কোন ভিটামিন চুল গজাতে সাহায্য করে
শীতের জন্য কোন ফেসওয়াস ভালোকোন ভিটামিন চুল গজাতে সাহায্য করে,নতুন চুল গজাতে কতদিন সময় লাগে সহ ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুলে ব্যবহারের নিয়ম এছাড়াও চুলের যত্নের আরো বিভিন্ন বিষয়াদি এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে।
তাই আপনার যদি চুলের যত্নের বিষয় ও কিভাবে চুল লম্বা হয়? কত দিনে লম্বা হয়? কোন ভিটামিনের ঘাটতির অভাবে চুল পড়ে এই সকল বিষয়ে জানতে চান তাহলে আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ এই আর্টিকেলে চুলের বিভিন্ন সমস্যার ঘরোয়া সমাধান গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
পোস্ট সূচিপত্র
- ভূমিকা
- নতুন চুল গজাতে কীভাবে মাথায় পেঁয়াজের রস ব্যবহার করবেন
- নতুন চুল গজাতে কতদিন সময় লাগে
- কপালে নতুন চুল গজানোর উপায়
- সাত দিনে বিশ ইঞ্চি চুল লম্বা করার উপায়
- কোন ভিটামিন চুল গজাতে সাহায্য করে
- কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায়
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা ও অপকারিতা
- ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুলে ব্যবহারের নিয়ম
- লেখক এর মতামত
ভূমিকা
চুল পড়া রোধ ও চুলকে ভালো রাখতে চুলের প্রতি যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। চুলের নানা ধরনের সমস্যা হওয়ার মূল কারনই হচ্ছে সঠিকভাবে চুলের কেয়ার না করা। তাই আজকের এই আর্টিকেলে আমরা চুলের যত্নের বিভিন্ন বিষয়ে দিয়ে আলোচনা করেছি যা আপনার চুলের সুস্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। ঘরোয়া উপায় চুলের যত্নের সকল বিষয়াদি গুলো জানতে এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত করুন।
নতুন চুল গজাতে কীভাবে মাথায় পেঁয়াজের রস ব্যবহার করবেন
যদি আপনার দিন দিন চুল পাতলা হয়ে যাই বা চুল ঝরে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। তাহলে আপনার চুলে পিয়াজের রস লাগান। এক গবেষণায় জানা গেছে যে, উপকারী উপাদান আছে পেঁয়াজের রসে যা চুল পড়া রোধ করে এবং চুলের গোড়া শক্ত করে। তাছাড়াও পেঁয়াজের রসের আরো নানা ধরনের গুণ রয়েছে। নতুন চুল গজাতে ও চুল পেকে যাওয়ার ঝুঁকি কমাতে এই পেঁয়াজের রস দারুন কাজ করে।
পিয়াজে আছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা মাথার চুলের গোড়াই হাইড্রোজেন আর অক্সাইড এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এবং চুল পড়ার ঝুঁকি কমায়। যেভাবে চুলে পিয়াজের রস লাগাবেন তা নিচে আলোচনা করা হয়েছে।
১.প্রথমে একটা পাত্রে পিয়াজের রস ছেকে বার করে নিন। এরপরের দুই চামচ পাতিলেবুর রসের সাথে তিন চামচ পেঁয়াজের রস নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে চুলে ও মাথার মাসে ভালোভাবে মিশ্রণটি লাগিয়ে রাখুন। ৩০ মিনিট পরে মাথার চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।
আরো পড়ুনঃ গরম জলে মধু খাওয়ার উপকারিতা
২.এক টেবিল চামচ মধুর সাথে দুই চামচ পেঁয়াজের রস একসাথে মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন অথবা তিন চামচ পেঁয়াজের রসের সাথে পাঁচ চা চামচ নারিকেল তেল ও এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে 15 থেকে 20 মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।
৩.দুই চা চামচ অ্যালোভেরা জেল ও তিন চামচ পেঁয়াজের রস মিশিয়ে চুলে ভালোভাবে মাখিয়ে রাখুন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
