খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা - দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত
গরুর ভুড়ি খাওয়ার অপকারিতাখেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা, দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত সহ পুরুষদের জন্য খেজুরের উপকারিতা ছাড়াও খেজুর সম্পর্কিত আরো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আজকের এই পোস্ট।
আপনারা যারা খেজুর খাওয়ার উপকার ও অপকার সহ এর দাম, খালি ফেটে গেলে কি হয়, এটি খাওয়ার সঠিক সময় এমন নানা ধরনের প্রশ্নের উত্তর জানতে চান তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেল। নিচে এই বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
পোস্ট সূচিপত্র
ভূমিকা
খেজুর নানাগুনে ভরপুর। খেজুর খেলে মানুষের শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দূর হয় এবং শারীরিক সক্ষমতা বাড়িয়ে থাকে। এছাড়াও আমাদের ইসলাম ধর্মের মানুষেরা খেজুর কে অনেক বেশি পছন্দ করে কারণ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এই খেজুরের নানা উপকারী দিকের কথা উল্লেখ করে গেছেন। নিচে খেজুর সম্পর্কিত নানান তথ্য দেওয়া হয়েছে। সকল বিষয়গুলো জানতে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত
খেজুর সম্পর্কে প্রায় সবারই অনেক ধারণা রয়েছে। অন্যান্য মাসের চেয়ে রমজান মাসে খেজুরের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। এই মাসে খেজুর প্রায় সবাই খেয়ে থাকেন ও রোজা থেকে ইফতার করার সময় প্রথমে খেজুর দিয়ে ইফতার করা সুন্নত তাই মুসলমানরা খেজুর মুখে দিয়ে রোজা খুলে।
অধিক পুষ্টিগুণ রয়েছে খেজুরে, খেজুর মিষ্টি ফল হলেও এতে কম ক্যালরি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ। ওজন কমাতে খেজুর অনেক সাহায্য করে এছাড়াও এতে থাকে ভিটামিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম। খেজুর শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ গরম জলে মধু খাওয়ার উপকারিতা
একটা খেজুরে পুষ্টির মান থাকে কার্বস- ৪৪ শতাংশ, প্রোটিন- দুই দশমিক তিন (২.৩) - পাঁচ দশমিক ছয় (৫.৬) শতাংশ, চর্বি- শন্য দশমিক দুই (০.২) - শন্য দশমিক পাঁচ (০.৫) শতাংশ, ডায়েটারি ফাইবার ছয় দশমিক চার (৬.৪) - এগারো দশমিক পাঁচ (১১.৫) শতাংশ। খেজুর খেলে যেভাবে শরীরে উপকার পাবেন চলুন নিচ থেকে জেনে নেই।
- ফাইবার সমৃদ্ধঃ খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। খেজুর খেলে অন্ত্রের শোষণ প্রক্রিয়াটি ধীর হয়ে যায় যার কারনে পেট অনেকক্ষণ পর্যন্ত ভরা থাকে। অন্ত্রের মধ্যে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি করতে সাহায্য করে এবং হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে ও বিপাক ক্রিয়াকেও অনেক উন্নত করে।
- প্রোটিনের উৎসঃ একটা খেজুরে প্রোটিনের পরিমাণ অনেক থাকে আর আমাদের সবার স্বাস্থ্যের জন্য প্রোটিন কতটা প্রয়োজন তা হয়তো সবারই জানা আছে। প্রোটিন পেশী ব্যারামত ও তৈরি করতে অনেক সহায়তা করে এই খেজুর।
- আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডঃ স্বাস্থ্যের জন্য সকল ধরনের ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাবারই অস্বাস্থ্যকর নয়। খেজুরের মধ্যে রয়েছে আনস্যাচুরেটেড যা শরীরে থাকা ফ্যাটি এসিডকে কমাতে সাহায্য করে। শরীরের বা হাত পায়ের ফোলা ভাব, আঘাতের ব্যথা সহ দূষিত খাদ্য খাবার খাওয়ার পরে পেটের প্রবাহ বিন্যাস করে থাকে এই উপকারী খেজুর উপাদানটি।
