ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায় কত হলে নরমাল

হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় তা বিস্তারিত জানুনডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায় কত হলে নরমাল, ভরা পেটে ও খালি পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল সহ ডায়বেটিসের লক্ষণ ও ডায়াবেটিস কমানোর উপায় এই প্রশ্নের উত্তরগুলো যারা জানতে চান তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট।
ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায়
ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায়
কারণ এই পোস্টের মাধ্যমে এই সকল প্রশ্নের উত্তর বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। তাই এ সকল প্রশ্নের উত্তর গুলো পেতে পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্র

ভূমিকা

ডায়াবেটিস বর্তমান সময়ে প্রায় মানুষেরই হচ্ছে। আপনার যদি ডায়াবেটিস হয়ে থাকে এবং আপনি যদি ডায়াবেটিসের হাত থেকে রেহাই পেতে চান তাহলে আপনার দৈনন্দিন জীবনের কিছু পরিবর্তন আনতে হবে এবং যথাযথ নিয়ম মেনে চলতে হবে। আমরাই পোস্টটি আলোচনা করেছি ডায়াবেটিসের মাত্রা কত থাকা স্বাভাবিক,কত হলে সমস্যা,ভরা পেটে ও খালি পেটে কত থাকলে নরমাল,লক্ষণ ও কমানোর উপায়। বিষয়গুলো জানতে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায়

ডায়াবেটিস একটি মারাত্মক রোগ যে রোগ মানুষের শরীরে দীর্ঘ সময় ধরে অবস্থান করে এবং মহামারী আকার ধারণ করে। ডায়াবেটিস একটি এমন কঠিন রোগ যে রোগের সঠিক চিকিৎসা না করলে মানুষের শরীরের গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করে। ডায়াবেটিসের মাত্রা যখন বেশি বেড়ে যায় তখন মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়। ডায়াবেটিকস যেকোনো বয়সের মানুষের হতে পারে। এখন বাচ্চাদেরও ডায়াবেটিস হতে দেখা যায়।

ডায়াবেটিস হলে মানুষ মারা যায়, মানুষের শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বাঁধে। ডায়াবেটিসের সাথে অন্যান্য রোগ থাকলে মৃত্যু ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় যেমন কিডনি রোগ,হৃদরোগ,স্নায়ুর ক্ষতি, দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া,স্টোক ইত্যাদি।
সবচেয়ে বেশি জটিলতার আকার ধারণ করে হাইপো গ্লাইসেমিয়া (নিম্ন রক্তে শর্করা) বা কেটো অ্যাসিডোসিস (রক্তে বিষাক্ত এসিডের জমাট) যদি তাড়াতাড়ি চিকিৎসা না করা হয় তাহলে মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। মানুষের শরীরের রক্তের মধ্যে যদি শর্করা পরিমাণ বেশি থাকে তবে ইনসুলিন নিতে হবে।

ভরা পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল

ভরা পেটে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করার পর যদি ডাইয়াবেটিস ৫.৭ এর নিচে থাকে তাহলে সেটিকে নরমাল বলা হয়। তবে ডায়াবেটিক যদি .৬.৫ এর উপরে থাকে তাহলে ডায়াবেটিস আছে বলে মনে করা যায়। ডায়াবেটিস ৫.৭ থেকে ৬.৫ এর মধ্যে থাকলে ডায়াবেটিস চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ চিকিৎসার ব্যবস্থা না নিলে ডায়াবেটিসের মাত্রা বেড়ে ডায়াবেটিস জটিলতার আকার ধারণ করতে পারে। 
অনেক মানুষ জানতে চাই খাওয়ার পর ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল থাকে? এবং অনেকেই গুগলে সার্চ করে বিষয়টা জানার চেষ্টা করেন। আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়। খাওয়ার পর ডায়াবেটিস ৫.৭ এর নিচে থাকলে নরমাল।

খালি পেটে ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল

ডায়াবেটিস অর্থ রক্তের শর্করার মাত্রা পরিমাণের চেয়ে বেশি থাকা। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে ডায়াবেটিস মাত্রা কত হলে চিন্তার বিষয় হতে পারে। এই প্রয়োজনে প্রশ্নের উত্তর দিলেন বিখ্যাত চিকিৎসক ডাক্তার সুমন মিত্র। ডায়াবেটিসের মাত্রা কত হলে ভয়ের কারন হতে পারে তা নির্ভর করে কার কেমন ডায়াবেটিস তার ওপর। কারণ অনেকেই নতুন ভাবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকে। 
তাদের জন্য আলাদা মাপকাঠি। আর যারা পুরাতন রুগী তাদের জন্য আরেকরকম মাপকাঠি। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে ওষুধ খাবার পর ডায়াবেটিক কেমন অবস্থায় আছে। খালি পেটে ডাইবেটিসের মাত্রা যদি ৮০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে,আবার খাওয়ার দুই ঘন্টা পর ডায়াবেটিসের মাত্রা যদি ১৪০ এর মধ্যে থাকে তাহলে চিন্তার কোন কারণ নাই। যারা অনেকদিন ধরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে আছে তাদের বাসায় একটি গ্লুকোমিটার রাখা দরকার।

চিকিৎসক সুমন মিত্রের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিদিন কয়েকবার ডায়াবেটিস মাপতে হবে। দেখতে হবে ডায়াবেটিসের পরিমাণ ঠিক আছে কিনা যদি দেখা যাই কারো খালি পেটে ডাইবেটিসের মাত্রা ৭০ আর ভরা পেটে ডাইবেটিসের মাত্রা ৪৭০ হয় তাহলে বুঝতে হবে তার ডাইবেটিকস কন্ট্রোলে নেই। সাধারণভাবে খালি পেটে ডায়াবেটিসের মাত্রা ৮০ থেকে ৯০ আর ভরা পেটে ১৩০ থেকে ১৪০ বা ১৫০ এর মধ্যে থাকে।

ডায়াবেটিস কত হলে ইনসুলিন নিতে হয় ?

