থাইরয়েড কমানোর কার্যকরী কিছু উপায়
আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতাল ডাক্তার লিস্টথাইরয়েড কমানোর উপায় ও থাইরয়েড নরমাল কত সহ থাইরয়েড বিষয়ক আরো বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের এই আর্টিকেল। আপনারা যারা থাইরয়েড সমস্যায় ভুগছেন এবং থাইরয়েড সম্পর্কিত তথ্য জানতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেল।
আমরা এই আর্টিকেলে থাইরয়েড সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেছি যা আশা করি আপনাদের কাজে আসবে। তাই থাইরয়েড বিষয়ক নানান তথ্য পেতে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্র
ভূমিকা
বর্তমানে থাইরয়েড রোগ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেজন্য থাইরয়েড সমস্যার হাত থেকে রেহাই পেতে আমাদের জানা প্রয়োজন যে থাইরয়েড কি, এটি স্বাভাবিক মাত্রা কত? এ রোগটি হলে কমানোর উপায় গুলো কি? এই রোগটি কি কারনে হয়? ও এই থাইরয়েড রোগের খাবার গুলো কি কি। তাই আমরা এই পোস্টে এই সকল বিষয়গুলো আলোচনা করেছি। বিষয়গুলো জানতে নিচের দেওয়া তথ্যগুলো পড়ুন।
থাইরয়েড কি
থাইরয়েড হল গ্রীবাতে অবস্থিত দুইটি লোব দ্বারা গঠিত একটা অন্তক্ষরা গ্রন্থি। থাইরয়েড হলো প্রজাপতির মতো আকৃতির, সেটা এক ধরনের গ্রন্থি বা ঘাড়ের শ্বাসনালীর সামনে থাকে। এছাড়াও দেহের থাইরয়েডের হরমোনের প্রধান উৎস হল থাইরয়েড গ্রন্থি। থাইরয়েড গ্রন্থি থেকেই মূলত থাইরয়েড হরমোন এর নিঃসৃত হয়ে থাকে। এবং এই হরমোন নিঃসৃত কম অথবা বেশি হয়ে গেলে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য আমাদের জানা খুবই জরুরী যে থাইরয়েড এর নরমাল কত সেই সম্পর্কে।
সাধারণত থাইরয়েড দুই প্রকার
- একটি হলোঃ T3
- আর অন্যটি হলোঃ T4
T3 বলতে ট্রাই আয়োডোথাইরেনিন কে বোঝানো হয়। এবংT4 থাইরনিক্সকে বোঝায়। মানব দেহের রক্তে T3,T4 এর অনুপাত ৩১৪.১থেকে ২০.২ এরমধ্যে।
থাইরয়েড কমানোর উপায়
থাইরয়েড কমানোর জন্য নিচে কিছু উপায় দেওয়া হলো। আপনি চাইলে উপায় গুলো অনুসরণ করতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ ভিটামিন কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি
ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান
ভিটামিন-ডি যুক্ত খাবার থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদন সাহায্য করে। ভিটামিন- ডি সমৃদ্ধ খাবারগুলো হলোঃ
- কমলালেবুর রস
- তিলের বীজ
- ডিমের কুসুম
- দুগ্ধজাত দ্রব্য
সবুজ শাক-সবজি খান
সবুজ শাক-সবজিতে রয়েছে ভিটামিন, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং খনিজ যা থাইরয়েডের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক প্রয়োজনীয়। সবুজ শাকসবজির মধ্যে রয়েছেঃ
- ব্রকলি
- শালগম
- পালং শাক
- বাঁধাকপি
- সিম
- পুইশাক
নিয়মিত রসুন খান
হলো প্রদাহ বিরোধী উপাদান। যা থাইরয়েড হরমোনের উপাদান নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। এজন্য ২ থেকে ৩ কোয়া রসুন প্রতিদিন খাওয়ার চেষ্টা করুন।
আদা চা পান করুন