- ওজন কমায়ঃ খেজুর ওজন কমাতেও অনেক সাহায্য করে। খেজুর থাকে প্রাকৃতিক চিনি যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কোন ক্ষতি করে না। এবং খেজুর ফলটি খুব মিষ্টি হওয়ায় এটি খেলে অন্যান্য মিষ্টি খাবারের প্রতীক চাহিদাও কমে যায়।
খেজুরের নানা ধরনের উপকারিতা থাকলেও বেশি খেজুর খাওয়া ঠিক নয়। যে কোন খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণ খাওয়া উচিত, অতিরিক্ত যে কোন কিছু খেলে বিপদ হতে পারে। প্রতিদিন চারটা থেকে পাঁচটা খেজুর খাওয়া যেতে পারে। পরিমান মত খেলে স্বাস্থ্যর উপকার হবে। চার থেকে পাঁচটি অথবা ১০০ গ্রাম খেজুরে প্রায় ২৭৭ ক্যালোরি পাওয়া যাবে।
খেজুর ফলটি খুব মিষ্টি হওয়ায় যদি আপনি বেশি খেতে থাকেন তাহলে ওজন কমার থেকে উল্টা আরো ওজন বাড়তে থাকবে। ফলের সালাতে খেজুর কেটে ব্যবহার করতে পারেন এক গ্লাস হালকা গরম দুধের সাথে খেজুরের টুকরা দিয়ে খেতে পারেন। কেক, টক দই, চাটনিতে খাওয়া যেতে পারে।
কোন খেজুর সবচেয়ে ভালো
রমজান মাসের প্রধান ও অন্যতম খাবার হলো খেজুর। ইসলাম ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী ইফতারের প্রথম খেজুর খাওয়া সুন্নত। বাজারে নানা রকমের খেজুর পাওয়া যায় তাই কোন খেজুর ভালো তা বেছে ও দেখে কেনা অনেক মুশকিল হয়ে পড়ে এবং কোন খেজুর সবচেয়ে ভালো তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্ধে পড়ে যায় অনেকে। মধ্যপ্রাচর্যের আফ্রিকার কিছু দেশ আছে যেগুলোতে নানা রকমের খেজুর চাষ করা হয়।
সেখানকার খেজুর খেতে যেমন সুস্বাদু ও মিষ্টি তেমনি রয়েছে এগুলোতে অনেক পুষ্টিগুণ। বিশ্বের বিভিন্ন আকৃতির ও বিভিন্ন রকমের প্রায় ৬০০ ধরনের খেজুর পাওয়া যায়। খেজুরে অনেক ফাইবার আছে এবং অন্যান্য ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তাহলে চলুন নিচে থেকে জেনে নেই পৃথিবীর কিছু উন্নত মানের খেজুর সম্পর্কে মধ্যে যেকোনো একটি আপনার প্রিয় খাবার হতে পারে এই রমজানে।
- আজওয়া খেজুরঃ আজো খেজুর দেখতে একটু কাল এবং নরম। অনেক পুষ্টি সমৃদ্ধ এই খেজুর এবং খেতেও বেশ সুস্বাদু। সৌদি আরবের মদিনাতে মূলত এই খেজুর চাষ হয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এই আজোয়া খেজুর অনেক পছন্দ করতেন। এই খেজুর হার্ট অ্যাটাক রোধ করে ও হৃৎপিণ্ডকে সক্রিয় রাখে। খেজুরে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন হার্ড এর ক্ষেত্রে অনেক উপকারী। এছাড়াও এই খেজুরের ফসফরাস, ক্যালসিয়াম,সুক্রোজ,ফ্রকটোজ,গ্লুকোজ থাকে প্রচুর পরিমাণে। যা দাঁত এবং হাড় অনেক মজবুত রাখে ও শরীরে অনেক শক্তি বৃদ্ধি করে। এই খেজুরে গ্লিসেমিক ইনডেক্র কম থাকে এজন্য ডায়াবেটিক স রোগীরাও এই ফলটি খেতে পারেন। এই আজুয়া খেজুরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- মাজাফাতি খেজুরঃ এই খেজুর বাদামী রঙের, ঘন ও নরম হয়ে থাকে। এই মাজাফাতি খেজুর ইরানের কেরমান সিটিতে চাষ করা হয়। এই খেজুরের স্বাদ অনেকটা চকলেটের মতো এবং অনেক মিষ্টি। ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি ও বি রয়েছে এই খেজুরটিতে।
- ওমানি খেজুরঃ ও মানে খেজুর দেখতে আকারে বড়, মিষ্টি ও রসালো হয়ে থাকে। ওমানের এই খেজুর চাষ হয় এর নাম ওমানি খেজুর। এই খেজুরে আয়রন, পটাশিয়াম, সোডিয়াম থাকে প্রচুর পরিমাণে।