সবশেষে মাথায় একটা চিন্তা আসে যে শ্যাম্পু করে পেঁয়াজের গন্ধ যাবে তো? আপনি নিশ্চিন্তে পেঁয়াজের প্যাক চুলে লাগান। যদি শ্যাম্পু করেও চুল থেকে পিয়াজের গন্ধ না যাই তাহলে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার এক কাপ পানিতে মিশিয়ে মাথার চুল ধুয়ে ফেলুন তারপর দেখবেন যে আর গন্ধ থাকবে না।
নতুন চুল গজাতে কতদিন সময় লাগে
ঘরোয়া উপায়ে নতুন চুল গজাতে কিছু টিপস নিচে দেয়া হয়েছে।
চুল বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত পুষ্টিকর ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান চুলের জন্য এটা খুবই জরুরী।
জিংক খনিজ আয়রন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি বেশি খান। চুল গজানোর ক্ষেত্রে এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ।
- নিয়মিত চুলে তেল মাখার পাশাপাশি ঘরোয়া উপায় চুল গজাতে বিভিন্ন হেয়ারপ্যাক ব্যবহার করুন। এতে চুল ঘন করতে ও চুল গজাতে সাহায্য করবে।
- দৈনিক চুলের যত্ন নিন। চুলে শ্যাম্পু করার পরে অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। এবং স্টাইল করার সময় চুলে অনেক বেশি তাপ দেওয়া থেকে বিরত রাখুন।
নতুন চুল গজাতে চিকিৎসার মাধ্যমে কিছু বিকল্প
মেডিকেশনঃ
- নানা ধরনের ওষুধ যেমন ফিলস্টিরাইড এবং মিনোক্সিডিল চুল পড়া রোধ করতে ও নতুন করে চুল গজাতে সাহায্য করে।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ প্লাজমা থেরাপি (পিআরপি) প্লাজমা করে আলাদা করা হয় অসুস্থ রোগীর শরীর থেকে রক্ত সংগ্রহ করে। তারপর চুলের ফলিক কে প্লাজমা দ্বারা ইনজেক্ট করা হয়। এটা চুলের ঘনত্ব বাড়াতে ও চুলকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টঃ
- এ পদ্ধতিতে চুল পড়া বা টাক জায়গায় মাথার পিছনের অংশ থেকে চুলের গোড়া তুলে স্থানান্তর করা হয়।
চুলের জন্য সঠিক চিকিৎসা করলে বা চুল পড়ার কারণ নির্ণয় করলে বেশি সম্ভাবনা থাকে নতুন চুল গজানোর।
কপালে নতুন চুল গজানোর উপায়
প্রায় মানুষের এই সমস্যাটা থাকে যে মাথার পিছনের দিকে প্রচুর চুল থাকার সত্বেও সামনে বা কপালের দিকে চুল বেশি একটা থাকে না। সামনে চুলের পরিমাণ কমে আসতে আসতে কপালের টাক পড়ে যায়। ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে কপালে নতুন চুল গজাবে তার কিছু উপায় নিচে আলোচনা করা হয়েছে।
পেঁয়াজের রসঃ নতুন চুল গজাতে পেঁয়াজের রসের ভূমিকা অতুলনীয়। চুল গজাতে পেঁয়াজের রস সবার শীষে রয়েছে। আপনি চাইলে শুধু পেয়াজের রস মাথার চুলে ব্যবহার করতে পারেন। কিংবা পেঁয়াজের রসের সাথে মধু,নারিকেল তেল,লেবুর রস অথবা অ্যালোভেরা জেল এর সাথে মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন।
ক্যাস্টর অয়েলঃ আপনারা হয়তো জানেন যে চুলের জন্য ক্যাস্টর অয়েল ভীষণ উপকারী। নতুন চুল গজাতে ক্যাস্টর অয়েলের চেয়ে ভালো উপাদান আমার মতে আর কিছু হয় না। যাদের চুল পাতলা ও ভুরু পাতলা বা কম থাকে তাদেরকে ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করার কথা বলা হয়। রিসিন লাইট নামের এক উপাদান রয়েছে ক্যাস্টর অয়েলে যা চুলের ফলিকল কিংবা চুলের বীজ তৈরি করে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
ক্যাস্টর অয়েলের সঙ্গে দুই থেকে তিনটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল নিয়ে তেলের সাথে মিশিয়ে রাতে শোয়ার আগে চুলে ও কপালে ভালোভাবে তেলটি মেসেজ করুন। এই তেলটি সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করুন। দেখবেন যে কপালে বা মাথায় সামনের দিকের চুল নতুন গজাচ্ছে।
আলুঃ সবজি আলু যা আমরা রান্না করে খায় এই আলুতেও এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা চুল পড়া রোধ ও চুল গজাতে সাহায্য করে থাকে। আলোতে থাকার রস আমাদের নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। প্রথমে একটা আলু নিয়ে তার থেকে ভালো করে রস বের করেন নিতে হবে।