আদা একটা প্রদাহ বিরোধী উপাদান যা থাইরয়েডের সমস্যা কমাতে পারে। আদা চা বানাতে ১ কাপ ফুটন্ত গরম পানিতে ১ চামচ আদা কুচি দিয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিট রেখে দিন, এরপরে থেকে চা পান করুন।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
থাইরয়েড এর রোগের স্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা খুবই জরুরী। তবে আপনার যদি হাইপারথাইরয়েড এর সমস্যা হয় সেক্ষেত্রে ব্যায়াম করার পূর্বের অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।
পর্যাপ্ত ঘুম নিন
ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে থাইরয়েডের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই প্রতিরাতে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন
প্রক্রিয়াজাত খাবারে নানা ধরনের ক্ষতিকারক উপাদান মেশানো থাকে। যা থাইরয়েডের সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
নিচে কিছু অতিরিক্ত টিপস দেওয়া হল সেগুলো আপনাকে থাইরয়েড কমাতে সাহায্য করতে পারে।
- নিয়মিত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
- ধূমপান এবং মদ্যপান এড়িয়ে চলুন
- মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন
- নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করুন
- পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন
- আপনার থাইরয়েডের সমস্যা নিয়ে আপনার ডাক্তারের সাথে নিয়মিত আলোচনা করুন।
- থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখার উপায়
থাইরয়েড হরমোনের তৈরির জন্য সেলেনিয়াম খাবার প্রয়োজনীয়। সেলেনিয়াম সমৃদ্ধ খাবার গুলি হলোঃ
- ওটমিল
- ডিম
- মুরগি
- টুনা
- বাদামি চাল ইত্যাদি
জিংক সমৃদ্ধ খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া জরুরী সেলেনিয়াম এর মত জিংক সমৃদ্ধ খাবার ও থাইরয়েড হরমোনের তৈরির জন্য অনেক প্রয়োজনীয়। জিংস সমৃদ্ধ খাবার গুলো হলোঃ
- সীফুড
- বাদাম
- লাল মাংস
- শুকনো ফল ইত্যাদি
থাইরয়েড হরমোন তৈরির জন্য আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবার ও প্রয়োজনীয়। খাবারগুলো হলোঃ
- সামুদ্রিক খাবার
- দুধ
- মাছ
- লবণ
- পনির
- ডিম ইত্যাদি
- পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম থাইরয়েড হরমোনের তৈরির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
- নিয়মিত ব্যায়াম থাইরয়েড হরমোন এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
- থাইরয়েড হরমোন এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে হলে মানসিক চাপ কমাতে হবে।
থাইরয়েড নরমাল কত
পুরুষ ও মহিলাদের দেহে থাইরয়েডের পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। এছাড়াও বয়স্ক শিশুদের ক্ষেত্রেও থাইরয়েড এর পরিমাণ আলাদা। তাহলে চলুন কাদের কোন বয়সে কতটা থাইরয়েডের স্টিমুলেটিং হরমোন থাকে তা জেনে নেই।
মহিলাদের থাইরয়েড হরমোন এর স্বাভাবিক মাত্রা
- ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সের মহিলাদের থাইরয়েড এর মাত্রা ০.৪-২৩৪ এমইউ প্রতি লিটার হওয়া উচিত।
- ৩০ থেকে ৪৯ বছর বয়সের মহিলাদের থাইরয়েড এর মাত্রা ০.৪-৪.০এমইউ প্রতি লিটার হওয়া উচিত।
- ৫০ থেকে ৭৯ বছর বয়সের মহিলাদের থাইরয়েডের মাত্রা ০.৪-৪৬৮ এমইউ প্রতি লিটার হওয়া উচিত।
পুরুষদের থাইরয়েডের হরমোন এর স্বাভাবিক মাত্রা
- ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সের পুরুষদের থাইরয়েডের মাত্রা ০.৫-৪.১ এমইউ প্রতি লিটার হওয়া উচিত।
- ৫১ থেকে ৭০ বছর বয়সের পুরুষদের থাইরয়েডের মাত্রা০.৫-৪৫ এমইউ প্রতি লিটার হওয়া উচিত।
- ৭১ থেকে ৯০ বছর বয়সের পুরুষদের থাইরয়েডের মাত্রা ০.৪-৫২ এমইউ প্রতি লিটার হওয়া উচিত।
শিশুদের থাইরয়েড এর হরমোন এর স্বাভাবিক মাত্রা
- ১ থেকে ৪ দিনের শিশুর থাইরয়েডের হরমোনের মাত্রা ১.৬-২৪-৩ এমইউ প্রতি লিটার।
- ২ থেকে ২০ সপ্তাহ বয়সের শিশুদের থাইরয়েড এর মাত্রা ১.৬-২৪.৩এমইউ প্রতি লিটার।
- ২০ থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা ০.৫৫-৫.৩১ এমইউ প্রতি লিটার।
থাইরয়েড কি খেলে ভালো হয়
যারা থাইরয়েড রোগী অথবা যারা থাইরয়েড রোগী নন তাদের মধ্যে প্রায় অনেকেই এই প্রশ্নটি করেন যে, থাইরয়েড কি খেলে ভালো হয়। যেহেতু থাইরয়েড একটা হরমোন জনিত সমস্যা এজন্য থাইরয়েড রোগীকে কে অবশ্যই সুষম এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যা তিনি সহজেই হজম করতে পারবেন, এবং সেই খাদ্য থেকে তিনি যেন অধিক পুষ্টিগুণ পান। তাহলে দেওয়া যাক থাইরয়েড কি খেলে ভালো হয় এই সম্পর্কে।
- কমলা
- বাতাবি লেবু
- আয়োডিনযুক্ত লবণ
- তাজা ও সবুজ শাকসবজি
- অশ্বগন্ধা
- রসুন
- পেঁয়াজ
- টমেটো
- সবুজ মরিচ খেলে থাইরয়েড ভালো হয়
- ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার যেমন
- মিষ্টি আলু
- সামুদ্রিক মাছ
- ডিম
- মসুর ডাল
- বাদাম
- মটরশুটি
- ছোলা
- দুধ
- দই
- পনির
- মাশরুম
- মাছ
- গাজর ইত্যাদি খাবার খান
উপরে উল্লেখিত খাবার গুলো খেলে মোটামুটি থাইরয়েড সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তো আশা করছি আপনাদের প্রশ্ন থাইরয়েড কি খেলে ভালো হয় এই উত্তরটি আপনারা জানতে পেরেছেন।
থাইরয়েড কি ভালো হয়
বর্তমানে আমাদের দেশে থাইরয়েডের সমস্যা ব্যাপক হারে বাড়ছে এবং এ রোগটি পুরুষের তুলনায় মহিলারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। যে সকল মানুষেরা থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তারা অনেক দুশ্চিন্তায় ভুগছেন।
আর মনে হয়তো প্রশ্ন আসছে যে এই থাইরয়েড কি ভালো হয়? বা এই রোগটি কি ভালো করা সম্ভব? উত্তর হ্যাঁ থাইরয়েড ভালো হয় এবং এই রোগটি ভালো করা সম্ভব। নির্দিষ্ট কিছু খাদ্য উপাদান গ্রহণ এবং জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তন আনলে থাইরয়েড সম্পূর্ণভাবে ভালো হয়।
- আয়োডিনযুক্ত খাবারঃ থাইরয়েড সমস্যাটি হয়ে থাকে মূলত আয়োডিনের ঘাটতি দেখা দিলে। তাই থাইরয়েড সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আয়োডিন সমৃদ্ধ খাদ্য খেতে হবে। যে সকল খাবারে আয়োডিনের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি থাকে সেগুলো হলো - ডিম, চিংড়ি মাছ, ভুট্টা, দুধ, কলা, গুল্ম, শাকসবজি, ব্রকলি, মিষ্টি আলু, বাঁধাকপি, শসা জাতীয় খাদ্য, ফুলকপি, মাশরুম, বাদামী ভাত, গ্লুটেইন মুক্ত শস্য, নারিকেল তেল, শ্যামন মাছ, দই ইত্যাদি।