- হালাউয়ি খেজুরঃ হালাউয়ি খেজুর মূলত ইরানের হেনা নগরে চাষ করা হয়। এই খেজুর দেখতে বাদামি সোনালী রঙ্গের হয় আর বেশ স্বাদ রয়েছে এই খেজুরে। এতে রয়েছে প্রচুর আয়রন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার এবং পটাশিয়াম।
- মেজুল খেজুরঃ মেজুল খেজুর বিশ্বের অনেক জনপ্রিয় একটি খেজুর। এই খেজুর চাষ করা হয় মূলত মরক্কোতে। এক খেজুর আমেরিকা সহ প্রায় অনেক দেশেই পাওয়া যায়। এই মেজুল খেজুর বাদামী রঙের ও বড় আকারের হয়ে থাকে। এই খেজুর ভিটামিন, ফাইবার ও মিনারেল রয়েছে। মেজুল খেজুর হজম শক্তিকে শক্তিশালী ও হৃদরোগ প্রতিরোধ করে এছাড়াও হাড় ও মস্তিষ্কের জন্য অনেক উপকারী এবং এই খেজুর আর খেতেও বেশ সুস্বাদ।
- ডেগলেট নুর খেজুরঃ কিছুটা বাঁকা ও মাঝারি আকৃতির হয় এই ডেগোলেট নুর খেজুর। এই খেজুরটি উৎপাদন করা হয় আলজেরিয়াতে আর বেশ মিষ্টি খেতে এই খেজুরটি। এই খেজুরা রয়েছে জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ফাইবার। এই ডেগলেট নুর খেজুর সূর্যের আলোতে ধরলে ভেতরটা সোনালী রঙের দেখায়। এই খেজুর কে খেজুরের রানী বলা হয়।
এই খেজুরগুলোর পাশাপাশি আমাদের দেশে সৌদি আরবের আম্বর, ইরানের মরিয়ম ও সুকারি খেজুর পাওয়া যায়। তবে ভালো মানের খেজুরটা আপনাকেই বুঝেও চিনে কিনতে হবে। আমার মতে আজওয়া খেজুরটা সবচেয়ে ভালো।
আজওয়া খেজুর দাম
যদি আপনাকে প্রশ্ন করা হয় যে উপকার ও সুস্বাদুর দিক থেকে কোন খেজুরটি সর্বোত্তম। তাহলে অবশ্যই সবার আগে মনে আসবে আজওয়া খেজুরের নাম। এই আজওয়া খেজুর সারা বিশ্বে অনেক জনপ্রিয় তবে কয়েকটি ধরনের ভাগ রয়েছে এই খেজুরের মধ্যে। কিন্তু সব থেকে জনপ্রিয় খেজুরটি হল সৌদি আরবের আজওয়া খেজুর যা বিশ্বের সুপার ফুড হিসেবে জনপ্রিয়।
আজওয়া খেজুর গুনে ভরপুর ও স্বাদের অতুলনীয় যার দাম অন্যান্য খেজুরের তুলনায় একটু বেশি। আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা আজওয়া খেজুরের দাম ইন্টারনেটে বা বিভিন্ন সাইডে জানতে চান তাদের উদ্দেশ্য করে জানাতে চাই যে খেজুরের ধরন অনুযায়ী আজওয়া খেজুরের দাম প্রতি কেজি ৮০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। আজওয়া খেজুর অনেক ভালো মানের এজন্য দামটাও একটু বেশি।
আজওয়া খেজুরের উপকারিতা
খেজুরের মধ্যে সর্বোত্তম ও সবথেকে দামি খেজুরটি হলো আজওয়া খেজুর। এই খেজুরটি দেখতে কালো মাঝারি আকৃতির হয়। এই আজওয়া খেজুর চাষ করা হয় মদিনায়। মদিনার ভূমিকা এই আজওয়া খেজুরের উৎপত্তি ও তার উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন।
যে একজন ব্যক্তি যদি প্রতিদিন সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খায় তাহলে তাকে সেই দিন ২০ এবং জাদু তার কোন ক্ষতি সাধন করতে সক্ষম হয় না। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর এই বাণী দ্বারা আমরা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারছি যে আজওয়া খেজুরের উপকারী গুণ কতটা। এই ফলটি খেলে আমাদের উপর যেমন কোন ধরনের খারাপ প্রভাব পড়তে পারেনা ঠিক তেমনি ছোট থেকে বড় সব ধরনের অসুখ-বিসুখ থেকেও এই আজওয়া খেজুর আমাদের রক্ষা করবে।
হযরত আইসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন যে আজওয়া খেজুর প্রাতঃ কালীন এবং রোগ নিরাময়কারী প্রতিষেধক। আমাদের রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আরো আজওয়া খেজুর সম্পর্কে বলেন আজওয়া খেজুর হলো জান্নাতের ফল এর মধ্যে বিষের নীরাবা রয়েছে (তিরমিজি)।