সেই রসের সাথে একটু মধু ও একটু ডিমের কুসুম নিয়ে অল্প পরিমাণ পানি দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর প্যাকটি আপনার চুলে লাগিয়ে এক ঘন্টা রেখে এবার শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে মাথাটা ধুয়ে নিবেন। এই মিশ্রণটি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন লাগাবেন এতে আপনি খুব ভালো ফল পাবেন।
সাত দিনে বিশ ইঞ্চি চুল লম্বা করার উপায়
আপনি যদি সাত দিনের চুল পড়া রোধ করতে এবং চুল দ্রুত লম্বা করতে চান। তাহলে আপনাকে প্রাকৃতিক কিছু উপাদান নিতে হবে এবং তা দিয়ে ঘরোয়া ভাবে প্যাক তৈরি করতে হবে। নিচে হেয়ার প্যাক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
একটা পাত্রে ২ চামচ আমলকি গুড়া নিতে হবে। এরপর দুই চামচ ক্যাস্টর অয়েল ও দুই চামচ এলোভেরা জেল এবং এক চামচ টক দই ও সামান্য একটু মধু নিয়ে সব উপকরণ গুলো ভালোভাবে মিশিয়ে একটা হেয়ার পেস্ট তৈরি করতে হবে। এরপর আপনার মাথার চুলে ও মাষে এই পেজটি আলতো ভাবে ঘষে লাগিয়ে নিতে হবে। এই প্যাকটি মাথায় রেখে চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে লাগিয়ে নিবেন।
আরো পড়ুনঃ শীতে শিশুর ঠান্ডাজনিত সমস্যা
তারপরে আপনি গামছা বা তোয়ালে দিয়ে পুরো মাথাটা পেচিয়ে রাখবেন। ৩০ মিনিট পরে মাথা থেকে গামছা খুলে পরিস্কার পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলবেন। তারপরে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে নিবেন। চুল দ্রুত লম্বা করতে ও চুল পরা বন্ধ করতে এই হেয়ার প্র্যাকটিক খুবই ভালো কাজ করে।
এই মিশ্রণটির ব্যবহারের ফলে যে উপকার গুলো পাওয়া যাবে তা হল
- নতুন করে চুল গজাতে সাহায্য করবে।
- চুলে গ্রন্থিতে শক্তি যোগাবে।
- মাথার চুল ও ত্বকের বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ মুক্ত রাখবে।
- চুলকে উজ্জ্বল ঘন কালো মজবুত করে তুলতে সাহায্য করবে।
খুব তাড়াতাড়ি চুলকে ২০ ইঞ্চি লম্বা করতে চাইলে আমাদের নির্দেশিত আমলকির হেয়ার প্যাকটি নিয়মিত সপ্তাহে এক থেকে দুইবার অন্তত ব্যবহার করবেন। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ঘরে বসে নিজের চুলের যত্ন নিন।
কোন ভিটামিন চুল গজাতে সাহায্য করে
চুলের জন্য কিছু উপকারী পুষ্টি রয়েছে যে পুষ্টিগুলো আপনার শরীরে থাকলে আপনি স্বাস্থ্যজ্জ্বল ও শক্তিশালী ঘন এবং ভারী চুল পাবেন। নিম্নেলিখিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
জিংকঃ স্বাস্থ্য এবং চুলের জন্য জিংক খুবই প্রয়োজন। চুলের গ্রন্থির ক্ষয় হওয়া থেকে রক্ষা করে থাকে জিংক। হরমোনের ভারসাম্য ব্যাপকভাবে রক্ষা করে জিংক। জিংকের অভাব দেখা দিলে চুল পড়া বাড়তে পারে। দৈনিক ১৫ মিলিগ্রাম জিংক গ্রহণ করলে চুলের সকল সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। যে সকল খাবারে জিংক এর উপস্থিতি রয়েছে তা হল মুরগির মাংস,ছোলা,কুমরার বীজ,স্পিনাক,দই, হিজলি,বাদাম ইত্যাদি।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডঃ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড উপাদানটির চুলকে ঘন ও সজীব করে তুলে। মাছে এই ওমেগা-৩ ফাটি এসিড অনেক বেশি পাওয়া যায়। মাছ ছাড়াও চিয়া বীজ,ডিমের কুসুম,সোয়াবিন,শনবীজ, শ্বেতবীজে এই ওমেগা-৩ এসিড পাওয়া যায়।
বি কমপ্লেক্স ভিটামিন সমুহঃ চুল বৃদ্ধির সাথে বি কমপ্লেক্সের কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এই ভিটামিন গুলোর অভাবে চুল পড়া বাড়তে পারে। যে খাবার গ্রহণের মাধ্যমে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স পাওয়া যায় সেগুলো হল ডাল,বাদাম,আলু,মাছ,ডিম ইত্যাদি।