- সঠিক পরিমাণ ঘুমঃ থাইরয়েড থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনাকে সঠিক পরিমাণে ঘুমোতে হবে। তাই অধিক রাত জাগার অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করুন এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ ঘুমান। যে সকল মানুষেরা অধিক রাত পর্যন্ত জেগে থাকে তাদের এই থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি থাকে। যাদের কাজের তাগিদে রাত জাগতে হয় তারা দিনের বেলায় ঘুমিয়ে ঘুমের ঘাটতি পূরণ করুন।
- প্রোটিন জাতীয় খাবারঃ আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখুন। প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করলে এই থাইরয়েডের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যে সকল খাবারে অধিক পরিমাণ প্রোটিন রয়েছে সেগুলো হল - দই, পনির, ডিম, ডাল, মাংস, সয়াবিন, শুকনো কুমড়ার বীজ ইত্যাদি।
- নিয়মিত শরীর চর্চাঃ শরীরের ইমিউনিটি বাড়াতে এবং থাইরয়েড এর হাত থেকে রেহাই পেতে সবচাইতে ভালো উপায় হচ্ছে নিয়মিত শরীর চর্চা করা।
থাইরয়েড এর লক্ষণ
একটি থাইরয়েডের রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরের নানা ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। দুর্ভাগ্যবশত জীবনের পর্যায়ের এবং চিকিৎসাধীন লক্ষণগুলির সাথে থাইরয়েড রোগের লক্ষণ গুলি অনেক মিল। যার ফলে থাইরয়েড সমস্যার লক্ষণ গুলি বা অন্য কিছুর সাথে সম্পর্কিত কিনা এটা জানা অনেক কঠিন হয়ে যায়।
থাইরয়েড এর রোগের লক্ষণ গুলির ক্ষেত্রে দুটি ভাগে ভাগ করা হয় যা খুব কম থাইরয়েডের হরমোন হাইপোথাইরয়ে ডিজম এবং খুব বেশি থাইরয়েড হরমোন হাইপার থাইরয়েডিজম থাকার সঙ্গে সম্পর্কিত।
১। অত্যাধিক সক্রিয় থাইরয়েড এর (হাইপারথাইরয়েডিজম) লক্ষণগুলো হলোঃ
- ওজন কমে যাওয়া
- ঘুমের সমস্যা হওয়া
- দৃষ্টি সমস্যা বা চোখের জালা
- তাপের প্রতি সংবেদনশীল বোধ করা
- মহিলাদের ক্ষেত্রে অনিয়মিত মাসিক অভিজ্ঞতা বা মাসিক চক্র বন্ধ হয়ে যাওয়া
- পেশী দুর্বলতা এবং কম্পন থাকা
- উদ্যোগ স্নায়ুদুর্বল্য এবং বিরক্তি অনুভব করা
২। নিষ্ক্রিয় থাইরয়েড এর (হাইপারথাইরয়েডিজম) লক্ষণ গুলো হলোঃ
- কর্কশ কণ্ঠস্বর
- মোটা ও শুষ্ক চুল থাকা
- ঠান্ডা তাপমাত্রায় অসহায় অসহিষ্ণুতা অনুভব করা
- মহিলাদের বেশি এবং ঘন ঘন মাসিক হওয়া
- ওজন বেড়ে যাওয়া
- ক্লান্তি বোধ করা
- বিস্মৃতি অনুভব করা
থাইরয়েড কি কি সমস্যা হয়
একটা মানুষের মধ্যে যদি থাইরয়েডের সমস্যা থাকে তাহলে সেই ব্যক্তির মধ্যে নানা উপসর্গ দেখা দেয়। যা চিকিৎসকেরা শুনে খুব সহজেই থাইরয়েড নির্ণয় করে। যদি আপনি একটু সাবধান হয়ে চলেন তাহলে কয়েকটি উপসর্গ দেখে আপনি সহজেই তা নির্ণয় করতে পারবেন। তাহলে চলুন জেনে নেই থাইরয়েড হলে কি কি সমস্যা হয় সেই সম্পর্কে।
- গলার স্বর বদলে যাওয়া
- ওজন বৃদ্ধি
- ক্লান্তি
- ঠান্ডা লাগা
- পেশির দুর্বলতা
- ডিপ্রেশন
- মুখ ফুলে যাওয়া
- পেশিতে ব্যথা
- চুল পাতলা হয়ে যাওয়া
- ঘুমে বিঘ্ন
- ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়
- কোষ্ঠকাঠিন্য
- শুষ্ক ও ক্ষতিগ্রস্ত চুল
- তাপ সংবেদনশীলতা
- ঘনঘন অতিরিক্ত মাসিক চক্র
- হৃদ গতি ধীরে হয়ে যায়
এই উপসর্গগুলো হলে মূলত থাইরয়েড বেশি দেখা যায়। এজন্য যদি আপনার মধ্যে এই সমস্যাগুলো দেখা যায়। তাহলে দেরি না করে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন। এবং সেই পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করুন।
