ছারপোকা মারার স্প্রে

"ছারপোকা মারার স্প্রে","ছারপোকা তাড়ানোর উপায় কি" সহ ছারপোকা মারার ওষুধের নাম নিয়ে আজকের এই নিবন্ধন। যদি আপনার বাড়িতে ছারপোকার অত্যাচার বেড়ে যায়। তাহলে অবশ্যই আপনি চাইছেন কিভাবে এই ছারপোকা বাড়ি থেকে দূর করবেন। আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ছারপোকা মারার উপায় ও এর ধ্বংসের ওষুধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
ছারপোকা মারার স্প্রে
ছারপোকা মারার স্প্রে
তাই আপনি যদি ছারপোকার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।কেননা এই পোস্টটি করলে জানতে পারবেন আপনার বাড়ির ছারপোকা তাড়ানোর উপায় গুলো ও এই রক্ত খেত ধ্বংসের ওষুধের নাম গুলো।

ভূমিকা

কমবেশি সকল মানুষই ভেবে থাকেন বাড়িঘর এবং বাড়ির ওভারঅল পরিবেশ সবকিছু পরিষ্কার রাখলে এই প্রভাটির জন্ম হয় না। কিন্তু দেখা যায় অনেক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বাসা বাড়িতে ও এই পোকার আবির্ভাব হয়ে যায়। আসলে এই প্রকার জন্মের মূল কারণ হলো, বালিশ,সোফা,আদ্র বিছানা,তোষক,অপরিস্কৃত মশারি,বুফ সেলফে বাসা ইত্যাদি।

বিছানায় ছারপোকা কেন হয়

কোন কিছুর কামড়ে মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে যাচ্ছে,অথচ চোখ খুলে কিছুই দেখতে পেলেন না। বাহিরে যাওয়ার সময় হঠাৎ দেখতে পেলেন উকুনের মত ছোট একটা পোকা গায়ের জামা বেয়ে নেমে যাচ্ছে। এর নাম ছারপোকা। এই পোকাটি উকুনের মতো রক্ত খেকো। একবার যদি ধরে সারানোর যেন উপায় নাই। আপনি ভেবেই আটকে উঠলেন? যে এত পরিষ্কার বিছানায় ছারপোকা হলো কিভাবে!
শুধু যে ময়লা বিছানায় ছারপোকা হয় এমন টা কোন ভাবার কারণ নেই। ছারপোকা যেকোন বিছানাতে হতে পারে। নিয়মিত মানুষ ঘুমায় এমন বিছানাতেও ছারপোকা থাকতে পারে। লাফাতে বা উড়তে পারেনা ছারপোকা। তাই যেখানে মানুষ আছে সেখানেই আপনি ছারপোকা পাবেন। তাই মানুষের কাপড় বা শরীর করেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে হয় তাকে। মানুষ যখন ঘুমিয়েছে তারা বুঝতে পারে তখন সে রক্ত নেই ঘুমন্ত মানুষের শরীর থেকে।

এরা ৬ মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত রক্ত না খেয়ে বাঁচতে পারে। তাই দূর করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে ছারপোকাকে। এমনটা নয় যে শুধু বিছানাতে ছারপোকা থাকে। বেশ কিছুটা সময় মানুষ শুয়ে বা বসে থাকলে ও ছারপোকা সেই জায়গাতে হতে পারে। যেমন গাড়ির সিট,সোফা,চেয়ার,বিছানা ইত্যাদি। বেশি ছারপোকা থাকার ঝুঁকি পুরনো সোফা বা বিছানায়। তাই সেকেন্ড হ্যান্ড কেনার সময় এসব জিনিস সাবধানে থাকুন।

ছারপোকা কামড়ালে কি হয়

কারো বাসায় যদি ছারপোকা থাকে আর সে যদি দীর্ঘদিন ধরে ছারপোকার কামড় খেয়ে চলেছে তাহলে তার বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এবং তার দেহের কর্মক্ষমতা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমনকি আয়ু কমে যাবার ঝুঁকি রয়েছে। রক্তখায়ী পোকার কামড়ালে যেসব রোগ মানুষের হতে পারে তা হলঃ

শ্বাসকষ্ট

রুমের যেই স্থানে ছারপোকার বসবাস সেখানকার হাওয়া হাওয়া বাতাসে এই পোকার জন্য এতটা বিষাক্ত হয়ে থাকে যে এই বিষাক্ত বাতাস যদি আপনার নিঃশ্বাসের সাথে শরীরে ঢুকে তাহলে শ্বাসকষ্টের সমস্যার মত সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