শুধু আজোয়া খেজুরে না আরো অন্য সব খেজুরে ও অনেক উপকারিতা রয়েছে বলেন পুষ্টিবিদগণ অভিজ্ঞ আলেমগণ। তবে এর মধ্যে উৎকৃষ্ট ফল আজওয়া খেজুর। এই খেজুর ছোট থেকে বড় নানা ধরনের রোগ নিরাময় হিসেবে কাজ করে। এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় তাছাড়াও আমাদের শরীরের নানা রকমের পুষ্টির অভাব পূরণ করে।
খালি পেটে খেজুর খেলে কি হয়
খেজুর অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি ফল যা প্রত্যক মানুষের খাওয়া উচিত। খেজুরা রয়েছে ফাইবার, শর্করা, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা আমাদের সুন্দর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই দরকারী। খেজুরে থাকা ক্যালসিয়াম স্বাস্থের পাশাপাশি দাঁত ও হাড়ের জন্য অনেক প্রয়োজনীয়। প্রাকৃতিক শর্করাতে ভরপুর খেজুর যা আমাদের দেহের শক্তি যোগাতে অনেক সাহায্য করে।
খেজুরে থাকা ফাইবার হজম শক্তির জন্য অনেক দরকারী। খেজুরে আয়রন আছে যা শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করতে অনেক সাহায্য করে। খালি পেটে খেজুর খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। যে উপকারগুলো পাওয়া যায় নিচে পয়েন্ট আকারে দেওয়া হয়েছে।
- রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করে। এ জন্য যারা শরীরে রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন তারা খালি পেটে সকালে খেজুর খেতে পারেন।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ ফাইবার সমৃদ্ধ খেজুর এবং এটি স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক উপকারী। খেজুরে থাকা ফাইভার স্বাস্থ্যের পাশাপাশি হজম ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এজন্য সকালে খালি পেটে খেজুর খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হয়।
- শক্তি বাড়ায়ঃ খেজুরে থাকে প্রাকৃতিক শর্করা যা শক্তি জোগাতে অনেক ভূমিকা রাখে। এজন্য আপনি যদি খালি পেটে খেজুর খান তাহলে শরীরের সারাদিন এনার্জি পাবেন।
- হাড় ও দাঁত শক্ত করেঃ খেজুরে থাকা ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং হাড় ও দাঁতকে করে তুলে শক্ত। সকালে খালি পেটে খেজুর খেলে দাঁত ও হাড় ভালো থাকে।
খেজুরের অপকারিতা
খালি পেটে খেজুর খেলে অপকারিতা খুব বেশি হয় না তবে কিছু দিক থেকে সমস্যা হতে পারে সেগুলো নিচে পয়েন্ট করে দেওয়া হয়েছে।
- ডায়াবেটিসঃ খেজুরে রয়েছে অনেক শর্করা এজন্য যারা ডায়াবেটিক রোগী আছেন তারা খেজুর খাওয়ার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিবেন।
- খারাপ হজমঃ খেজুরে রয়েছে অনেক ফাইবার তাই খারাপ হজম হতে পারে অতিরিক্ত খেজুর খেলে।
- এলার্জিঃ কিছু কিছু মানুষ আছে যাদের খেজুরে এলার্জি থাকে। যদি আপনি খেজুরের প্রতি এলার্জির উপসর্গ দেখেন তাহলে খেজুর থেকে বিরত থাকুন।
সাধারণত খালি পেটে খেজুর খেলে অনেক উপকার হবে কিন্তু অতিরিক্ত খেজুর খাওয়া মোটেও উচিত নয়। তাই নিয়মিত খেজুর খান কিন্তু পরিমাণ মতো।
পুরুষদের জন্য খেজুরের উপকারিতা
পুরুষের জন্য খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে বলেন বিআরবি হসপিটালের পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান যে প্রায় ৮০% চিনিজাতীয় উপাদান আছে পাখা খেজুরে। সকালে খালি পেটে খেজুর খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় এছাড়াও ব্যায়াম করার ৩০ মিনিট আগে চার থেকে পাঁচটা খেজুর খাওয়া ভালো। তাছাড়াও আরো নানান উপকারিতা রয়েছে পুরুষদের জন্য খেজুর খাওয়ার কিছু উপকারিতা নিচে দেওয়া হল।