থাইরয়েড কি কারনে হয়
কয়েকটি কারণে মূলত থাইরয়েড হয়ে থাকে তার মধ্যে প্রধান ৪টি কারণ নিয়ে আজকে আমরা আলোচনা করব।তাহলে চলুন থাইরয়েড কি কারনে হয় তা জেনে নেই।
- জেনেটিক অর্থাৎ, যদি বাবা, মা, দাদী, দাদা,অথবা যদি পূর্বপুরুষদের থাইরয়েডের সমস্যা থাকে তাহলে এই রোগটি হতে পারে।
- থাইরয়েড এর সমস্যা হতে পারে আয়োডিনের অভাবে
- যদি গলার সার্জারি করা হয় তাহলেও থাইরয়েডের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- যদি কেউ থাইরয়েডের চিকিৎসার জন্য রেডি ও আয়োডিন খেয়ে থাকে সেক্ষেত্রেও থাইরয়েডের সমস্যা হতে পারে।
থাইরয়েড রোগীর খাবার তালিকা
থাইরয়েড মানবদেহের হরমোনের বিপাক প্রক্রিয়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পুষ্টিক নালীর অভ্যন্তরীণ পরিবহন, শরীরের তাপমাত্রা, হৃৎস্পন্দন, মস্তিষ্কের গঠন এবং প্রজনন স্বাস্থ্য সহ কোষের গঠনে এই হরমোনের বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই মানুষ যদি থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে মানুষের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে।
এই রোগ হলে চিকিৎসা নেওয়াটা যতটা জরুরী ঠিক ততটা জরুরী খাবার তালিকায় কিছু খাদ্য উপাদান রাখা। থাইরয়েড গ্রন্থির হরমোনের রয়েছে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। সেগুলো হল জিংক, সোডিয়াম এবং আয়োডিন যা হরমোন নিঃসরণ করতে এবং হরমোনের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
মূলত আমাদের শরীরে হরমোন তৈরি করে থাকে আয়োডিন। তাই মানুষের শরীরে যদি আয়োজনের ঘাটতি দেখা দেয় তাহলে এই হাইপো থাইরয়েডিজম হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। সেজন্য মানুষের শরীরে আয়োডিনের অভাব পূরণ করতে প্রয়োজন আয়োজন সমৃদ্ধ খাবার।
আয়োডিন সমৃদ্ধ খাদ্য উপাদান গুলোর মধ্যে অন্যতম যেগুলো রয়েছে তা হল - ডিম, চিংড়ি মাছ, ভুট্টা, দুধ, কলা, গুল্ম, শাকসবজি ইত্যাদি। কিন্তু শরীরে পরিমাণের তুলনায় আয়োডিন বেশি হলে তা হতে পারে ক্ষতির কারণ।
থাইরয়েড রোগীর খাবার তালিকায় কিছু সবজি জাতীয় খাবার রাখতে পারেন যেমন - ব্রকলি, মিষ্টি আলু, বাঁধাকপি, শসা জাতীয় খাদ্য, ফুলকপি ইত্যাদি।
এছাড়াও আরো কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে থাইরয়েড হরমোনের অভাব পূরণ করতে সাহায্য করবে। যেমন - মাশরুম, বাদামী ভাত, গ্লুটেইন মুক্ত শস্য, নারিকেল তেল, শ্যামন মাছ, দই ইত্যাদি।
লেখকের মতামত
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলের বিষয়বস্তু ছিল থাইরয়েড সম্পর্কে। উপরের আলোচনায় থাইরয়েড সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। যা আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। আমরা এই ওয়েবসাইটে স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরি। তাই এমনই সব স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পোস্ট পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ!
ডিজি মাল্টিপ্লাই এর পোস্টে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url