গ্রিন টি এর উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম
কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতাগ্রিন টি এর উপকারিতা ও অপকারিতা, ওজন কমাতে গ্রিন টি খাওয়ার নিয়ম সহ গ্রিন টি বিষয়ক নানান দিকগুলো নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের এই আর্টিকেল। আপনাদের মনে যদি গ্রিন টি সম্বন্ধে নানান প্রশ্ন এসে থাকে আপনার মনে এসে থাকে এবং এই গ্রিন টি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য।
কারণ এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা গ্রিন টির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাই বিষয়গুলো জানতে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র
ভূমিকা
ওজন সমস্যায় বর্তমানে অনেক মানুষের ভুগছে। আর এই ওজন কমানোর জন্য গ্রিন টি খাওয়ার চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। গ্রিন টি খেলে ওজন কমে এ কথা ঠিক কিন্তু যদি এটি সঠিক নিয়মে না খাওয়া হয় তাহলে এই গ্রিন টি উপকার হওয়া বাদে অপকার হবে। তাই আজকের এই পোস্টে গ্রিন টির বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছি। বিষয়গুলো জানতে পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
গ্রিন টি এর উপকারিতা ও অপকারিতা
অনিয়মিত খাওয়া দাওয়ার ফলে আমরা আমাদের শরীরের ওজন বাড়িয়ে ফেলি। অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য গ্রিন টির গুরুত্বপূর্ণ ও ভূমিকা রাখে। আজ আপনাদের গ্রিন টির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানাবো তাহলে চলুন গ্রিন টির উপকারিতা ও অপকারিতা গুণগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুনঃ চিয়া সিড এর উপকারিতা ও অপকারিতা
গ্রিন টির উপকারিতা
- হার্ট সুস্থ রাখে
- ওজন কমায়
- ক্লান্তি দূর করে
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- মুখের দুর্গন্ধ দূর করে
- ত্বকের সমস্যার সমাধানে
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
- মস্তিষ্ক বা ব্রেন ভালো রাখে
- ক্যান্সার প্রতিরোধে
- ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে
হার্ট সুস্থ রাখে
এখন প্রায় মানুষেরই হাটের সমস্যা দেখা দেয়। অনেকেরই হার্ট অ্যাটাকের মত মারাত্মক সমস্যায় ভুগেন এবং মৃত্যুবরণ করেন। তাই আপনি যদি আপনার হার্ট সুস্থ দেখে সুখী জীবন যাপন করতে চান তাহলে অবশ্যই গ্রিন টি পান করুন। তাহলে আপনি হার্ট অ্যাটাক থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবেন।
ওজন কমায়
শরীরে যখন অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যায় তখন দেহে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই ওজন কমানোর জন্য গ্রিন টির গুরুত্ব অপরিসীম কারণ গ্রিন টিতে ওজন কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত গ্রিন টি পান করার মাধ্যমে শরীরে অতিরিক্ত মেদ কমিয়ে নিজেকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
ক্লান্তি দূর করে