রক্তস্বল্পতা অ্যানিমিয়া

গবেষকদের মতে, দীর্ঘদিন যাবত যেসব মানুষ ছারপোকার কামড় খেয়ে আসছে সেইসব মানুষের শরীরে রোহিত রক্তকণিকার মাত্রা কমে যেতে শুরু করে। যার কারণে অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা সমস্যার মতো সমস্যাই আক্রান্ত হতে পারে।

এলার্জি

কারো কারো এলার্জির সমস্যা ও দেখা দিতে পারে ছারপোকার কামড়ে। এবং এই পোকার কামড়ে আরো সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন ব্লাড প্রেসার কমে যেতে পারে ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে ইত্যাদি। বিশেষ করে যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে সেই সব ব্যক্তিদের এই পোকার থেকে একটু বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে

ছারপোকা তাড়ানোর উপায় কি

বাড়িতে ছারপোকা থাকা মানে আতঙ্ক। কারো ঘরে যদি ছারপোকা একবার প্রবেশ করে তাহলে তা বের করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। ছারপুকাকে মূলত রক্ত খেকো বলা হয়,কারণ অজান্তেই মানুষের রক্ত চুষে নেই এই ছারপোকা। এদের অবস্থান মূলত মশারি বিছানার বালিশ সোফা ইত্যাদিতে হয়ে থাকে। এবং এই পোকাটির অত্যাচার সবথেকে বেশি রাতে বেড়ে যায়। নিচে ছারপোকা তাড়ানোর কিছু উপায় উল্লেখ করা হয়েছে।
১।।ছারপোকা পুদিনা পাতার গন্ধ সহ্য করতে পারে না। তাই যেখানে ছারপোকা বেশি থাকে সেই জায়গায় পুদিনা পাতা রেখে দিন। বাড়ির প্রতিটি কোণে সোফায়,বিছানায় পুদিনা পাতা লাগতে পারেন। এতে ছারপোকা মরার সম্ভাবনা থাকে।

২।।ছারপোকা মারার আরেকটি পদ্ধতি হলো কীটনাশকের ব্যবহার। তোষক,বালিশ,সোফা,ঘরের কোনা ইত্যাদি এইসব জায়গাই ছারপোকা বেশি থাকে। তাই এইসব স্থানে কীটনাশক ছিটিয়ে রাখুন। দেখবেন যে ছারপোকা দূর হয়ে গেছে।

৩।।কয়েকদিন পরপর লেফ,বালিশ,তোষক ও ঘরের বিছানা রোদে দিন। কারণ ছারপোকা খুব বেশি উত্তাপ সহ্য করতে পারে না। সপ্তাহে অন্তত একবার বিছানার চাদর পরিবর্তন করুন এবং একবারে দেয়ালের সঙ্গে খাটকে না লাগিয়ে একটু ফাঁকা করে রাখুন।

৪।।ছারপোকা মূলত ১১৩ ডিগ্রি তাপমাত্রাতে মারা যায়। এইজন্য ঘরে ছারপোকার অত্যাচার বেশি হলে ক্যাথা,মশারি,বিছানার,চাদর,বালিশের কভার ও ঘরের যে সকল কাপড় গুলো ছারপোকায় আক্রান্ত সেই কাপড় গুলো বেশি তাপের সিদ্ধ ও পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন। এক্ষেত্রে থাকো বা খুব দ্রুত মারা যাবে।

ছারপোকা মারার স্প্রে

রক্ত খেকো ছারপোকা সত্যিই অনেক বিরক্তিকর। এই পোকাটির উৎপাত বেশি বারে রাতে। এর কারণে যেই রুমে বা বিছানায় এই পোকাটির বসবাস সেই রুমে বা বিছানায় মানুষদের রাতে শান্তি মত ঘুমোতে দেয় না। যেসব মানুষের বাড়িতে এই পোকাটি আছে তারাই শুধু জানে এর অত্যাচার।
এই রক্তকেখো পোকার হাত থেকে রেহাই পেতে হলে ছারপোকা মারার স্প্রে ইউজ করা খুবই দরকার। আমাদের এই পোস্টে ছারপোকার হাত থেকে মুক্তি বা ছারপোকা ধ্বংস করার উপায় সম্পর্কে নীচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

ব্যবহার করুন ল্যাভেন্ডার অয়েল স্প্রে

ছারপোকা ধ্বংসের স্প্রে হিসেবে আপনি ব্যবহার করতে পারেন ল্যাভেন্ডার অয়েল স্প্রে। বাড়ির বা রুমের যেখানে এই প্রকার অবস্থান রয়েছে সেই জায়গাই ২-৩ বার ল্যান্ডারি অয়েল স্প্রে করেন।

