমাদের পোস্টের এই অংশে আমরা সিটি ব্যাংক পার্সোনাল লোন নিয়ে আলোচনা করব। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, চিকিৎসা ইত্যাদি প্রয়োজনে লোন গ্রহণ পার্সোনাল লোনের আওতায় অন্তর্ভুক্ত হয়। সিটি ব্যাংক থেকে আপনি ব্যক্তিগত যে কোন ধরনের সমস্যায় পার্সোনাল লোনের জন্য আবেদন করতে পারেন।
এই ব্যাংক স্বরব ৫ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবে। এবং এই লোন পরিষদের সময়সীমা ১২ থেকে ৬০ মাস পর্যন্ত হয়। সিটি ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নেওয়ার কিছু শর্ত ও যোগ্যতার প্রয়োজন রয়েছে। নিচে সেই যোগ্যতাগুলো তুলে ধরা হলো।

  • ২২ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে আবেদনকারীর বয়স।
  • বেতনভুক্ত কর্মচারীদের ছয় মাসের বেতনের ব্যাংক স্টেটমেন্ট লাগবে।
  • জাতীয় পরিচয় পত্র/ড্রাইভিং লাইসেন্স লাগবে।
  • সদ্য তোলা ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি লাগবে।
  • অফিস আইডি কার্ড/ব্যবসায়ী কার্ড এর ফটোকপি লাগবে।
  • জামিনদারের জাতীয় পরিচয় পত্র ও পাসপোর্ট সাইজের তিন কপি ছবি লাগবে।

অভিজ্ঞতাঃ

  • চাকরিজীবী হলে চাকরির বয়স সর্বনিম্ন ১ বছর হতে হবে।
  • পেশাজীবী হলে কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
  • ব্যবসায়ী হলে কমপক্ষে তিন বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

মাসিক আয়ঃ

  • চাকরিজীবীদের মাসিক বেতন হতে হবে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা।
  • পেশাজীবীদের মাসিক আয় থাকতে হবে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা।
  • জমির মালিকদের মাসিক আয় থাকতে হবে কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা।
  • ব্যবসায়ীদের মাসিক আয় থাকতে হবে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা।

পার্সোনাল লোনের ফিচারঃ

  • এই লোনে সর্বনিম্ন ১ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন প্রদান করা হয়।
  • এই লোনের পরিশোধের সময়সীমা ১২ থেকে ৬০ মাস পর্যন্ত হয়ে থাকে।
  • এই লোনে কোন ধরনের লুকানো খরচ বা হিডেন চার্জ থাকে না।
  • কম্পিটিটিভ ইন্টারেস্ট রেট।

সিটি ব্যাংক হোম লোন পাওয়ার পদ্ধতি

সিটি ব্যাংক লোন গুলোর মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় লোন হলো হোম লোন। যারা নতুন বাড়ি নির্মাণ করতে চাই বা পুরনো বাড়ি বিনির্মাণ করতে চাই সে সকল ব্যক্তিরা সিটি ব্যাংক থেকে এই হোম লোন গ্রহণ করতে পারেন। সিটি ব্যাংক এই হোম লোনে সর্বনিম্ন ৫ লক্ষ টাকা থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত লোন প্রদান করে থাকে। এবং এই লোন পরিশোধের সময়সীমা ১ বছর থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। সিটি ব্যাংক থেকে হোম লোন নিতে হলে আবেদনকারীর যে সকল যোগ্যতার প্রয়োজন তা নিচে উল্লেখ করা হলো।
  • আবেদনকারীর বয়স ২২ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।
  • যেকোনো ধরনের কাজের ওপর সর্বনিম্ন ৩ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
  • মাসিক আয় থাকতে হবে ৫০ হাজার টাকা বা তারও বেশি।
  • সরকারি চাকরিজীবীদের মাসিক আয় ৩০ হাজার টাকা।
  • বেসরকারি চাকরিজীবীদের ৫০ হাজার টাকা।
  • ব্যবসায়ীদের মাসিক আয় থাকতে হবে ৫০ হাজার টাকা।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ

  • জাতীয় পরিচয় পত্র/লাইসেন্স/পাসপোর্ট এর ফটোকপি।
  • সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ৩ কপি ছবি।
  • জামিনদারের জাতীয় পরিচয় পত্র এবং ছবি

হোম লোনের ফিচারঃ

  • এই লোনে ৫ লক্ষ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত লোন দেওয়া হয়।
  • পরিশোধের সময়সীমা ১ বছর থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত হয়।
  • সম্পত্তির দামের ৭০% পর্যন্ত লোনের সুবিধা রয়েছে।
  • বাংলাদেশী নাগরিক না হওয়া সত্ত্বেও এলোন গ্রহণ করা যাবে।
  • এই লোনে ওভার ড্রাফ্ট সুবিধা রয়েছে।
  • এই লোন আবেদন করার পর খুব দ্রুতই বন্দোবস্ত করা হয়।
  • বাংলাদেশের যে কোন স্থান থেকে এই লোন গ্রহণ করা যায়।
  • কোন হিডেন চার্জ বা লুকানো খরচ থাকে না।

সিটি ব্যাংক বাইক লোন পাওয়ার পদ্ধতি

যদি কোন ব্যক্তি বাইক বা মোটরসাইকেল কেনার জন্য লোন নিতে চাই তাহলে সিটি ব্যাংক এই সুবিধা দিয়ে থাকছে। সিটি ব্যাংক থেকে বাইক লোন স্কিমে আপনি সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন গ্রহণ করতে পারবেন। এবং এই লোন পরিশোধের মেয়াদ সীমা ৬ থেকে ৩৬ মাসের মধ্যে হয়ে থাকে। সিটি ব্যাংক থেকে বাইক লোন পাওয়ার জন্য যে সকল যোগ্যতার প্রয়োজন তার নিচে উল্লেখ করা হলো।
  • ২১ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে বয়স হতে হবে।
  • বেতনভুক্ত কর্মীদের সর্বনিম্ন ১ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
  • ফ্রিল্যান্সার, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীদের কমপক্ষে এক বছর এর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
  • প্রবাসীদের সর্বনিম্ন ৬ মাস প্রবাস চাকরিরত হতে হবে।
  • রাইট শেয়ারিং কাজে নিয়োজিত থাকলে তাদের সেই কাজের অভিজ্ঞতা মিনিমাম ৬ মাস হতে হবে।
  • ব্যবসায়ীদের ১ বছরের ব্যবসার লাভের অংশ এবং বেতনভুক্ত কর্মচারীদের ১ বছরের স্যালারি শীট দেখাতে হবে।
  • ব্যবসায়ীদের মাসিক আয় কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা হতে হবে এবং বেতনভুক্ত কর্মচারী হলে তাদের মাসিক আয় সর্বনিম্ন ১২ হাজার টাকা হতে হবে।

সিটি ব্যাংক বাইক লোন ফিচারঃ

  • এই লোনে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিয়ে থাকে।
  • ৬ থেকে ৩৬ মাস পর্যন্ত লোন পরিশোধের সময়সীমা রয়েছে।
  • বাইকের রেজিস্ট্রেশন ফ্রি সহ মহিলাদের ১০০% লোন সুবিধা এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে ৮০% লোন সুবিধা দিয়ে থাকে সিটি ব্যাংক।
  • এই লনে মহিলাদের স্পেশাল ইন্টারেস্ট সুবিধা ও কোন প্রসেসিং ফি কাটে না।
  • এই লোনে একের অধিক বাইক কেনার সুবিধা রয়েছে।
  • জিরো পার্সেন্ট দ্রুত সেটেলমেন্ট ফি।
  • সিটি ব্যাংক এর এফডিআর এর ওপর ৯০% ঋণ সুবিধা।