সারাদিন কাজ করার পর নিজেকে খুব ক্লান্তি মনে হলেএক কাপ গ্রিন টি পান করুন। কেননা গ্রিন টি ক্লান্তি দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে পরিমাণ মতো পান করতে হবে না হলে ক্ষতি হতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মত আরো অনেক ধরনের উপাদান গ্রিনটিতে থাকার ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে বাঁচায়।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করে
মুখের ভিতর ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের কারণে দাঁতের অনেক ক্ষতি হয় এবং মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। গ্রিন টি নিয়মিত পান করলে ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে এবং দাঁতকে সুস্থ রাখে।
ত্বকের সমস্যার সমাধানে
গ্রিন টি ত্বকের সমস্যার সমাধানে খুবই উপকারী তাছাড়া ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট হওয়ার থেকে ত্বকে রক্ষা করে। ব্রণের সমস্যা দূর করে এবং চুলকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য গ্রিন টি খুব কাজে লাগে। যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে তারা যদি নিয়মিত গ্রিন টি পান করেন তাহলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে সহজ হবে। তবে পরিমাণ মতো পান করতে হবে।
মস্তিষ্ক বা ব্রেন ভালো রাখে
মানুষের মস্তিষ্ক বা ব্রেনের রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে মানুষ মারা যায়। কিন্তু গ্রিন টি পান করলে মস্তিষ্ক বা ব্রেন রক্ত চলাচল ঠিক থাকে। তাই মস্তিষ্ক বা ব্রেন ভালো রাখতে গ্রিন টির উপকারিতা অনেক।
ক্যান্সার প্রতিরোধে
ক্যান্সার একটি মারাত্মক রোগের নাম যা মানুষকে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। গ্রিন টি ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ক্যান্সার বিভিন্ন ধরনের হয় যেমন লিভার ক্যান্সার, ব্রেন ক্যান্সার, পোস্টেট ক্যান্সার, বেস্ট ক্যান্সার,এইসব ক্যান্সার প্রতিরোধে করতে সাহায্য করে গ্রিন টি।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে
ডায়াবেটিস প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণে গ্রিন টির উপকারিতা অনেক। কেউ যদি পরিমাণ মতো গ্রিন টি পান করে তবে তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে।
গ্রিন টি এর অপকারিতা
- গ্রিন টি পান করলে যেমন উপকার রয়েছে ঠিক তেমনি কিছু অপকারও রয়েছে। নিচে গ্রিন টি এর কিছু অপকারিতা দেওয়া হল।
- লিভারের ক্ষতি করতে পারে।
- ঘন ঘন প্রসব ও পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে।
- হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। খাবার আগে পরে খেলে বদহজম হতে পারে।
- মাথাব্যথা ও মাথা ধরা বেড়ে যেতে পারে।
- ঘুমের সমস্যা হতে পারে। অনিদ্রার ফলে মেজর খিটখিটে ও অসুস্থ হতে পারে।
- গ্রিন টি অতিরিক্ত পান করার ফলে পেটে এসিড সৃষ্টি করতে পারে যার কারণে পেট খারাপ হতে পারে।
গ্রিন টি খাওয়ার সময়
