সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবার - আঁশযুক্ত মাছ কি কি
হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার - হার্টের রোগীর খাবার তালিকাসবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবার, আঁশযুক্ত মাছ কি কি এবং আঁশযুক্ত সবজি ও ফল কি কি সহ আশঁযুক্ত খাবার প্রতিদিন কতটুকু খাওয়া দরকার, এটার উপকারিতা গুন নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের এই আর্টিকেল। আপনারা যারা আশঁযুক্ত খাবার তালিকা ও আশঁযুক্ত খাবার কি এই বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করছেন তাদের জন্য এই আর্টিকেলটি।
কারণ এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করেছি আশঁযুক্ত খাবার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে। তাই আজ যুক্ত খাবার বিষয়ক সকল তথ্য জানতে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচীপত্র
ভূমিকা
আমাদের শরীরকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে আশঁযুক্ত খাবার গুরুত্ব অপরিসীম। বর্তমানে মানুষের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগের বাসা বাঁধে ও নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। কারণ আমরা আমাদের প্রতিদিনের খাবার তালিকায় সঠিক খাবারগুলো নির্বাচন করি না। আবার অনেকেই আশঁযুক্ত খাবার কি সে সম্পর্কে ধারণা রাখি না। সেজন্য আমরা এই পোস্টে আশঁযুক্ত খাবার কি ও এর উপকারিতা গুণ, কেন মানবদেহের জন্য এই আশঁযুক্ত খাবার এত গুরুত্বপূর্ণ তা নিয়ে আলোচনা করেছি।
সবচেয়ে বেশি আঁশযুক্ত খাবার
আশঁ জাতীয় খাবারগুলো নিচে দেওয়া হল যেমনঃ
- পুদিনা পাতা
- মিষ্টি আলু
- পুই শাক
- গাজর
- মুলার শাক
- বাদাম
- আগা ডগা শাক
- কচু শাক
- কলমি শাক
- ফুলকপি
- পটল
- সিম
- ডাটা শাক
- বাঁধাকপি
- বেগুন
- সাজনা
- কচু
- ছোলা
- কলার মোচা
- ঢেঁড়স
- কমলা
- পাকা আম
- পেয়ারা
- পাকা কলা
- পাকা কাঁঠাল
- নারকেল
- নাশপাতি
- পাকা টমেটো
- স্ট্রবেরি
- আপেল ইত্যাদি
আরো পড়ুনঃ কোন কোন খাবারে এলার্জি আছে তার তালিকা
উপরের আশঁযুক্ত খাবার ছাড়াও আরো অনেক খাবার আছে যে খাবারগুলোতে অনেক ফাইবার এবং আশঁ রয়েছে। আশঁ যুক্ত খাবারগুলো আমরা প্রায় প্রতিদিনই খেয়ে থাকি। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির সুস্থ থাকার জন্য ৩০ গ্রাম আয়ুযুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ লিভার রোগী ব্যক্তিদের আরো বেশি পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। শাকসবজিতে যে আঁশ এবং ফাইবার থাকে তা মানুষের শরীরের জন্য খুব উপকারী।
আঁশযুক্ত মাছ কি কি
আমরা মাসে ভাতে বাঙালি তাই প্রতিদিন ওই ভাতের সাথে আমরা মাছ খেয়ে থাকি। কিছু মাছ আছে যেগুলো খেলে উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়। সে সম্পর্কে আমাদের জানা দরকার। যে সকল মাছে আশঁ ও ফাইবার আছে সে মাছ সম্পর্কে জানা দরকার। আঁশযুক্ত খাবারে অনেক ফাইবার আছে যা শরীরের জন্য উপকারী।আশঁ যুক্ত মাছের নাম নিচে দেওয়া হলো।
- শিং মাছ
- টেংরা মাছ
- ইলিশ মাছ
- কৈ মাছ
- দেশি মাগুর মাছ
উপরে মাছগুলোতে অনেক আঁশ আছে যা মানুষের শরীরের ভিটামিন এবং শর্করা যোগান দেয় এবং ওজন কমাতেও সাহায্য করে। আঁশযুক্ত মাছ মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
আঁশযুক্ত সবজি কি কি
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আঁশযুক্ত সবজিগুলো নিয়ে আলোচনা করবো। মানব শরীরের জন্য আয়োজযুক্ত সবজি খুবই উপকারী যা মানুষের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। আশঁযুক্ত সবজিগুলো নিচে দেওয়া হলো।
- বরবটি
- পটল
- সিম
- লাউ
- পেঁপে
- টমেটো
- শসা
- শেগ আলু
- কুমড়ো
- লাউ শাক
- ফুলকপি
- বাঁধাকপি
- আলু