সিটি ব্যাংক অটো লোন পাওয়ার পদ্ধতি

সিটি ব্যাংক থেকে অটো লোন সেবাটি ও নিতে পারবেন গ্রাহকগণ। সিটি ব্যাংক সর্বনিম্ন ৩ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত এই অটো লোন প্রদান করে থাকে। এই লোন পরিশোধ করার সময় ১২ মাস থেকে ৭২ মাস পর্যন্ত হয়ে থাকে। সিটি ব্যাংক থেকে অটো লোন পেতে গ্রাহকের কি কি যোগ্যতা থাকতে হবে তা নিচে দেওয়া হলো

  • লোন আবেদনকারীর বয়স কমপক্ষে ২২ বছর থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে
  • ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে এক ব্যবসায় কমপক্ষে দুই বছর পর্যন্ত যুক্ত থাকতে হবে
  • চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে যেকোনো চাকরির কমপক্ষে এক বছর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে
  • লোন আবেদনকারীর মাসিক ইনকাম কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে হবে।
  • প্রতিযোগিতা মূলক ইন্টারেস্ট রেট।
  • ব্যক্তিগত লোন গ্যারান্টি প্রয়োজন নেই।

সিটি ব্যাংক অটো লোনের ফিচারঃ

  • এই লোন ৩ লক্ষ থেকে শুরু করে ৪০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নেওয়া যায়।
  • যানবাহন ক্রয়ের জন্য লোন নেওয়া যায় তবে যানবাহনের মোট দামের ৫০% লোন দিয়ে থাকে।
  • ১০০% লোন প্রদান করে থাকে ক্যাশ সিকিউরিটির বিপরীতে।
  • ১২ মাস থেকে ৭২ মাস পর্যন্ত এই লোন পরিশোধের সময়সীমা থাকে।
  • কোন হিডেন চার্জ বা লুকানো খরচ নেওয়া হয় না।
  • প্রতিযোগিতামূলক সুদের হার

সিটি ব্যাংক প্রবাসী লোন পাওয়ার পদ্ধতি

সিটি ব্যাংকে নানা ধরনের লোন সেবা রয়েছে তার মধ্যে প্রবাসী লোন হলো একটি। সাধারণত সিটি ব্যাংক তাদের প্রবাসী ভাই ও বোনদের কথা ভেবে এই প্রবাসী লোন সেবাটি চালু করেছে। অনেকে এই লোনকে রেমিট্যান্স বলে চেনে। প্রবাসীরা এই লোনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন। তবে সিটি ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন সেবাটি নেওয়ার জন্য লোন আবেদনকারীকে কি কি শর্ত পালন করতে হবে তা হলো।
  • প্রবাসী ভাইয়েরা প্রবাসে থাকাকালীন লোন নিতে পারবে। তবে তার ইনকামের উপর ভিত্তি করে তাকে লোন দেওয়া হবে।
  • তাছাড়াও কৃষি যন্ত্রপাতির মেরামতের বা ক্রয়ের জন্য অথবা গৃহ পড়িত পশু কেনার জন্য এই প্রবাসী লোনটি পাওয়া যায়।
  • সিটি ব্যাংকের যেকোনো শাখায় গিয়ে লোনের জন্য ফরম সংগ্রহ করে তার সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো সিটি ব্যাংকে জমা দিয়ে প্রবাসী লোন পাওয়া সম্ভব।

সিটি ব্যাংক অনলাইন লোন

সিটি ব্যাংক থেকে অনলাইনে মাধ্যম থেকে লোন পেতে আপনাকে সর্বপ্রথম গুগল প্লে স্টোর থেকে "City Touch" অ্যাপটি ডাউনলোড করে ফোনে ইন্সটল করতে হবে। তারপর অ্যাপটি ওপেন করে "Loan Service" লিখাটির ওপর ক্লিক করতে হবে। এরপরে ক্লিক করুন "Apply For Quick Loan" অপশনে। এবার এখানে একাউন্ট সিলেক্ট করতে হবে আপনাকে। আর অ্যাকাউন্ট সিলেক্ট করার জন্য আপনাকে "Select FD Account" অপশনে ক্লিক করে আপনার একাউন্টে সিলেক্ট করে নিতে হবে।