সারাদিন কাজ করার পর ক্লান্তি দূর করার জন্য এবং কাজে আবার মনোযোগ বাড়াতে চাইলে আপনি গ্রিন টি পান করতে পারেন। শরীরে জন্য গ্রিন টি খুবই উপকারী। গ্রিন টি পান করলে আপনার মেদ কমিয়ে আপনাকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে তাছাড়াও অনেক ধরনের রোগের প্রতিরোধে যেমনঃ আলঝেইমার্স ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, স্টক, এমনকি ত্বকের উজ্জ্বলতা ও বৃদ্ধি করে এবং বয়সে ছাপ বাড়তে দেয় না।
সকল ধরনের উপকার পেতে জানা দরকার কতটুকু গ্রিন টি পান করতে হবে। অনেকে তাড়াতাড়ি উপকার পাওয়ার জন্য দিনে ৫ থেকে ৭ কাপ গ্রিন টি খেয়ে ফেলেন এবং কেউ বেশি কেউ কম খেয়ে থাকেন। আবার অসময়ে খেয়ে ফেললে তার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। গ্রিন টি কখনো খালি পেটে খাওয়া উচিত না। বিশেষজ্ঞদের মতে ভরা পেটে মাঝখানে খাওয়া ভালো।
বেশি উপকার পাওয়ার জন্য কিছু ভারি খাওয়ার ২ ঘন্টা আগে বা দুই ঘন্টা পরে খাওয়া যেতে পারে। এই চায়ে ক্যাফিন ও ক্যাটেচিন অনেক মাত্রায় থাকে তাই ওজন কমাতে সাহায্য করেন। এজন্য খাওয়ার পরে গ্রিন টি পান করাই ভালো। গ্রিন টি এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকার ফলে বারবার গ্রিন টি পান করা উচিত না কারণ এতে অনিদ্রার সমস্যা হতে পারে।তাছাড়া শরীরের কিছু প্রয়োজনীয় পদার্থ গুলো বের হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।
সেজন্য প্রতিদিন ৩ থেকে ৫ কাপের বেশি গ্রিন টি পান করবেন না। গ্রিন টি পান করলে খিদে কমে যায় কিছু খাওয়ার অভ্যাস বদলে যেতে পারে এবং ওজন কমে যেতে পারে। কারো যদি বদহজম ও ইরিটেবল বাত্তয়েল সিনড্রোম এর সমস্যা থাকে তাহলে গ্রিনটি না পান করাই ভালো। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গ্রিন টি পান না করাই উচিত এছাড়াও ক্যাটেচিন নামক যুক্তি শরীরে আয়রন শোষণে বাধা দেয় তাই রক্তস্বল্পতার সমস্যা থাকলে গ্রিন টি না পান করাই ভালো।
গ্রিন টি তৈরির নিয়ম
গ্রিন টি মানুষের শরীরে উপযোগী পানীয় এবং খুবই উপকারী। গ্রিন টি পান করলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায় ওজন কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই আজ আপনাদের গ্রিন টির তৈরির নিয়ম সম্পর্কে জানাবো। গ্রিন টির উপকারিতা সম্পর্কে খুব কম মানুষই জানে, সঠিক নিয়ম না জানার কারণে অনেক মানুষই এর সুফল পায়না।
তাই গ্রিন টি পান করতে হলে অবশ্যই তার সঠিক নিয়ম জানা দরকার। বাজারে অনেক ব্র্যান্ডের গ্রিন টি ব্যাগ পাওয়া যায়। ওজন করে কিনলো গ্রিন টি বেশি স্বাস্থ্যকর। একটি চায়ের পাতিলে পানি গরম করে সেই গরম পানিতে চায়ে কাপে ঢালতে হবে। তার গ্রিন টি এর ব্যাগ কিছুক্ষণ ধরে ভিজিয়ে রাখতে হবে পানি রং সবুজ হলে গ্রিন টির ব্যাগটি উঠিয়ে সবুজ রঙের পানীয় পান করতে হবে।
আর যদি ওজন করে গ্রিন টি আপনি ক্রয় করেন তাহলে একটি পাত্রে প্রথমে পানি গরম করে সেই পানির কাঁচের পাত্রে ঢালতে হবে তারপর কিছুক্ষণ ঢাকনা বন্ধ করে রাখতে হবে এবং ৮০°সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কাঁচের পাত্রে ভিজিয়ে রেখে গ্রিনটি ২ থেকে ৩ মিনিট পর ছেকে খাওয়া যাবে। তবে গ্রিন টি তৈরি করার সময় কখনও চা বা দুধ মেশাবেন না। এগুলো ছাড়া এলাচ, আদা, লেবুর রস, দারুচিনি মেশানো যেতে পারে। আশা করছি গ্রিনটি তৈরির নিয়ম আপনারা জানতে পেরেছেন।
