১ মিনিটে ঘুম আসার প্রাকৃতিক উপায়
ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায় কত হলে নরমাল১ মিনিটে ঘুম আসার প্রাকৃতিক উপায় গুলো জানতে যদি আপনি এই পোস্টটি ওপেন করে থাকেন তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারণ এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা কিভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে শোবার খুব অল্প সময়ের মধ্যে ঘুম আসবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে।
এছাড়াও রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম এবং কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় বিষয়গুলো জানতে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণটা পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্র
ভূমিকা
ঘুম মানুষের শরীরের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ যার ঘাটতি হলে মানুষের মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু পরিবর্তন দেখা যায় এবং সঠিক পরিমাণে না ঘুমালে শারীরিক ও মানসিক ভাবে অসুস্থ ও দুর্বল হয়ে পড়ে মানুষ। আমরাই পোষ্টের মাধ্যমে আলোচনা করেছি কিভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় তা নিয়ে। বিষয়টি জানতে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
১ মিনিটে ঘুম আসার উপায়
১ মিনিটে ঘুমাতে চাইলে ঘুমাতে যাবার আগে প্রথমে যা করতে হবে তা হল ইলেকট্রনিক ডিভাইস গুলো ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকতে হবে। মানুষের মাথায় চিন্তার বসবাস, বিছানায় যাওয়ার আগে সকল দুশ্চিন্তা ভুলে গিয়ে ভাবতে হবে আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ। নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করতে হবে এবং মনের মাঝে সন্দেহ পুষে রাখলে কিংবা প্রচুর রাগ নিয়ে ঘুমাতে গেলে কোন টিপসি কাজে আসবে না।
ঘুমোতে যাবার আগে ঘরের বাতিগুলো বন্ধ করে ঘরকে অন্ধকার করতে হবে কারণ অন্ধকারে মানুষ রিলাক্সে ঘুমাতে পারে। তারপর চোখ বন্ধ করে প্রথমে জোরে এবং পরে আস্তে আস্তে নিঃশ্বাস ফেলার চেষ্টা করতে হবে। এইভাবে কয়েক সেকেন্ড ধরে নিঃশ্বাস ফেলা ও ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে। আর ভাবতে হবে কেউ জানে আমাকে হাতছানি দিয়ে ঘুমের দিকে ডাকছে, সুখের ভেলায় গা ভাসিয়ে দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে ঘুমের রাজ্যে।
সকল খারাপ স্মৃতি গুলোকে দূরে ঠেলে দিয়ে সুন্দর সুন্দর স্মৃতিগুলোর কথা ভাবতে হবে। মনে করতে হবে সেই সুখের মুহূর্তকে, সব সময় ভালো কিছু ভেবে ঘুমোতে গেলে দেখবেন খুব অল্প সময়ে ঘুম এসে আপনার চোখে কড়া নাড়বে আর এক থেকে দুই মিনিটের মধ্যেই আপনি ঘুমিয়ে পড়বেন।
আরো পড়ুনঃ গরম জলে মধু খাওয়ার উপকারিতা
দুশ্চিন্তা মাথায় থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারলে মানুষ সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে এবং ফ্রি মাইন্ডে ঘুমাতে গেলে ১ মিনিটেই ঘুমিয়ে যেতে পারে। দুশ্চিন্তা মানুষের চোখের ঘুম কেড়ে নেয়, ভালো ঘুমের একমাত্র ওষুধ হলো দুশ্চিন্তাকে মানুষের মাথায় থেকে ঝেড়ে ফেলা।
নিচে ১ মিনিটে ঘুম আসার কিছু উপায় তুলে ধরা হয়েছেঃ
- ঘুমোতে যাবার আগে ঘরের বাতি বন্ধ করুন।
- বিছানায় শুয়ে সকল দুশ্চিন্তা ভুলে গিয়ে সুন্দর মুহূর্তের কথা চোখ বন্ধ করে ভাবতে থাকুন।
- কয়েক সেকেন্ড নিঃশ্বাস ধরে রাখুন এবং আস্তে আস্তে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করুন।