তারপর আপনি এই লোনটি কত মাসের জন্য নিবেন সেটি সিলেক্ট করতে হবে। আর তার জন্য আপনাকে "Select Loan Tenure (Months)" লেখা অপশন এর ভেতর গিয়ে আপনি কত মাসের জন্য লোনটি নিতে চাচ্ছেন সেটি সিলেক্ট করতে হবে। এরপরের ধাপে আপনি কত টাকা লোন চাচ্ছেন সেটার তথ্য দিতে হবে। আর তার জন্য "Select Amount (BDT)" লেখা অপশনের ভেতর গিয়ে আপনি কত টাকা লোন নিবেন তার পরিমাণ লিখতে হবে।

এরপরের ধাপে আপনি কত টাকা মাসিক আয় করেন তার তথ্য দিতে হবে। আর তার জন্য "Monthly Income" লেখা অপশন এর ভিতরে গিয়ে আপনার মাসিক ইনকাম উল্লেখ করুন এবং eTIN নাম্বার টি দিন (যদি থাকে তাহলে)। এখন আপনাকে আপনার নিকটস্থ সিটি ব্যাংক শাখা টি সিলেক্ট করতে হবে। তার জন্য "Select Branch" লেখা অপশনের ভেতর গিয়ে আপনার নিকটস্থ সিটি ব্যাংক শাখাটি সিলেক্ট করুন।
এখন আপনার পেশা সম্পর্কে তথ্য দিতে হবে। আর তার জন্য "Select Profession" অপশনে যাবার পর আপনার পেশা কি সেই তথ্য উল্লেখ করুন এবং আপনার কন্টাক্ট নাম্বার টি দিন। তারপর পরের ধাপে যাবার জন্য "Next" লেখাটির উপর ক্লিক করুন। এরপরে কিছু সময়ের মধ্যে আপনার ফোনে এসএমএস এর মাধ্যমে একটি OTP কোড দেয়া হবে। এরপর OTP কোড টি বসিয়ে দিন এবং "Submit" এ ক্লিক করে দিন।

ব্যাস হয়ে গেল সিটি ব্যাংক অনলাইন লোন আবেদন করা। এখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তিন দিনের ভেতর আপনাকে জানিয়ে দিবে যে আপনার অনলাইন লোনের আবেদনটি মঞ্জুর হয়েছে নাকি বাতিল হয়েছে। আপনার দেওয়া তথ্য গুলো যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই এই লোন পেয়ে যাবেন।

তবে সিটি ব্যাংক অনলাইন লোন পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই আবেদনের পূর্বে City Touch এ রেজিস্ট্রেশন করে রাখতে হবে। আর তার জন্য আপনার নিকটস্থ সিটি ব্যাংক শাখায় গিয়ে সেই শাখার কর্মরত ব্যক্তির সাথে কথা বলে রেজিস্ট্রেশন করে নিবেন। কারণ এই রেজিস্ট্রেশন না করলে আপনি কোন প্রকার অনলাইন লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেনা।

সিটি ব্যাংক বিকাশ লোন

সিটি ব্যাংক সাম্প্রতিক সময়ে বিকাশ লোন নামের একটা লোন সেবা চালু করেছে। যদি আপনি এই বিকাশ লোন সেবাটি নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই একজন বিকাশ গ্রাহক হতে হবে। বিকাশের মাধ্যমে আপনি সিটি ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত লোন গ্রহন করতে পারবেন।

তবে এক্ষেত্রে আপনার বিকাশ একাউন্টটি অবশ্যই অনেক দিনের পুরনো হতে হবে। এবং এর পাশাপাশি আপনার বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনি সিটি ব্যাংক বিকাশ লোন সেবাটি উপভোগ করতে পারবেন।

সিটি ব্যাংক লোন যোগ্যতা

সিটি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য লোন গ্রহণকারীর অবশ্যই কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে। সিটি ব্যাংক গ্রাহকের সাধারণ কোন যোগ্যতার ভিত্তিতে লোন দিয়ে থাকে সে যোগ্যতাগুলো নিচে দেওয়া হল।

  • বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
  • জাতীয় পরিচয় পত্র/পাসপোর্ট থাকতে হবে।
  • ঋণ পরিশোধে সক্ষম হতে হবে।
  • ২২ থেকে ৬০ বছর বয়সের মধ্যে হতে হবে।

অভিজ্ঞতার যোগ্যতাঃ

  • চাকরিজীবীদের জন্য নূন্যতম ১ বছর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
  • ব্যবসায়ীদের জন্য নূন্যতম ৩ বছর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
  • স্বা-নিযুক্ত পেশাজীবীদের জন্য ন্যূনতম .২ বছর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

মাসিক আয়ের যোগ্যতাঃ

  • চাকরিজীবীদের মিনিমাম ২০ হাজার টাকা আয়/ইনকাম থাকতে হবে।
  • ব্যবসায়ীদের মিনিমাম ৫০ হাজার টাকা আয়/ইনকাম থাকতে হবে।
  • স্বা-নিযুক্ত পেশাজীবীদের মিনিমাম ৫০ হাজার টাকা আয়/ইনকাম থাকতে হবে।
  • বাড়িওয়ালাদের মিনিমাম ৩০ হাজার টাকা আয়/ইনকাম থাকতে হবে।

উপরেতে এই যোগ্যতা গুলো ছাড়াও সিটি ব্যাংকের কোন ধরনের লোনটি গ্রাহক নিতে ইচ্ছুক তার উপর ভিত্তি করে গ্রাহকের যোগ্যতার প্রয়োজন হয়।

সিটি ব্যাংক লোনের সুদের হার

সিটি ব্যাংক যেহেতু নানা ধরনের লোন সেবা দিয়ে থাকে এজন্য তাদের সুদের হার ক্ষেত্রেও একটু ভিন্নতা রয়েছে। তবে সিটি ব্যাংক তাদের লোনের ক্ষেত্রে মোটামুটি একটি গড় হিসাব দিয়ে থাকে। সেটা হলো মূলত সিটি ব্যাংক তাদের লোনের ক্ষেত্রে সুদের হার নিয়ে থাকে ৯% থেকে ১২%।
সব সময় সুদের হার পরিবর্তনশীল আমরা উইকিপিডিয়া এবং সিটি ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে এই সকল প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছি। আরেকটি কথা বলে রাখা ভালো সেটি হলো সিটি ব্যাংক কৃতপক্ষে তাদের এই নিয়ম-নীতি যে কোন সময় পরিবর্তন করতে পারে।

এজন্য আপনাদের সকলের কাছে একটা অনুরোধ রইল যদি আপনি লোন গ্রহনের জন্য আবেদন করতে চান সেক্ষেত্রে অবশ্যই আবেদন করার আগে সিটি ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে সম্পূর্ণ বিষয়গুলো আলোচনা করে নিবেন।

সিটি ব্যাংক লোনের বৈশিষ্ট্য সমূহ


  • লোনের পরিমাণ ১ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত।
  • লোন পরিশোধ করার মেয়াদ হলো ১২ মাস থেকে সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত।
  • দ্রুত অনুমোদন প্রক্রিয়া
  • কোন লুকানো চার্জ নেই
  • আকর্ষণীয় সুদের হার এবং ফি
  • প্রচলিত সিডিউল অনুসারে

লেখকের মতামত

প্রিয় পাঠক বৃন্দ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করেছি সিটি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার পদ্ধতি গুলো নিয়ে। আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে এবং জানতে পেরেছেন এই ব্যাংক থেকে কোন ধরনের লোন পেতে কি যোগ্যতা প্রয়োজন, কত টাকা দেয়, পরিশোধের সময়কাল কত, লোন গুলোর ফিচার কি কি সহ আরো অনেক কিছু।

আমরা আমাদের এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকিং সেবামূলক পোস্ট পাবলিশ করি। এমনই সব পোস্ট পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজি মাল্টিপ্লাই এর পোস্টে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url