আসল গ্রিন টি চেনার উপায়
গ্রিন টি অন্য চায়ের চেয়ে স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এটি শরীরে অপ্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল বা এলডিত্রল ও ট্রাইগ্লিসারইডজমিতে বাধা সৃষ্টি করে। এছাড়াও মেটাবলিজম এর মাত্রা বাড়ি এ তাড়াতাড়ি ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। বর্তমান বাজারে অনেক ধরনের ভেজাল গ্রিন টি বের হয়েছে সেজন্য আসল গ্রিন টি চেনা খুব দরকার।আসল গ্রিন টির অনেকগুলো ভালো গুণ আছে এবং বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা জানা থাকলে আসল গ্রিন টি তাড়াতাড়ি চেনা যায়। সঠিক দিনটি চেনার উপায় নিচে দেওয়া হলোঃ
- গ্রিন টি সতেজ ও হালকা সবুজ রঙের হয়
- টি ব্যাগ না নেওয়াই ভালো
- পাতার আকার বড় হবে
- মার্চ এপ্রিলের মধ্যেই এই চা চাষ হয়
- তাই এর গুন ও পুষ্টি ভালো থাকে
- আসল গ্রিন টি ছয় মাসের বেশি রাখা যাবে না
- গ্রিন টিতে চা মিশিয়ে খাওয়া যাবে না
- গ্রিন টির প্যাকেটে এপিগ্যালোক্যাটেচিন থাকলে কিনতে হবে
- গ্রিন টির গন্ধ হবে হালকা সতেজ কচি এবং ঘাসেত হয়
- গ্রিন টি রাখতে হবে কাজ বা পোর্সেলিনের বন্ধ পাত্রের মধ্যে
- গ্রিন টির সাথে দুধ মেশানো যাবে না
- ওয়ার্ক আউট এর আগে বা পরে গ্রিন টি খাওয়া যেতে পারে
গ্রিন টি দাম কত
বর্তমান বাজারে বিভিন্ন দামের গ্রিন টি পাওয়া যায়। আপনি ভালো কোম্পানির গ্রিন টি যদি নিতে চান তাহলে ইস্পাহানি গ্রিন টি কিনে নিতে পারেন। ১০০ গ্রাম গ্রিন টির দাম পড়বে ১৭৫ টাকা। নিচে কিছু ভালো গ্রিন টিয়ের দাম দেওয়া হলঃ-
- ব্লেন্ডারস চয়েস প্রিমিয়াম গ্রিন টি লেগিন ব্যাগটি ২৫ টি প্যাকেট থাকবে আর এর ওজন ৩৫ গ্রাম দাম এবং এর পড়বে ২০০ টাকা।
- ব্লেন্ডার চয়েস প্রিমিয়াম (লুজটি) এর ১০০ গ্রামের দাম পড়বে ১৭৫ টাকা।
ওজন কমাতে গ্রিন টি খাওয়ার নিয়ম
অনেকেই মনে করেন গ্রিন টি খেলে ওজন কমে যায় এ কথা সত্য। তবে এই গ্রিন টি যদি আপনি সঠিক নিয়মে না খান, তবে এটি আপনার ওজন কমানোর ক্ষেত্রে কোন কাজে আসবে না। আবার অনেকেই সঠিক সময় এ গ্রিন টি পান করে না, সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে গ্রিন টি খেয়ে ফেলেন। আবার কেউ কেউ তাড়াতাড়ি শরীরের ওজন কমানোর জন্য বেশি বেশি করে গ্রিন টি পান করে থাকেন।
আরো পড়ুনঃ সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়
কিন্তু তারা জানে না এই গ্রিন টি সঠিক নিয়মে পান না করলে এটা শরীরের জন্য ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। খালি পেটে চা পান করলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। যেমনঃ- গ্যাস্ট্রিক, আলসার, ডিহাইড্রেশন প্রভৃতি। সেজন্য সকালে নাস্তা খাওয়ার পর গ্রিন টি পান করতে হবে। অনেকে দুপুরের খাবার পরও গ্রিন টি পান করে থাকে এতে এই গ্রিন টি কোন উপকারে আসে না।
গ্রিন টির উপকার পেতে হলে খাওয়ার ৪৫ মিনিট বা এক ঘন্টা পর অথবা আগে পান করতে হবে। রাতে ঘুমানোর ২ ঘণ্টা আগে গ্রিন টি খেলে শরীরের ওজন কমানো যায়। তাছাড়া ব্যায়াম করার আধা ঘন্টা আগে গ্রিন টি খাওয়া যেতে পারে। তবে গ্রিন টি খাওয়ার পরিমাণটাও জানা অনেক প্রয়োজন। পানির মতো বেশি করে খেলে কোন উপকার পাওয়া যাবে না।