- নিঃশ্বাস ধরে রাখার এবং ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াটি লক্ষ্য করুন।
- মন থেকে সন্দেহের বীজ মুছে ফেলুন এবং রাগকে নিজের কন্ট্রোলে রাখার চেষ্টা করুন।
- আশা করি এই প্রক্রিয়া গুলো লক্ষ্য করলে আপনাকে এক মিনিটে ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করবে।
ঘুমোতে যাবার আগে যেগুলো করা প্রয়োজনঃ
অনেকেরই সন্ধ্যার সময় চা বা কফি খাবার অভ্যাস রয়েছে যার কারণে চোখের ঘুম কেটে যায়। অনেকে ঘুমোতে যাওয়ার আগে মোবাইল ঘাটাঘাটি করতে থাকে যার জন্য চোখে ঘুম আসে না। ঘুমোতে যাবার আগে এগুলো করা উচিত নয়। সবার উচিত ঘুমাতে যাবার আগে একটু হাটাহাটি করার অভ্যাস গড়ে তোলার।
তাড়াতাড়ি চোখে ঘুম আসার অন্যতম একটি উপায় হল ঘুমোতে যাবার আগে একটু হাঁটাহাঁটি করা। ঘুম মানুষকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একটি মানুষ পর্যাপ্ত ঘুম ছাড়া খুব তাড়াতাড়ি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। সকল মানুষের নিজের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের খুব প্রয়োজন।
প্রাকৃতিক উপায়ে ঘুম আসার উপায়
ঘুম মানুষের শরীর ও মনকে ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অনেকেই তাড়াতাড়ি ঘুম না আসার সমস্যাই ভুগছে। বিভিন্ন কারণে মানুষের চোখে ঘুম আসে না আর এই সমস্যাটির উৎস হলো তাদের অনিয়ম মাফিক জীবন যাপন।
অনেকের পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম হয় না এর জন্য সৃষ্টি করে ক্লান্তি বিষাদময় জীবন। ঘুম না আসার কারণে অনেকেই নির্ভর হয়ে পড়ে ওষুধের উপর আর অতিরিক্ত ওষুধ খাওয়ার ফলে ঘটতে পারে স্বাস্থ্য-হানি। তাই প্রাকৃতিক উপায়ে ঘুম আসার কিছু টিপস আজ আমরা জানবো।
- আমরা পড়তে বসলে যখন পড়া মাথায় ঢুকে না তখন আমরা পড়ার টেবিল থেকে উঠে পড়ি। ঠিক তেমনি বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যাওয়া উচিত আর এমন কিছু কাজ করা উচিত যা আমাদের ক্লান্ত করে দেয় এবং খুব সহজে ঘুম আসে।
- বিছানায় যাওয়ার আগে ধ্যান ও ব্যায়াম করতে পারেন। এতে মন ও শরীর ভালো থাকে এবং এটি ঘুমের জন্য খুব উপকারী। শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম ঘুমোতে বেশি সহায়ক।
- মানুষের ঘুম না আসার প্রধান কারণ হলো দুশ্চিন্তা। দুশ্চিন্তা মানুষকে অসুস্থ করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। দুশ্চিন্তার কারণে মানুষ মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে আর সৃষ্টি করে অস্থিরতা যার কারণে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। তাই আপনার যদি ঘুমের প্রবলেম থেকে থাকে তাহলে দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন।
- যারা অলস পরিশ্রম করতে ভয় পায় তাদের চোখে যদি ঘুম আসতে অসুবিধা হয় তাহলে তারা ঘুমানোর আগে চা কফি না খেয়ে গরম দুধ, মধু, কলা, চেরি খাওয়া উচিত। পাশাপাশি মাথা মেসেজ করলেও ভালো ঘুম হয়।
- মদ্যপান, ধূমপান, মোবাইল, কম্পিউটার এগুলোর নেশা ঘুম দেরিতে আসার প্রদান কারণ। ঘুম না আসার অভ্যাসগুলো ত্যাগ করলে ঘুমোতে গেলে আপনি আপনিই ঘুম চলে আসবে। ছোট ছোট ভালো অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে ঘুম আসতে অনেক সাহায্য করবে। যেমন বই বড় একটি ভালো অভ্যাস। ঘুম না আসলে বই পড়তে পারেন বই পড়তে পড়তে এক সময় আপনার ঘুমে চোখ ঢলে পড়বে।
- অতিরিক্ত আলো ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় তাই ঘুমানোর আগে সকল লাইট অফ করে দিয়ে ঘুমোতে যাওয়া উচিত।
- চা বা কফি পান করলে মানুষের চোখ থেকে ঘুম চলে যায় তাই ঘুমোতে যাওয়ার আগে এইসব পান না করাই ভালো।
