অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে তা নির্ভর করে সংশোধনের ধরণের উপর। আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা জানবো এনআইডি কার্ডের কোন সংশোধন ক্যাটাগরিতে কত সময় লাগে এবং ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে। আমাদের অনেকেরই ভোটার আইডি কার্ডে কোন না কোন বিষয় ভুল থাকে যেমন, নাম,জন্মতারিখ,বাবার নাম,মায়ের নাম ইত্যাদি আর এই ভুল সংশোধন করার জন্য অনেকে
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে
অনলাইনে আবেদন করেছি কিন্তু অনেকদিন অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পরেও কোন সারা শব্দ নেই। ফলে অনেকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জরুরী কাজগুলো ঠিক সময়ে সম্পন্ন হচ্ছে না। কি জন্য এমন সমস্যা হয়? জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে কত সময় লাগে এবং কত টাকা লাগে এই বিষয়গুলো নিয়ে সঠিক তথ্য উপস্থাপনা করা হবে এই আর্টিকেলে। আশা করি আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য অনেক উপকারী হবে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ

ভূমিকা

NATIONAL ID CARD বা জাতীয় পরিচয় পত্র বাংলাদেশের নাগরিকের জন্য খুব প্রয়োজনীয় ও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ভোটার আইডি কার্ড আমাদের যেকোন গুরুত্বপূর্ণ কাজে প্রয়োজন হয়। আর এই ভোটার আইডি কার্ডটিতে যদি ব্যক্তির তথ্যের মধ্য কোন ভুল হয় (সেটা যে কোন বিষয়ের ভুল হতে পারে) তাহলে পড়তে হয় নানা বিপাকে। আপনারও যদি ভোটার আইডি কার্ডে কোন তথ্য ভুল হয়ে থাকে এবং সংশোধন করার প্রয়োজন হয়।
তাহলে আমাদের এই পোস্টটি পড়ুন কারণ আজ আমরা আলোচনা করব ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কতদিন লাগে এবং কত টাকা লাগে। চলুন তাহলে নিচে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে

নিউ অনুযায়ী ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে ৭ দিন থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগে সর্বোচ্চ। সর্বশেষ তথ্য পাওয়া অনুযায়ী
  • ক ক্যাটাগরির সংশোধনী আবেদন কার্যকর হতে ৭ দিন সময় লেগে থাকে।
  • খ ক্যাটাগরির সংশোধনী আবেদন কার্যকর হতে ১৫ দিন সময় লেগে থাকে।
  • গ ক্যাটাগরির সংশোধনী আবেদন কার্যকর হতে ৩০ দিন সময় লেগে থাকে এবং
  • ঘ ক্যাটাগরির সংশোধনী আবেদন কার্যকর হতে ৪৫ দিন সময় লেগে থাকে।
এখানে দিন অর্থ কার্য দিবস কে বোঝানো হয়েছে। যদিও জাতীয় নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে একটি ক্যাটাগরির সংশোধনের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা দেওয়া আছে। এক্ষেত্রে চার পাঁচ দিন আগে-পরে হওয়াটা স্বাভাবিক বিষয়।

সংশোধন ক্যাটাগরি                          দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা                                 কর্ম দিবস
  
    ক                                        উপজেলা নির্বাচন অফিসার                         ৭ দিন
  
    খ                                        জেলা নির্বাচন অফিসার                              ১৫ দিন
 
    গ                                      আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার                            ৩০ দিন

    ঘ                                     NID WING-এর মহাপরিচালক                         ৪৫ দিন

অনলাইনে অথবা উপজেলা নির্বাচন অফিসের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন করার পর প্রথমে ওই আবেদনটা ক্যাটাগরি হওয়ার জন্য ঢাকার নির্বাচন কমিশনের NID Wing-এর হেড অফিসে কর্মরত দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের কাছে জমা করা হয়। এরপর উক্ত অফিসার এটিকে সংশোধন আবেদনের ধরন অনুযায়ী সেই আবেদন গুলো ক্যাটাগরি নির্ধারণ করেন।
এবং প্রত্যেক সংশোধন আবেদন কার্যকর করার জন্য উপজেলা তথা অঞ্চলের অফিসারের কাছে পাঠিয়ে দেন।আর তখন সেই অফিসার আবেদনটিকে যাচাই-বাছাই করেন। তারপর অনুমোদন করেন অথবা বাতিল করেন।

ভোটার আইডির "ক" ক্যাটাগরির সংশোধন সমূহঃ

  • বাংলা ও ইংরেজি নাম মিলকরণ এর জন্য আবেদন।
  • জন্ম তারিখ সংশোধন এর জন্য আবেদন (তিন বছর পর্যন্ত)।
  • লিঙ্গ পরিবর্তন এর জন্য আবেদন।
  • নামের বানান সংশোধন এর জন্য আবেদন।
  • নামের আংশিক পরিবর্তন এর জন্য আবেদন।
  • বৈবাহিক অবস্থা সংশোধন এর জন্য আবেদন।
  • মোবাইল নাম্বার সংশোধন এর জন্য আবেদন।
  • ঠিকানা সংশোধন এর জন্য আবেদন।
  • রক্তের গ্রুপ সংশোধন এর জন্য আবেদন।