গ্রিন টি বানানোর নিয়মঃ- প্রথমে এক চা চামচ বা পাঁচ গ্রাম গ্রিন টি নিবেন। তারপর গরম পানির পাত্রে কিছুক্ষণ রাখার পর সামান্য ঠান্ডা করে নিবেন। তাতে চা মেশানোর পর তিন মিনিট ঢেকে রাখুন। চা পাতা ভালো করে ভিজে যাওয়ার পর পান করে নিন। আপনারা চাইলে আমরা গুড়া, দারুচিনি গুড়া, এলাচ গুঁড়া মিশে পান করতে পারেন। এর সাথে আদার রস, আমলার রসও দিতে পারেন।
ওজন কমাতে কোন গ্রিন টি ভালো
ওজন কমাতে হলে প্রথমে ভালো গ্রিন টি বাছাই করে নিতে হবে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের ভেজাল গ্রিন টি বের হয়েছে। তাই আসল গ্রিন টি চিনতে হবে। ভেজাল গ্রিন টি খেলে আপনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। সুস্থ থাকার জন্য ও ওজন কমানোর জন্য উন্নত মানের গ্রিন টি পান করতে হবে। গ্রিন টি বানানোর নিয়ম না জানা থাকলে এটা আপনার কোন উপকারে আসবে না।
আরো পড়ুনঃ গরুর ভুড়ি খাওয়ার অপকারিতা
গ্রিন টি কেনার সময় দেখে কিনতে হবে। বাজারে গ্রিন টি এর খোলাপাতা পাওয়া যায়, খোলাপাতা কেনার সময় ভালোভাবে নেড়েচেড়ে দেখবেন যে সাদা লালচে দাগ পড়েছে এমন চা পাতা কিনবেন না। এখন ভালো ভালো কোম্পানিতে উন্নত মানের গ্রিন টি পাওয়া যায়।
গ্রিনটি অর্গানিক বা নন অর্গানিক দেখে কিনতে হবে। কারণ অর্গানিক গ্রিন টি তে আছে রাসায়নিক মৌল যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। আর অর্গানিক দিতে কোন ক্ষতি হয় না। তাই কেনার সময় ভালোভাবে দেখে নিতে হবে অর্গানিক কিনা।
গ্রিন টি কখন খেলে ওজন কমে
গ্রিন টি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। গ্রিন টি খেতে তেমন কোন স্বাদ নেই কিন্তু গ্রিন টি ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গ্রিন টি যে সকল সময়ে খেলে ওজন কমে তা নিচে দেওয়া হল।
- রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগেঃ ওজন কমানোর জন্য গ্রিন টি পান করার উত্তম সময় হলো রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পান করা। রাতে বিছানায় যাওয়ার দুই ঘন্টা আগে গ্রিন টি পান করতে হবে। অনেকের চা পান করার পর ঘুম আসতে চায় না তথা চা পান করার জন্য ঘুমের ব্যাঘাত ঘুরতে পারে। তাই এক্সাক্টলি ঘুমানোর সময় না খেয়ে ঘুমোনোর ২ ঘণ্টা আগে খেয়ে নিতে পারেন।
- ব্যায়াম করার পূর্বেঃ ব্যায়াম করার আধা ঘন্টা আগে গ্রিন টি খেতে হবে। কারণ শরীর চর্চার আধা ঘন্টা আগে যদি আপনি গ্রিন টি পান করেন তাহলে আপনার শরীর ও কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ওজন কমতে সাহায্য করে।
- নাস্তা করার পরঃ সকালে উঠে তাড়াহুড়া করে খালি পেটে গ্রিন টি পান করা উচিত নয়। অবশ্যই সকালে নাস্তা করার পর গ্রিন টি পান করতে হবে। খালি পেটে গ্রিন টি পান করলে গ্যাস্ট্রিক, আলসার ও ডিহাইডেশনের মতো নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেজন্য সকালে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পর গ্রিন টি পান করবেন।