- ঘুমোতে যাওয়ার আগে গোসল করে নিতে পারেন এতে শরীর রিলাক্স ফিল করবে যার ফলে ঘুম তাড়াতাড়ি আসতে পারে।
- একটি সুস্থ মানুষের ৬ থেকে ৭ ঘন্টা ঘুমানোর প্রয়োজন। হাজারও ব্যস্ততার মাঝেও একটি মানুষের পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের দরকার আছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর ফলে মন ভালো থাকে ওর প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ঘুমের কারণে শরীরের কোষগুলো আরাম পায় যার ফলে রোগ প্রতিরোধ করার পদার্থ সৃষ্টি হয়।
রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম
রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম হল ইনসমনিয়া যার বাংলায় অর্থ দাড়াই অনিদ্রা। রাতে ঘুম না আসার অন্যতম কারণ হলো দুশ্চিন্তা যা থেকে সৃষ্টি হয় অনিদ্রা রোগের। বিভিন্ন কারণে আমাদের ঘুমোতে দেরি হয়ে যায় যেমন পড়াশোনার কারণে আবার ফোনে কথা বলার কারণে ও হতে পারে।
তাছাড়া অফিসের কাজ বাড়িতে সম্পন্ন করতে গেলেও ঘুমোতে দেরি হয়ে যায়। তখন পরে আর ঘুম আসতে চাই না এই ছাড়াও ঘুম না আসার আরো বেশ কিছু কারণ আছে তা নিচে দেওয়া হল।
- ডিপ্রেশনঃ মানুষ বিভিন্ন কারণে ডিপ্রেশনের শিকার হয়। আর এই ডিপ্রেশনের চাপে চোখে ঘুম আসে না যার কারণে মানুষের ঘুমের ঘারতি হয়। ডিপ্রেশনে ভোগা ব্যক্তিরা মানসিক চাপে থাকে এবং মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে।
- মানসিক চাপঃ মানুষ বিভিন্ন পরিস্থিতির শিকার হয়ে মানসিক চাপে পড়ে যার কারণে ঘুম নষ্ট হয়ে যায়। সে মানসিক চাপ হতে পারে প্রিয়জনকে হারানো, চাকরি হারানো, কাছের কেউ মারা যাওয়া ইত্যাদি।
- স্মার্টফোনের ব্যবহারঃ আমাদের মধ্যে অনেকেই ঘুমোনোর সময় স্মার্ট ফোন টিপাটিপি করি অথবা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিও দেখি আর এতে চোখে ঘুম আসতে বাধা দেয়।
- ধূমপান বা অন্যান্য মাদক দ্রব্য সেবনঃ অনিদ্রার প্রধান কারণ ধূমপান করা। ধূমপান সেবনে বিভিন্ন রোগ ব্যাধের সৃষ্টি করে এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
- পরিবেশগত কারণেঃ আশেপাশে অতিরিক্ত শব্দে গান বাজনা বা গাড়ির শব্দে ঘুমের সমস্যা হতে পারে।
- উচ্চ রক্তচাপঃ অনিদ্রার কারণে উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি হতে পারে যার কারণে ঘুমের ঘটে।
- এলোমেলো জীবনঃ সঠিক জীবন যাপন করতে না পারলে ঘুমের উপর প্রভাব পড়ে যার কারণে ঘুম ভালোভাবে হয় না।
- বিভিন্ন ধরনের ঘুমের ওষুধঃ যাদের চোখে সহজে ঘুম আসে না তারা বাধ্য হয়ে বিভিন্ন ধরনের ঘুমের ওষুধ সেবন করে যার ফলে নানা রোগের শিকার হয় এবং ওষুধ ছাড়া তাদের ঘুম আসতে চায় না।
কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়
ঘুম আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত নতুন ঘুম না হয় তাহলে যেমন মানসিকভাবে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে ঠিক তেমনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় তা নিচে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
আরো পড়ুনঃ মুখের ভিতরে সাদা ঘা কেন হয়
- ভিটামিনবি৬ঃ ভিটামিন বি৬ এর অভাবে ঘুম কম হয়। হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পর ঘুম না হলে মেজাজ ভালো থাকে না। ভিটামিন বি৬ সেরোটোনিন এবং মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে শান্তিময় ঘুম এবং রুচিহীন জীবন যাপন করতে কিছু ভিটামিনযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত যেমন কলা, চিনা বাদা্ম, ওটস, মাছ, মুরগির মাংস ইত্যাদি এই খাবারগুলো খাবার তালিকায় নিয়মিত খাবার চেষ্টা করুন তাহলে ভিটামিন বি এর অভাব পূরণ হবে।