ব্যবহার করুন অ্যালকোহল

অ্যালকোহল ব্যবহারে আপনি খুব সহজে ছারপোকা তাড়াতে পারবেন। ছারপোকার অবস্থান যেখানে বেশি সেখানে অ্যালকোহল স্প্রে করলে মরে যাবে ছারপোকা।

কেরোসিনের ব্যবহার

ছারপোকার উপদ্রব কমাতে ব্যবহার করতে পারেন কেরোসনের প্রলেপ বা একটি স্প্রে বোতলে ভরে স্প্রেও করতে পারেন। এটির ব্যবহারে এই রক্তখালী পোকাটি পালাতে বাধ্য হবে।

ব্যবহার করুন নিমপাতা

আপনার বিছানায় যদি ছারপোকার রাজত্ব থাকে তাহলে আপনার বিছানায় কিছুক্ষণের জন্য নিম পাতা রাখুন। এই নিম পাতা বিছানায় চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখুন,তোসকের নিচে রাখুন ও যেখানে এই প্রকার উপদ্রব বেশি সেখানে রাখুন। চেষ্টা করবেন নিম পাতাটি একটু বেশি সময় ধরে রাখার।
তাছাড়াও আপনি চাইলে নিম পাতা পানিতে কিছুক্ষণের জন্য ডুবিয়ে রেখে,সেই পানি বিছানার ও যেখানেই পোকাটির উপদ্রব বেশি সেখানে স্প্রে করতে পারেন। দেখবেন ভালো ফল আসবে।

ব্যবহার করুন ন্যাপথলিন

ন্যাপথলিন এই পোকা তাড়াতে খুব দারুণ কাজ করে থাকে। মাসে অন্তত এক থেকে দুইবার আপনার বিছানায় এবং যেখানে ছারপোকার অবস্থান সেখানে দিয়ে রাখবেন। এতে করে এই প্রকার উপদ্রব অনেকটাই কমে আসবে।

ছারপোকা মারার ঔষধের নাম

চিরতরে ছারপোকা তাড়ানোর জন্য ব্যবহার করুন ইন্ডিয়ান অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড ট্যাবলেট (30 পিসি)

এই ছারপোকা দমনের ওষুধ ব্যবহারের নিয়ম হচ্ছেঃ

ছারপোকা যে ঘরে আছে সেই ঘরের সব জানালা দরজা বন্ধ করে ৮ থেকে ১০ পিস ওষুধ ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় রেখে দিতে হবে। কারণ যাতে করে ওষুধের গ্যাস যাতে করে বের হতে না পারে। রুমের সকল জিনিসপত্র নড়িয়ে চড়িয়ে বা সরিয়ে রাখা উচিত। রুমের কাপড় চোপড় দড়িতে টাঙ্গিয়ে রাখতে পারলে আরো ভালো। এতে করে ওষুধের গ্যাস কাপড় চোপড় সহ সব দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারবে।
ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় এক একটি ওষুধ রাখার সময় ওষুধের নিচে পলিথিন বা কাগজ দিয়ে রাখতে হবে। ছারপোকা ধ্বংস করার জন্য ওষুধ রাখা রুমটি ২৫ থেকে ২৮ ঘন্টা জানালা দরজার না খোলাই ভালো। এতে এই বিরক্তিকর প্রকার দমনে বেশি কার্যকর হয়। এই প্রকার সব থেকে যে জায়গাগুলোতে থাকতে বেশি পছন্দ করে তা হল সোফা,মশারি,বালিশ,তোষক ইত্যাদি জায়গায়।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছারপোকা রাতের বেলায় বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং মানুষ যখন ঘুমায় তখন এরা মানুষের অগোচরে রক্ত খেয়ে থাকে। এই ছারপোকাও মশার মত কামড় মেরে রক্তে স্থান ত্যাগ করে। এর মানে এই নয় যে ছারপোকার দিনের বেলাতে কামড়াবেনা। ছারপোকা ধ্বংস করার একটি ওষুধ হল "জুমএক্স" এই ওষুধটিও ছারপোকার দমনের জন্য অনেক ভালো কাজ করে।

লেখক এর মতামত

প্রিয় পাঠক, আপনি যদি এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে থাকেন তাহলে জানতে পেরেছেন বিছানায় কি জন্য ছারপোকার জন্ম হয়,ছারপোকার কামড়ে কোন রোগ হয়,ছারপোকার দূর করার উপায় এবং ছারপোকার স্প্রে ও ওষুধগুলো সম্পর্কে। আজকের এই আরটিকেলটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা নিচের কমেন্ট বক্সে,কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। আর এমনই বিভিন্ন ইনফরমেটিভ পোস্ট পেতে নিয়মিত আমাদের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজি মাল্টিপ্লাই এর পোস্টে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url