- খাবার খাওয়ার এক ঘন্টা আগে অথবা পরেঃ অনেকেই আছে খাবার খাওয়ার পরপরই চা পান করে থাকেন কিন্তু তা একেবারেই ঠিক নয়। খাবার খাওয়ার পর ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘন্টা পর গিরেনটি পান করাটাই উত্তম।
উপরে আলোচনা করলাম কোন কোন সময় গ্রিন টি খাওয়া ভালো এবার নিচে আমরা আলোচনা করব কোন কোন সময় গ্রিন টি খাওয়া উচিত নয়।
- ঘুমের সমস্যা জনিত কারণ এরিয়া যেতে গভীর রাতে গ্রিন টি পান করা যাবে না।
- সকালে খালি পেটে কখনোই গ্রিন টি খাওয়া যাবে না।
- খাবার সময়গুলোতে যেমন দুপুরে ও রাতে খাওয়ার সময় গ্রিন টি পান করা উচিত নয়।
- একদিনে দুই থেকে তিন কাপের বেশি গ্রিন টি পান করা যাবে না।
- গ্রিনটিতে দুধ বা চিনি মেশানো যাবে না।
ওজন কমাতে গ্রিন টি বানানোর নিয়ম
বর্তমানে মানুষ বিভিন্ন ধরনের চর্বি জাতীয় খাবার তাছাড়া জ্যাকফ্রুট, ট্রেটফ্রুট খেয়ে ওজন বাড়িয়ে ফেলে যা শরীরের জন্য খুব ক্ষতিকর। গ্রিন টি আমাদের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন গ্রিন টি মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে চর্বিকে কমাতে সাহায্য করে। গ্রিন টিতে আছে বিভিন্ন ধরনের জিংক, ম্যাগ্নেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম যা শরীরের মেদ কমাতে সাহায্য করে।
কিন্তু বানানোর নিয়ম জানার প্রয়োজন আছে তা না হলে কোন উপকার পাওয়া যাবে না। কখনো গ্রিন টি খালি পেটে খাবেন না নইলে ক্ষতি হবে। ওজন কমাতে হলে নিয়ম মেনে গ্রিন টি খেতে হবে। দিনে ৩-৪ খাওয়া যায়। খুব ঘন ঘন পান করলেই যে দ্রুত ওজন কমবে ঠিক তা নয়। ঘুম থেকে উঠার পর অবশ্যই নাস্তা করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ গরম জলে মধু খাওয়ার উপকারিতা
কারণ এতে ক্যাফেন থাকে যার ফলে খালি পেটে পান করলে আপনি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। গরম পান করা উচিত নয়। গ্রিন ফুটন্ত পানিতে গরম দুধের সাথে অথবা মধুর সাথে পান করলে তার গুনাগুন নষ্ট হয়ে যায়। তাই হালকা ঠান্ডা পানিতে মধুও দারুচিনি মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
ওজন কমাতে হলে অবশ্যই গ্রিন টি তে চিনি মেশানো যাবে না। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন ওজন কমানোর জন্য গ্রিন টি বানানোর নিয়ম গুলো। উপরের আলোচনায় আরো বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে গ্রিন টি বানানোর নিয়ম নিয়ে।
লেখকের মতামত
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলের আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল গ্রিন টি খাওয়ার গ্রিন টি এর উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ওজন কমাতে গ্রিন টি খাওয়ার নিয়ম। এছাড়াও গ্রিন টি বিষয়ক আরো বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে যা আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। এবং গ্রিন টি বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য আপনারা জানতে পেরেছেন। এমনই সব স্বাস্থ্য বিষয়ক ইনফরমেটিভ পোস্ট পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ!
ডিজি মাল্টিপ্লাই এর পোস্টে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url