- ভিটামিন ডিঃ ভিটামিন ডি কোষগুলোকে সচল রাখে এবং ঘুম ভালো হতে সাহায্য করে। সূর্যের আলোয় ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করে। তাছাড়াও অনেকগুলো ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার আছে যথা সার্ডিন, ডিমের কুসুম, স্যামন, মাশরুম ইত্যাদি এই খাবারগুলো খাবার তালিকায় রাখলে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পূরণ করবে।
- ভিটামিন ইঃ ভিটামিন ই মানুষের শরীরের কোষকে ক্ষতি হতে দেয় না তাছাড়া স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং ঘুম না হওয়া সমস্যা দূর করে থাকে। ভিটামিন ই যে সব খাবারে পাওয়া যায় তা হলো কুমড়া, বাদাম, মুরিচ, পালং শাক, সূর্যমুখী তেল, লাল বেল, বীজ ইত্যাদি।
- ভিটামিন সিঃ ভিটামিন সি এর অভাবে বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে তার মধ্যে ঘুম না হওয়া রোগটি অন্যতম। এছাড়াও ভিটামিন সি-এর অভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। আমাদের প্রতিদিন খাবারের সাথে যদি এই খাবারগুলো রাখা যায় তাহলে ভিটামিন সি পূরণ হতে পারে যেমন কলা, লেবু, সবুজ মরিচ, পালং শাক, কমলা, ব্রকলি ইত্যাদি।
উপরে দেওয়া এই ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় তাই আমাদের ভালো ঘুমের জন্য অবশ্যই এই সকল ভিটামিনের প্রয়োজনে তো অনেক।
দ্রুত ঘুম আসার উপায়
ঘুমানোর জন্য বিছানায় গেলেন কিন্তু কিছুতেই চোখে ঘুম আসছেনা তখন ক্লান্তি ও চিন্তা নিয়েই সময় কাটাতে হয়। বর্তমানে যেন এই ঘুমের সমস্যাটা প্রায় সকলেরই প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখা দিচ্ছে। কিছু সহজ পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো অবলম্বন করলে ঘুমের সমস্যা দূর হতে পারে। তাহলে চলুন উপায় গুলো জেনে নিন।
- বই পড়ুনঃ ঘুমানোর একটি সহজ উপায় হলো শোবার আগে নিজেকে সম্পূর্ণ তৈরি করে নিন এর পরে ঘরের বাতি অথবা লাইট বন্ধ করে শুয়ে পড়ুন। এরপর বিছানার পাশে অল্প বাতিতে শুয়ে বই পড়ুন দেখবেন এমনি এমনিতেই আপনার চোখে ঘুম আসবে।
- ঘরের তাপমাত্রা ঠান্ডা রাখুনঃ ঘুমোনোর সময় আপনার শোবার ঘরকে ঠান্ডা ও নিরিবিরি রাখার চেষ্টা করুন। বৈজ্ঞানিকরা গবেষণা করে জানতে পেরেছে যে মানুষের শরীরের তাপমাত্রা বেশি বৃদ্ধি পায় ঘুমানোর সময়। এজন্য ঘরের তাপমাত্রা যত সম্ভব ঠান্ডা রাখা যায় ততটুকু ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করুন এতে আপনার খুব ভালো ঘুম হবে।
- নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করুনঃ প্রতিদিন অবশ্যই একটি নির্ধারিত সময়ে ঘুমোনোর চেষ্টা করবেন। ফলে আপনার এই ঘুমের সমস্যা থেকে অনেকটাই রেহাই পাবেন। ঘুম আপনার শুধু শারীরিক উন্নতি আনবে না এর সাথে আপনার মানসিকভাবেও অনেক সুফল পাবেন। ঘুমানোর জন্য প্রতিদিন এক সময় নির্ধারণ করলে সেই সময়ে ঘুমানোর জন্য ঝিমঝিম ভাব এমনিতেই চলে আসবে। এর ফলে আপনি খুব সহজে ঘুমিয়ে পড়তে পারবেন।
- ঘুমের আগে গরম দুধ পান করাঃ আগের যুগের মানুষেরা মনে করতেন যে ঘুমানোর আগে গরম দুধ খেলে নাকি ঘুম ভালো হয়। এই কথাটা এখন বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত এবং বিশেষজ্ঞদের মতে ঘুমোনোর আগে হালকা গরম দুধ খেলে মানসিকভাবে প্রশান্তি লাগে এবং সারা রাতের সুন্দরও ঝরঝরে একটা ঘুম হয়।