আয়রনঃ শরীরে আয়রন থাকলে দ্রুত চুল গজাতে এবং চুল দ্রুত বড় হতে সাহায্য করে। দৈনিক ১৮ মিলিগ্রাম করে মানুষের আয়রন দরকার। যেসব খাবারে আয়রন রয়েছে সেগুলো হল পালং শাক,কচুর শাক,কিসমিস,মুরগির মাংস,ডিমের কুসুম,লাল মাংস ইত্যাদি। এই খাবারগুলো থেকে আপনি প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাবেন।
কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায়
শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি না থাকলে চুলের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। যেমন চুল উস্কো খুসকো হওয়া,চুল পাতলা হওয়া,চুল পেকে যাওয়া এবং চুল পড়ে যাওয়া ইত্যাদি সহ আরও নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
আরো পড়ুনঃ শীতে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ক্রিম
যেমন ভিটামিন বি৬,বি১২,ভিটামিন ডি,ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং আয়রন ও বায়োটিনের অভাবে চুল পড়তে পারে। নিতে কিছু ভিটামিনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে যা আপনার চুল পড়া রোধ করতে ও চুলের নানা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে।
ভিটামিন বি৭ বা বায়োটিনঃ বায়োটিন ভিটামিন আমাদের শরীরের পাশাপাশি চুলের কোষের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বায়োটিনের অভাবে আপনার প্রচুর চুল পড়তে পারে,খুব সহজেই আপনার নখ ভেঙ্গে যেতে পারে এবং ত্বকের অ্যাকনের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই সকল উপসর্গ দেখা দিলে বুঝে নিবেন যে আপনার শরীরে বায়োটিনের অভাব হয়েছে।
আয়রনঃ আয়রনের কমতি হলে আপনার চুলের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। চুলের পাশাপাশি ত্বকে কালো ছোপ বা স্ক্যাল্প দেখা দিতে পারে। তাই আপনার শরীরে সঠিক পরিমাণ আয়রন রাখা জরুরি।
ভিটামিন সিঃ অনেকেই জানেন যে ভিটামিন সি শরীর ও চুলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আর নতুন করে আপনাদের বোঝাতে হবে না। আর এই জন্যই বিউটি ইন্ডাস্ট্রিতে ভিটামিন সি বছরের পর বছর জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আর চুলের জন্য ও ভিটামিন সি খুবই প্রয়োজনীয়। বিভিন্ন সবজি ও ফলে আপনি ভিটামিন সি পাবেন। তাছাড়াও ক্যাপসিকামের মত সবজি ও লেবুতে আপনি ভিটামিন সি পেতে পারেন।
ভিটামিন ডিঃ আমার মতে ভিটামিন ডি বিষয়ে নতুন করে কিছু বলার প্রয়োজন নেই। তাই না? শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি হলে হাড় দুর্বল হয়ে যায় এবং চুল পড়ার আশঙ্কা ও বেড়ে যায়। যদি আপনার অতিরিক্ত চুল ওঠে বা হারে ব্যথা হয় তাহলে বুঝতে হবে যে আপনার ভিটামিন ডি এর অভাব আছে। সরাসরি সূর্যালোক থেকে আপনি ভিটামিন ডি পাবেন।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর উপকারিতা ও অপকারিতা
ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুল ও ত্বকের জন্য খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। ত্বকের সৌন্দর্যে অথবা চুল পড়া রোধ করতে এই ভিটামিন ই ক্যাপসুল খুব ভালো কাজে দেয়। ই ক্যাপসুল এর ভালো দিকের শেষ নেই। তবে ভুল ব্যবহারের কারণে কখনো বেশ খারাপ প্রভাব পড়ে।
ভিটামিন ই ক্যাপসুলের উপকারিতা
১.ভিটামিন ই ক্যাপসুল গ্রহণ এটি করলে বাঁধকের প্রবাহ কমায়।
২.হাড়ের কোন সমস্যা থাকলে বা ক্ষয় হলে তা রোধ করে।
৩.এই ভিটামিন ই ক্যাপসুলটির ভেতরের তরল পদার্থটি সিরাম হিসেবে কাজ করে।