- ভিটামিন ও পুষ্টিতে ভরপুর খেজুর পুরুষদের কর্ম ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
- ডায়াবেটিস নিরাময়ে খেজুর ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করেন তাই যে সকল পুরুষদের ডায়াবেটিস এর সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন ১-২ টা খেজুর খেতে পারেন। দেখবেন ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
- যদি কোন পুরুষ নিয়মিত খেজুর খায় তাহলে তাদের বান্ধ্যত্ব এর সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তাই পুরুষদের নিয়মিত খেজুর খাওয়া উচিত।
- হার্টের সমস্যা থেকে মুক্তি করে খেজুর তাই যে সকল পুরুষদের হাড়ের সমস্যা রয়েছে তারা দৈনিক খেজুর খাবার চেষ্টা করবেন।
- খেজুরের আরো একটি উপকারী গুণ হলো এটি রক্তচাপ কমায়। তাই যে সকল পুরুষদের রক্তচাপ রয়েছে তারা দৈনিক অন্তত ১-২ টা খেজুর খাবেন।
- খেজুর বহুগুনি উপকারী ফল যা পুরুষদের বার্ধক্য ভালো করতে সক্ষম।
- খেজুর ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমায় তাই প্রতিদিন খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করুন।
শুকনো খেজুর খাওয়ার নিয়ম
অন্যান্য খেজুর এর মত শুকনো খেজুর একইভাবেই খাওয়া যায়। এই খেজুরের জন্য যেকোনো আলাদা নিয়ম মানা লাগবে এমন কোন কারণ নেই। খেজুরে রয়েছে নানা ধরনের পুষ্টিগুণ যেমন পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম ও আশঁ যা শরীর স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো। খেজুর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। অনেকে আবার শুকনো খেজুর পানিতে ভিজিয়ে রেখে নরম করে খেতে পছন্দ করেন।
তবে শুকনো খেজুর দুই থেকে তিনটা সকালে নিয়মিত খেলে শরীরের অনেক উপকার পাবেন এবং এটা আপনার শরীরে শক্তি বাড়াবে। এছাড়াও আপনার শরীরে কোন ধরনের রোগ বাসা বাঁধার সম্ভাবনা অনেক কম। ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণের রাখতে ও আপনি দৈনিক খেজুর খেতে পারেন। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে শুকনো খেজুর অনেক সাহায্য করে এবং যাদের শরীরের রক্তের অভাব রয়েছে তারা এই খেজুর নিয়মিত খেতে পারেন।
খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময়
আপনি দিনে যেকোনো সময় খেজুর খেতে পারেন এমনকি রাত্রে তিনটা বাজেও খেজুর খাওয়া যাবে ও ভর দুপুরেও খেতে পারবেন। খেজুর খাওয়ার উপযুক্ত সময় বলতে কিছু নাই। এক কথায় নির্দিষ্ট কোন সময় প্রয়োজন হয় না খেজুর খাওয়ার জন্য তবে সকালে খেজুর খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় বিশেষজ্ঞদের মতে। প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয়টি খেজুর খাওয়া ভালো অতিরিক্ত খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উচিত নয়।
লেখকের মতামত
প্রিয় পাঠক আজ আমরা এই আর্টিকেলে পুষ্টিগুণে ভরপুর খেজুর ফল সম্বন্ধে আলোচনা করেছি এবং খেজুর সম্পর্কিত সকল বিষয় বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। এমনই সব ইনফরমেটিভ আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। ধন্যবাদ!
ডিজি মাল্টিপ্লাই এর পোস্টে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url