- স্বাস্থ্যকর খাবারঃ শরীরের সকল রোগব্যাধির ক্ষেত্রে পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। আপনি হয়তো এই কথাটা শুনে অবাক হবেন যে ভালো ডায়েট করার সাথে ঘুমের সম্পর্ক আছে। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে জানতে পেরেছে যে শরীরের চাহিদা অনুযায়ী ফলমূল ও শাকসবজি খেলে ঘুমের সমস্যা দূর হতে পারে। পুষ্টিকর খাবার খেলে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম চাহিদা পূরণ হয়। তাছাড়া ডায়েট সঠিক হলে শরীরের ট্রিপটোফেন বৃদ্ধি পায় বা সঠিক সময়ে চোখে ঘুম আসে ও সঠিক সময় জাগ্রহ হতে সাহায্য করে।
উপরের উল্লেখিত কাজগুলো যদি আপনি ঠিক মত করতে পারেন আশা করছি এরপরে আপনার আর ঘুমের সমস্যায় করতে হবে না।
রাতে ঘুম না হলে করনীয়
ঘুম খুব গুরুত্বপূর্ণ মানসিক ও দৈহিক প্রশান্তির জন্য। মন মেজাজ অতিরিক্ত খিটখিটে হয়ে যাই ভালো ঘুম না হলে। একটানা যদি দীর্ঘদিন ঘুম না হয় তাহলে শরীরে নানা অসুখ বা রোগ বৃদ্ধির বাসা বাঁধে। রাতে ঘুম না হলে কি কি করণীয় তা নিচে কর্মানুসারে সুন্দরভাবে উপস্থাপনা করা হয়েছে।
- রাতে ভালোমতো ঘুম না হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হলো ঘুমানোর আগে নিকোটিন জাতীয়, কফি, গ্রিন টি বা চা পান করা। কাজে সারাদিন ব্যস্ত থেকে আপনি যদি মনে করেন যে এগুলোর মধ্যে কোন একটা খেতে আপনি হয়তো একটু রিলাক্স হবেন তাহলে আপনি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা করছেন। এই চা,কফি, গ্রিন টি খেলে বরং আপনার রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাবে এবং এটি আপনার ঘুম না আসার কারণ হবে।
- যদি আপনি রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমোতে চান তাহলে ঘুমানোর জায়গাটা তুলনামূলক ঠান্ডা নির্বাচন করুন। শোবার ঘরে পরিমাণমত আলো-বাতাস না ঢুকলে ঘুমের জন্য সমস্যা হতে পারে। ঘুমোনোর সময় যদি বিছানা ও বালিশ বা ঘর গরম থাকে তাহলে সেটা ঘুমানোর জন্য উপযুক্ত জায়গা নয়। এজন্য ঘুমানোর বিছানা পরিষ্কার পরিপাটি ও আলো বাতাস পূর্ণ ঘর নির্বাচন করুন এতে আপনার ঘুম সুন্দরও ঝরঝরে হবে।
- রাতে ঘুম না আসলে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিতে পারেন। অনেকে আছেন যারা কিনা মনে করেন যে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করলে নাকি শরীর ঠান্ডা থাকে ও সহজে ঘুম চলে আসে কিন্তু এটি অনেক বড় ভুল ধারণা। ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করলে তা কিছুক্ষণের জন্য ঠান্ডা থাকে আর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করলে সেটা অনেক সময় পর্যন্ত শরীরের ঠান্ডা রাখতে পারে।
- ভালো নিদ্রার জন্য ১৫ মিনিট অন্তত দিনে ব্যায়াম করুন। বিশেষজ্ঞদের মতে দিনের শুরুটা ব্যায়াম দিয়ে করলে শরীরকে সক্রিয় ঝরঝরে করে তুলে। ব্যায়াম করলে রাতে ঘুমটাও ঠিকমতো হয় তাছাড়াও আপনার যদি দুপুরের খাবার পর ঘুমানোর অভ্যাস থাকে তাহলে আজকে পরিবর্তন করুন কারণ দুপুরের ঘুম আপনার রাতের ঘুমকে নষ্ট করে দিতে পারে।
- ৩০ মিনিট করে প্রতিদিন সূর্যের আলোয় থাকুন। এটা আপনাকে রাতের ও দিনের পার্থক্য বুঝতে সাহায্য করবে। আপনার মস্তিষ্ক যদি রাত দিনের পার্থক্য বুঝতে পারে তাহলে আপনার এমনিতেই রাতে ঘুম আসবে।
ঘুম বৃদ্ধির খাবার
মানুষের শরীরের জন্য ঘুম অপরিহার্য। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম মানুষকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে পারে। ঘুম মানুষের মস্তিষ্ককে সুস্থ রেখে মৃত্যু ঝুঁকি কমায় এবং সকল রোগ থেকে মুক্ত রাখে। আধুনিক জীবন ব্যবস্থাই মানুষ বিভিন্নভাবে ব্যস্ত থাকে যার ফলে শরীর ক্লান্ত থাকলেও সহজে ঘুম আসে না।