৪.চুল পড়া রোধ করে এই ভিটামিন ই ক্যাপসুল। নতুন করে চুল গজাতেও সাহায্য করে। চুলে তেল ব্যবহার করার আগে তেলের সাথে ই ক্যাপসুলটির তরল পদার্থটি মিশিয়ে তেল ব্যবহার করলে এটা খুব ভালো কাজে দিবে।
৫.ত্বকের নানা ধরনের দাগ দূর করতে ও বলিরেখা,টান পড়া এছাড়াও অন্যান্য সমস্যার জন্য অনেক উপকারী এই ক্যাপসুল।
৬.নাইট ক্রিমের ও কাজ করে এই ভিটামিন ই ক্যাপসুল। আর এখন তো শীত পড়ে গেছে তাই রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকে এই ক্যাপসুল লাগিয়ে ঘুমাতে পারেন। এতে করে আপনার ত্বক ময়েশ্চারাইজ হবে।
৭.নিয়মিত নখের সঠিক যত্ন নেওয়া দরকার। যত্ন না নিলে নখের ক্ষতি হতে পারে এবং নখ এমনিতেই ভেঙ্গে যেতে পারে। নখের জন্য এই ক্যাপসুল আদর্শ ভূমিকা পালন করে। ক্যাপসুলের উপরের একটি অংশ কেটে তার ভেতর থেকে তরল পদার্থটি ভালোভাবে নখের চারপাশে লাগাতে হবে।।
ভিটামিন ই ক্যাপসুলের অপকারিতা
ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর অসংখ্য ভালো গুণ রয়েছে তবে আপনি যদি ব্যবহার করতে ভুল করেন তাহলে এটি আপনার জন্য খারাপ দিক বয়ে আনতে পারে। স্বাস্থ্য ও শরীরের বিভিন্ন অংশের জন্য ভিটামিন ই ক্যাপ খুবই জরুরী। এই কথাটা মনে রাখতে হবে যে ভিটামিন ই ক্যাপ সরাসরি মুখে বা ত্বকে লাগালে বেশ ক্ষতি হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ মুখের ভিতরে সাদা ঘা কেন হয়
তাই এই ভিটামিন সরাসরি ত্বকে ব্যবহার না করে লেবুর রস,মধু এবং দই এর সাথে মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করুন। এতে আপনার ত্বক হবে উজ্জ্বল ও লাবণ্যময়। ত্বকের বিভিন্ন দাগ ছোপ বা ব্রণ দূর করতে টাকা পেঁপের সাথে ই ক্যাপ ব্যবহার করতে পারেন।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুলে ব্যবহারের নিয়ম
যেভাবে চুলের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করবেন তা নিচে আলোচনা করা হয়েছে।
দই ও মধুঃ একটা পাত্রে প্রথমে হাফ কাপের সামান্য একটু কম দই এবং দুই টেবিল চা চামচ মধু নিয়ে ৫ টি ভিটামিন ই ক্যাপ থেকে তরল পদার্থ গুলো দই মধুর মিশ্রণের সাথে ভালো করে মিশিয়ে চুলের গায়ে ও মাসে লাগান। ২৫-৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে চুল ধুয়ে ফেলুন। প্রতি সপ্তাহে দুই তিনবার ব্যবহারে চুল পড়া রোধ করবে এবং খুশকি দূর করবে।
অ্যালোভেরা জেলঃ একটা পাত্রে এক চামচ অ্যালোভেরা নিয়ে তাতে সাত থেকে আটটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে চুলে লাগান। এরপর হাত দিয়ে ভালোভাবে মালিশ করে ৩০ মিনিট বাধা ঘন্টা রেখে চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করলে চুল ঘন ও চুলের গোড়া মজবুত হবে।
বাদাম,তেল ও ডিমঃ একটি পাত্রে এক চামচ বাদাম তেল নিয়ে তাতে একটা কাঁচা ডিম নিয়ে চার-পাঁচটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর তরল পদার্থ গুলো বের করে সবগুলো উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে মিশ্রণটি চুলে ভালোভাবে লাগান। এক ঘন্টা রেখে শ্যাম্পু করে চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এই মিশ্রণটি ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে চুলের উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে ও চুল সিল্ক হবে।
লেখক এর মতামত
প্রিয় পাঠক, আশা করি আমাদের আজকের এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে এবং উপকৃত হয়েছেন। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে পোস্টটি আপনার বন্ধুদের কাছে শেয়ার করে দিন যাতে তারা পড়ে উপকৃত হতে পারে। ধন্যবাদ!
ডিজি মাল্টিপ্লাই এর পোস্টে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।
comment url