ভোটার আইডির "খ" ক্যাটাগরির সংশোধন সমূহঃ

  • স্বামী-স্ত্রীর নাম সংযোজন/বিয়োজন এর জন্য আবেদন।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা পরিবর্তন এর জন্য আবেদন।
  • জন্ম তারিখ সংশোধন এর জন্য আবেদন (পাঁচ বছর পর্যন্ত)।
  • অসমর্থতা/প্রতিবন্ধিতা এর জন্য আবেদন।
  • ধর্ম পরিবর্তন এর জন্য আবেদন।
  • ছবি,স্বাক্ষর,আঙ্গুরের ছাপ,আইরিশ আপডেট এর জন্য আবেদন।

ভোটার আইডির "গ" ক্যাটাগরির সংশোধন সমূহঃ

  • সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তন-পাবলিক পরীক্ষার শিক্ষা সনদের ভিত্তিতে
  • জন্ম তারিখ সংশোধন (পাঁচ বছরের বেশি)-(চাকরির বয়সসীমা,মুক্তিযোদ্ধা,ভোটার যোগ্যতা,নির্বাচনে প্রার্থীর সীমা,বয়স্ক ভাতা অর্জনে বয়স সীমা ব্যতীত )

ভোটার আইডির "ঘ" ক্যাটাগরির সংশোধন সমূহঃ

  • সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তন-পাবলিক পরীক্ষার সনদ ছাড়া অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে
  • জন্ম তারিখ সংশোধন (পাঁচ বছরের বেশি)-(চাকরির বয়সসীমা,মুক্তিযোদ্ধা,ভোটার যোগ্যতা,নির্বাচনে প্রার্থীর সীমা,বয়স্ক ভাতা অর্জনে বয়স সীমা সহ সকল ক্ষেত্রে।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে

অনলাইনে ন্যাশনাল আইডি কার্ড সংশোধন করতে ২৩০ টাকা ফি জমা দিতে হয়। তারপর দ্বিতীয়বার সংশোধনীর জন্য ৩৪৫ টাকা দিতে হয় এবং তারপর আপনি যতবার সংশোধন করতে চান প্রতিবারের ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য ৫৭৫ টাকা ফ্রি প্রদান করতে হবে। সংশোধনের ধরনের পাশাপাশি জাতীয় পরিচয় পত্র ডেলিভারির ওপর সংশোধন ফ্রি নির্ভর করে। ভোটার আইডি কার্ডের সাধারণ তথ্য সংশোধন এবং রেগুলার ডেলিভারির জন্য ২৩০ টাকা
রি-ইস্যু ফ্রি জমা প্রদান করে আবেদন করতে হয়। ঠিক তেমনি ভাবে একই সংশোধনীর জন্য জরুরী জাতীয় পরিচয় পত্র পাবার জন্য ৩৪৫ টাকা ফ্রি প্রদান করতে হয়। ভোটার আইডি কার্ডের অনলাইন প্রোফাইলে অন্যান্য তথ্য তবে যে সকল তথ্য থাকে তা পরিবর্তন তথা সংশোধন করতে ১০৫ টাকা ফ্রি প্রদান করতে হয়। উল্লেখিত আলোচনায় যে ফ্রি এর পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে তার সাথে ৫% সরকারিভাগ যুক্ত করে বলা হয়েছে তাই আপনাকে আলাদাভাবে ভ্যাট হিসাব করতে হবে না।

আপনার নাগরিক পরিচয় পত্র সংশোধনের জন্য কত টাকা ফ্রি পরিশোধ করতে হবে সেটির হিসেব করার সবচেয়ে সঠিক ও সহজ এবং নির্ভরযোগ্য একটি মাধ্যম হলো নির্বাচন কমিশন এন আই ডি এপ্লিকেশন সিস্টেম। services.nidw.gov.bd এই সাইডে আপনার ভোটার আইডি কার্ড এর আগে কখনো সংশোধন করা হয়েছে কিনা তার ওপর নির্ভর করে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের প্রয়োজনীয় ফি হিসেব করে খুব সহজে দেখিয়ে দিবে।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে
আপনার এনআইডি কার্ডের সংশোধন ফ্রি হিসাব করার জন্য আপনি ভিজিট করুন এই লিংকে https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/তারপর আপনার এনআইডি কার্ডের নাম্বার দিন আবেদনের ধরন নির্বাচন করুন বিবরণের ধরন বাছাই করুন তারপর হিসাব করুন বাটনে ক্লিক করুন। এরপর কোন ঝামেলা ছাড়া খুব সহজে আপনি আপনার এনআইডি কার্ডের ফ্রি কত সেটা দেখতে পারবেন।

লেখকের মতামত

আমরা এই আর্টিকেলে চেষ্টা করেছি অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে এ বিষয়ে আপনাকে ধারণা দেওয়ার। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা এই বিষয়ে একটু হলেও জানতে পেরেছেন। ভোটার আইডি কার্ড সংশ্লিষ্ট যেকোন প্রশ্ন থাকলে আপনি আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

এবং আমাদের এই পোস্টটি আপনাদের কেমন লেগেছে তা কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন। আমাদের আর্টিকেলটি আপনার যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে সোশ্যাল মিডিয়া শেয়ার করবেন এবং এই আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই নিচে কমেন্টে জানাবেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজি মাল্টিপ্লাই এর পোস্টে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হবে।

comment url