কেউ ব্যস্ত থাকে মোবাইলে কেউ আবার কম্পিউটারে এমনই কিছু বদ অভ্যাসের কারণে মানুষের ঘুম চোখ থেকে উড়ে যায়। সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রমের পর যদি ভালো ঘুম না হয় তাহলে শরীরে বাসা বাদে অনেক ধরনের রোগ এবং এই ঘুমের ঘাটতি থাকার কারণে মেজাজ খারাপ থাকতে পারে।
ঘুমের জন্য আমরা কত রকমের পদক্ষেপ নিয়ে থাকি কিন্তু আমাদের রাতের খাবারের উপর নজর দিয়া প্রয়োজন কারণ অনেক অংশেই খাবারের উপর ঘুম নির্ভর করে যা আমরা লক্ষ্য করি না। এমন কিছু খাবার আছে যা আমাদের ভালো ঘুম আসতে সাহায্য করে। নিচে কিছু ঘুম বৃদ্ধির খাবার এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
- কলাঃ খাবারের তালিকায় কলা রাখা প্রয়োজন কারণ কলা শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক করে তাছাড়া কলাতে প্রচুর ভিটামিন থাকে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ করে এবং এই কলা ঘুম আসতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- বাদামঃ বাদাম স্বাস্থ্যর জন্য খুবই উপকারী। বাদাম বুদ্ধি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, সচল রাখে, মাংসপেশিকে শিথিল করে এবং ঘুম আসার জন্য শরীরকে প্রস্তুত করে।
- মধুঃ আমরা অনেকেই চায়ের সাথে মধু খেতে পছন্দ করি। মধুর কার্যকারিতা অনেক মধু মস্তিষ্কে মেলাটোনিন ছড়িয়ে দেয়, ঘুমের জন্য বেশ কার্যকরী মধু।
- সাদা ভাতঃ আমরা বাঙ্গালীরা ভাত খেতে পছন্দ করি ভাত আমাদের প্রধান খাদ্য। সাদাভাতে অনেক ভিটামিন আছে সাদা ভাত খেলে ঘুম আসতে সহজ হয়।
- দানাদার শস্যঃ দানাদার খাদ্য খেলে ঘুম ভালো আসতে পারে। দানাদার খাদ্য যেমন গম শিম কালাই এ ধরনের খাবার ঘুমের জন্য উপকারী।
- মিষ্টি আলুঃ মিষ্টি আলু মানুষের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। মিষ্টি আলু শরীরের স্নায়ু ও মাংসপেশী শান্ত রাখতে সাহায্য করে যার কারণে ঘুম ভালো হয়।
- ওটসঃ ওটস এ স ভিটামিন অ্যামিনো খনিজ পচুর থাকে যার কারণে ঘুম তৈরি করা হরমোনকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে সেই সাথে ইনসুলিন তৈরি করে থাকে।
কি খেলে রাতে ঘুম আসে না
কিছু মানুষ আছে যারা প্রায় সময়ে অনিদ্রায় ভুগছেন। তারা হয়তো ঘুম না আশাকে সমস্যা বলে দায়ী করছেন। তারা হয়তো জানে না যে তাদের রাতের খাবার রাতে ঘুম না হওয়ার সমস্যা হতে পারে। এমন কিছু শাকসবজি বা খাবার আছে যেগুলো বিশেষজ্ঞরা রাতে খেতে বারণ করে থাকেন।
যদিও খাবারগুলি শরীরের জন্য উপকারী কিন্তু ঘুমের জন্য মোটেও সঠিক নয়। এজন্য এসব খাবার রাতের খাবারের তালিকায় বিশেষজ্ঞরা রাখতে নিষেধ করেন। নিচে কি কি খাবার খেলে রাতে ঘুম আসে না তা উল্লেখ করা হয়েছে।
- টমেটোঃ টমেটোতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন "সি" আছে এজন্য রাতে ভালোমতো হজম হয় না। এর কারণে আপনার ঘুমের ওপর অনেক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মূলত টাইবামিনের জন্য এটি এক ধরনের অ্যাসিড যা মস্তিষ্কের কার্যকলাপ বাড়িয়ে দেয় ও ঘুম আসতে ব্যাঘাত ঘটায়।
- চকলেটঃ চকলেট যতই দারুণ খাবার হোক না কেন ঘুমোতে যাবার আগে একদম চকলেট নয়। কারণ চকলেটে হাই ফ্যাট থাকার কারণে ঘুমের জন্য অনেক ক্ষতিকর। চকলেটে ডার্ক ক্যাফেইন থাকে এজন্য এটি ঘুমোনোর আগে খেলে ঘুম আসতে অনেক দেরি হয়।
- ব্রকলিঃ স্বাস্থ্যের জন্য ব্রকলি অনেক উপকারী কিন্তু ব্রকলি রাতে খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলা উচিত। ব্রকলিতে থাকা ফাইবার হজম করতে অনেক সময় লাগে এর কারণে রাতে ঘুমোতে সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও রাতে ব্রকলি খেলে এসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। এজন্য রাতে ব্রকলি সবজি না খাওয়াই ভালো।