এখন দেখা যায় প্রায় মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে থাকে। আজকে আমরা আলোচনা করব ডায়াবেটিস কত হলে ইনসুলিন নিতে হয় সেই সম্পর্কে। সাধারণ টাইপ-১ ক্যাটাগরি ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসার জন্য ইনসুলিন নিতে হয়। কারণ এ ধরনের ডায়াবেটিস রোগীর শরীরে কোনরকম ইনসুলিন উৎপাদিত হয় না। সেই কারণে ডাইবেটিকস রোগীর ইনসুলিন নিতে হয়।

আরেকদিকে টাইপ-২ কোন ডায়াবেটিস রোগীর বেশি মাত্রায় ডায়াবেটিস ধরা পড়লে তখন প্রথম অবস্থায় ইনসুলিন দিয়ে ডায়াবেটিস কম করা হয় এবং পরে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসলে খাওয়ার ওষুধ দিয়ে থাকে ডাক্তার। কারো রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ .১০ শতাংশ এর বেশি হলে ইনসুলিন নিতে হয়।

তাছাড়া গর্ভবতী,কিডনির রোগী,যকৃতের রোগী,জন্ডিসের রোগী,হার্টের রোগীদের জন্য ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে ইনসুলিন। কারণ তাদের জন্য ওষুধ খাওয়ার সম্ভব হয় না।

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস কত হলে ইনসুলিন নিতে হয়

ডায়াবেটিকস একটি কমান্ড রোগ। এখন অনেক মানুষেরই এই রোগ হয়। গর্ভকালীন সময়ে বেশিরভাগ মহিলা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়। গর্ভকালীন সময়ে খালি পেটে ডায়াবেটিসের পরিমাণ ৬ এর বেশি এবং ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ ও খাওয়ার দুই ঘন্টা পর যদি ডায়াবেটিসের পরিমাণ ৮ এর বেশি কিংবা তার থেকেও বেশি হয়ে যায়।

তাহলে গর্ভবতী মায়ের শরীর ভালো থাকলে ইনসুলিন দিতে হবে। আর যদি গর্ভবতী মা অসুস্থ হয়ে থাকে বা শরীরের কোন সমস্যা থাকে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডায়াবেটিসের লক্ষণ গুলো কি কি

ডায়াবেটিসের যে সব লক্ষণ দেখা যায় সেই লক্ষণ গুলো নিচে দেওয়া হল।

  • ঘনঘন প্রসাদ লাগবে
  • ঘন ঘন পিপাসা লাগবে
  • অনেক পরিমাণে ক্ষুধা লাগে
  • ওজন বেড়ে যায়
  • একটুতেই অনেক ক্লান্ত অনুভব হয়
  • শুষ্ক ত্বকে চুলকানি
  • চোখে ঝাপসা দেখা
  • ঘন ঘন সংক্রমণ
  • অনেক ক্ষেত্রে ওজন কমে যেতে পারে
  • শরীরের কোন অংশ কেটে গেলে বা ঘা হলে ভালো হতে চাই না

ডায়াবেটিস কমানোর উপায়

প্রতিবছর ডায়াবেটিসের কারণে অধিকাংশ মানুষ মারা যায়। যা গড়ে ৫৭ লক্ষ মানুষে দাঁড়িয়েছে। ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষ মারা গেছে। তাই ডায়াবেটিস রোগকে অবহেলা না করে ডায়াবেটিস কমানোর উপায় জেনে নেওয়া খুবই প্রয়োজন। এখনো ডায়াবেটিকস প্রতিরোধের কোন উপায় ভালোভাবে না জানা গেলেও যে কাজগুলো করলে ডায়াবেটিস কমানো সম্ভব সেগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন করে শরীরকে ভালো রাখা যায়। এবং প্রতিনিয়ত ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম করে ডায়াবেটিস কমানো যায়। অনেকেই জানেনা শরীর সুস্থ রাখার জন্য ডায়াবেটিকস কমানোর উপায় কি। তাদের জন্য নিচে উপায় গুলো দেওয়া হল।

  • রাত না জাগা
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা
  • পরিমিত ঘুমানো
  • ভেজাল খাদ্য পরিহার করা
  • কোমল পানীয় পরিত্যাগ করা
  • ভরে ওঠা
  • মদ্যপান,নেশা ও ধূমপান ত্যাগ করা
  • ওজন সামঞ্জস্য রাখা
  • চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা
  • সময় মতন খাবার গ্রহণ করা
  • চর্বীয় ফ্যাট জাতীয় খাদ্য পরিহার করা
  • খাদ্য ফাঁস নিয়ন্ত্রণ রাখা

লেখক এর মতামত

প্রিয় পাঠক, আশা করি আমাদের আজকের ডায়াবেটিকস বিষয়ের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে এবং আশা করি এখান থেকে প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য আপনারা জানতে পেরেছেন। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিষয়ক পোস্ট করে থাকি। এমনই আরো স্বাস্থ্য বিষয়ক পোস্ট পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজি মাল্টিপ্লাই এর পোস্টে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url