এই আশঁযুক্ত যুক্ত সবজিগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।আশঁ যুক্ত সবজি খাবারের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়। উপরোক্ত আশঁযুক্ত খাবারগুলো আপনি খেলে আপনার শরীরের রোগ গুলো কমাতে সাহায্য করে এবং পুষ্টির যোগান দেয়। এককথায় আশঁ যুক্ত সবজি মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারী এবং প্রয়োজন রয়েছে।
আঁশযুক্ত ফল কি কি
যে ফল গুলোতে সবচেয়ে বেশি আঁশ উপস্থিত রয়েছে সেইসব ফলের নাম গুলো নিচে দেওয়া হয়েছে।
- আঙ্গুর
- পেঁপে
- লিচু
- আম
- কাঁঠাল
- আতা ফল
- পাইনাপেল
- কমলা
- পেয়ারা
- আমড়া
- নারকেল
- কালোজাম
- আপেল
- আমসত্ত্ব
- গ্রিট ফুড কদবেল
- পোমেলো
- তালের ফল
- লেমন ইত্যাদি
উপরোক্ত ফলগুলো আঁশযুক্ত ফলের মধ্যে পড়ে। তবে ছোলা মটর মুগ খেসারি ডালের মধ্যেও অনেক বেশি আঁশ পাওয়া যায়।
আশঁযুক্ত খাবার কাকে বলে
যে সকল খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন মিনারেল এবং ফাইবার থাকে তাকে আঁশযুক্ত খাবার বলে। অনেকেই আঁশযুক্ত খাবার সম্পর্কে জানেনা আবার অনেকেই আছে যারা আশঁযুক্ত খাবার খেতেও চায় না। তাদের ভিটামিনের অভাব থেকে যায়। আশঁ যুক্ত খাবার গুলোর মধ্যে আছে মসুর ডাল, কচু শাক, বাঁধাকপি, সজনে ডাটা, পেয়ারা, ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ কি খেলে গর্ভের বাচ্চার ওজন বাড়ে
আশঁ জাতীয় খাবার খেলে হজমে করতে সাহায্য করে। তাছাড়াও আশঁ যুক্ত সকল ধরনের খাবার মানুষের গ্লুকোজ এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এবং শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। আবার যাদের কোষ্ঠকাঠিনের সমস্যা আছে তারা আশঁযুক্ত খাবার খাওয়ার মাধ্যমে তা দূর করে। মানুষের শরীরের জন্য আঁশযুক্ত খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
দিনে কত গ্রাম আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে
বয়সের উপর নির্ভর করে দিনে কত গ্রাম আশঁ যুক্ত খাবার খেতে হবে। যার যেমন বয়স সেই অনুপাতে আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। তবে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে ৩০ গ্রাম আশঁযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত তার বেশি নয়। ৩০ গ্রাম এর বেশি খেলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় সেই কারণে আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণে প্রতিদিন আশঁযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে।
তো আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন প্রতিদিন কতটুকু আয়োযুক্ত খাবার খেতে হবে সে সম্পর্কে।
আশঁযুক্ত খাবার খাওয়ার উপকারিতা
আশঁযুক্ত খাবার খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা জেনেছেন। ইতিমধ্যে আমরা আপনাদের জানিয়েছি যে আশঁ যুক্ত খাবারের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি উপাদান আছে যা আমাদের শরীরের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করে থাকে। আই জুতো খাবার খেয়ে কিভাবে স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায় চলুন তা জেনে নেই।
- আশঁ যুক্ত খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- কারো যদি ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকে তাহলে আশঁযুক্ত খাবার খেলে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
- এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে অনেকেরই উচ্চ রক্ত চাপের সমস্যা থাকে তাদের উচিত আশঁযুক্ত ফলমূল ও সবজি বেশি করে খাওয়া।
- আশঁযুক্ত খাবার হজম সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এছাড়াও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।
প্রতিদিন কি পরিমাণে আয়োযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত
যে পরিমাণ আশঁযুক্ত খাবার প্রতিদিন খাওয়া উচিত তা নির্ভর করে আপনার বয়সের উপর। যার বয়স কম তাকে অল্প পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে আর যার বয়স বেশি তাকে বেশি পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য আঁশযুক্ত খাবার অবশ্যই খাওয়া উচিত।
আরো পড়ুনঃ ভিটামিন কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি
আবার আপনি যদি অধিক পরিমাণে আশঁযুক্ত খাবার খেয়ে ফেলেন তবে আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। তবে আপনার জানা দরকার কোন বয়সে কতটুকু পরিমান আশঁযুক্ত খাবার খাওয়া দরকার।
- ২ থেকে ৫ বয়সের মানুষের প্রতিদিন ৫ গ্রাম করে আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে।
- ৫ থেকে ১১ বছর শিশুদের জন্য ২১ গ্রাম আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।
- ১১ থেকে ১৬ বছর কিশোর কিশোরীদের ২৫ গ্রাম করে আশঁযুক্ত খাবার খেতে হবে।
- এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৩০ গ্রাম আশঁযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।
আশঁযুক্ত খাবার গুরুত্বপূর্ণ কেন
বর্তমানে মানুষের শরীরে বড় সমস্যা হলো ওজন ও রক্তচাপের। ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রা রাখতে পারলে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয়। আয় যুক্ত খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। আশঁযুক্ত খাবার খাওয়ার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ আশঁযুক্ত খাবার দেহে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। পাকস্থলীতে খাদ্য বেশিক্ষণ থাকার ফলে কোলেস্টেরল ট্রাই গ্লিসারাইরে মাত্রা কমায়। যার ফলে ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
দেহের ওজন কমানোর ক্ষেত্রে আশঁযুক্ত খাবারের গুরুত্ব অনেক। যাদের ওজন একটু বেশি তাদের বেশি পরিমাণে আশঁযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত নয়। যেসব আশঁ উপকারী সেগুলো হলঃ-শুকনো ফল, ভুট্টা, লাল চাল, শুকনো শিম, ভূমি ও ভুসিযুক্ত শসা, মটরশুটি, বরবটি, ডাল, ব্রাউন ব্রেড, তাজা ফল, যেকোনো ধরনের শাক, খেজুর, বাদাম, খোসা সহ আলু, খোরমা খেজুর ইত্যাদি।
আশঁযুক্ত খাবার খেলে কতগুলো রোগ প্রতিরোধের কাজ করে যেমনঃ- পিওপাথুরি, পাইলস, হার্টের অসুখ, ক্যান্সার, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়াবেটিস, দত্ত ক্ষয়, কোলন ও রেক্টামের ক্যান্সার প্রভৃতি।
আশঁযুক্ত খাবার খেলে শরীরের জন্য যে উপকার হয় তা নিচে দেওয়া হলঃ-
- প্রতিদিন সব খাবারের মধ্যে ৩২ গ্রাম আশঁযুক্ত খাবার রাখা দরকার।
- প্রতিদিন ১২ গ্রামের কম আস যুক্ত খাবার থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্যান্সার হতে পারে।
- আশঁযুক্ত খাবারের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আশঁযুক্ত খাবার হল হলো গমের ভুষি। গমের ভুষিতে ক্যালসিয়াম, লৌহ, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক ও কপার নামক উপাদান থাকে।
- প্রতিদিন নিয়ম করে আশঁযুক্ত খাবার খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
- আশঁযুক্ত খাবার খেলে রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
লেখকের মতামত
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করেছি কোন কোন খাবারে আশঁ রয়েছে এবং আশঁযুক্ত খাবার বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। আশা করি আজকের এই স্বাস্থ্য বিষয়ক পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। এমনই সব লাইফস্টাইল ও স্বাস্থ্য বিষয়ক পোস্ট পেতে নিয়মিত ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ!
ডিজি মাল্টিপ্লাই এর পোস্টে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url