- আইসক্রিমঃ আইসক্রিম খেতে পছন্দ করে না এমন মানুষ মনে হয় নেই বললেই চলে। তবে আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে এটি যথেষ্ট কারণ আইসক্রিম এ প্রচুর পরিমাণে চিনিও হাইফ্যাট থাকে। তাড়াতাড়ি হয় না আইসক্রিম তাই মিষ্টি বা আইসক্রিম খাবার ঘুমানোর আগে এড়িয়ে চলুন।
- দইঃ স্বাস্থ্যের জন্য দই অনেক উপকারী একটি খাবার তবে বিশেষজ্ঞদের মতে রাতের খাবারের তালিকায় দই রাখাটা উচিত নয়। দুইয়ে গরম প্রভাব থাকার কারণে হজম হতে অনেক সময় লাগে এর কারণে আপনি রাতে অস্থির বোথ করতে পারেন। তাছাড়াও আয়ুর্বেদের মতে রাতে দই খেলে বুকে কফ জমতে পারে।
- কফিঃ অসংখ্য উপকার আছে এই কফিতে। আপনার যদি মাথাব্যথা থাকে তাহলে এক কাপ কফি মুহুর্তেই আপনার মাথা ব্যথা দূর করে দিবে। তবে সারাদিনে বেশি পরিমাণে কফি খেলে বা ঘুমানোর আগে কফি খেলে আপনার ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কপিতে থাকা অ্যাসিডিক উপাদান আপনার ঘুম তাড়িয়ে দেয় ও আপনার মস্তিষ্ককে সজাগ রাখে।
- গ্রিন টিঃ গ্রিন টি এর বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা রয়েছে যার কথা বলে শেষ করা যাবে না। তবে আজকে এর অপকারী দিক শুনুন। যদি আপনি ঘুমোনোর আগে এক মগ গ্রিন টি পান করেন সেই রাতে আর আপনাকে ঘুমাতে হবে না এমনিতেই সেই রাত কাটিয়ে দিতে পারবেন। তার জন্য দায়ী থাকবে গ্রিন টিতে থাকা রাসায়নিক উপাদান। তাই ঘুমানোর আগে মোটেও গ্রিন টি খাবেন না।
- মসলাযুক্ত খাবারঃ বেশি পরিমাণে মসলাযুক্ত বা ঝাল যুক্ত খাবার খেলে হজমের সমস্যা দেখা দেয় যার ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ হারায় যার কারণে ঘুম ভালো হয় না। বদ হজমে অশান্তি বেড়ে যায় তখন সহজে ঘুম আসে না।
- চর্বিযুক্ত খাবারঃ চর্বিযুক্ত খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর তার সাথে হজমের সমস্যা সৃষ্টি করে যার কারণে বুক ব্যথা ও জালা পুরা করতে পারে। শরীর ভালো না থাকলে ঘুম আসতে দেরি হবে এটাই স্বাভাবিক তাই আমাদের চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করা উচিত।
- অ্যালকোহলঃ অ্যালকোহল ঘুমের শত্রু এটা প্রথমে পান করলে ঘুম হতে পারে কিন্তু আস্তে আস্তে ঘুম কেড়ে নেয়। অ্যালকোহল যেমন শরীরের ক্ষতি করে তেমনি ঘুমের ও ব্যাপকভাবে ক্ষতি করে থাকে।
- অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবারঃ অনেক মিষ্টি জাতীয় খাবার ঘুম নষ্ট করতে পারে। চিনিযুক্ত খাবার শরীরের উত্তেজনাকে বাড়িয়ে দেয় এই অশান্তির কারণে ঘুম আসতে দেরি হয়।
- শসাঃ শসা পরিমাণে বেশি খেলে পেট পরিতৃপ্তি ও ভরা হয় তবে রাতে এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন কারণ শসা খেলে আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে এবং আপনার পেট ফুলে যেতে পারে।
নিয়মিত ঘুমাতে চাইলে রাতের খাবারের মধ্যে থেকে এইসব খাবারগুলি দূরে রাখুন এবং পুষ্টিকর খাবার খান। এতে আপনার ঘুম সুন্দর মত হবে ও মন ফুরফুরে থাকবে। আর একটি কথা না বললেই নয় রাতে ঘুমানোর আগে রাতের খাবারটা অন্তত এক থেকে দুই ঘন্টা আগে খান এতে আপনার হজমটাও সহজ হবে এবং ঘুমটাও ভালো হবে।
রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপকারিতা
মানুষকে সুস্থ রাখতে ঘুমের খুব প্রয়োজন। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের মাধ্যমে একটি মানুষ শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে পারে। আমরা যদি ভালোভাবে ঘুমোতে না পারি তাহলে আমাদের মস্তিষ্ক ভালোভাবে কাজ করতে চাই না এবং মেজাজও খেটমিট হয়ে থাকে এছাড়াও বিভিন্ন রোগে আমরা আক্রান্ত হয়ে পড়ি।
সকল রোগ ব্যাধি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চাইলে ঘুমের প্রয়োজনে তো অনেক। শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠা উচিত আবার রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানো উচিত। তাড়াতাড়ি ঘুমানোর উপকারিতা গুলো নিতে দেওয়া হয়েছে।
- রাতে ঘুম না হলে যে রোগ হতে পারে তা হল কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, রক্তচাপ এর মত কঠিন সব রোগ হতে পারে। আর রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমালে এ রোগগুলো থেকে বাচা সম্ভব।
- ঘুমোতে না গেলে শরীরে রোগের বাসা বাঁধে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে রাতে ঘুম ভালো হলে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলতে হলে পর্যাপ্ত ঘুমের খুব দরকার।
- রাত জাগার অভ্যাসের কারণে সৃষ্ট হয় বদহজমের। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমালে এই সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়।
- একটি সুস্থ মানুষের রাতে ৮ ঘন্টা ঘুমালে যথেষ্ট। ঘুমের ফলে মানসিক বিকাশ ঘটে।
- ভালো ঘুমের কারণে মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করে এবং মেজাজ ভালো থাকে আর সকল কাজ শান্ত ভাবে করা সম্ভব হয়।
- রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমোতে পারলে শরীরের ক্লান্তি দূর হয় সারাদিন সকল কাজের মন বসে।
- রাতে জলদি ঘুমাতে যাওয়ার কারণে নিজেকে সকল দুশ্চিন্তা থেকে দূরে রাখা যায় এবং মনকে শান্ত করা যায়।
কফি খেলে কি ঘুম কম হয়
অনেকেরই ঘুম থেকে উঠে প্রথমে চা বা কফি খাওয়ার অভ্যাস। আমাদের ধারণা চা বা কফি খেলে শরীর ফুরফুরে হয় একঘেয়েমি কাটানো যায়। অনেকের ধারণা চা খেলে ঘুম আসে আর কফি খেলে ঘুম কেটে যায়। আবার অনেকে মনে করে কপি খেলে ক্লান্তি ভাব কাটতে সাহায্য করে এবং সহজে ঘুম আসে না।
ক্যাফেইন নামের পদার্থ মেশানো থাকে চাপা কফের মধ্যে সেই কারণে ঘুমের ভাবটা তাড়াতাড়ি কাটতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কফি খাওয়ার কারণে অভ্যাসে পরিণত হয়। যার ফলে মানুষের শরীর থেকে ক্লান্তি ভাব দূর করে শরীরকে ফুরফুরে রাখে কিন্তু যখন এর রাস কেটে যায় তখন আবার চোখে ঘুম আসে।
এই ক্যাফেইন ঘুম কাটানোর জন্য খেতে গিয়ে শরীর খারাপ হতে পারে। বেশি মাত্রা কফি খেলে তা শরীরের জন্য হানিকারক হয়ে দাঁড়াবে। অতিরিক্ত কফি পান করলে তা অভ্যাসে পরিণত হবে যার স্বাস্থ্যর স্বাভাবিক প্রক্রিয়া কেড়ে নিতে পারে এবং নানা রোগবিধি শরীরে বাসা বাঁধতে পারে।
লেখকের মতামত
প্রিয় পাঠক আজ আমরা এই আর্টিকেলে কিভাবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে প্রাকৃতিক উপায়ে ঘুম আসা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আপনাদের যাদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে তারা আমাদের আজকের এই পোষ্টের উল্লেখিত বিষয়বস্তুগুলো মেনে চললে আশা করি এই সমস্যা থেকে মুক্ত পেয়ে যাবেন। আমরা স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন আর্টিকেল পোস্ট করে থাকি এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। এমন ধরনের সব পোস্ট পেতে নিয়মিত আমাদের পাশে থাকুন। ধন্যবাদ!
ডিজি মাল্টিপ্লাই এর পোস্টে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url